Breaking News

সাইকো জামাই । পর্ব -০৭

আমি শুয়ে শুয়ে কাদতে লাগলাম। আমাকে শুধু কেনো কষ্ট দেয় বুঝি না। অনেকক্ষণ হলো সাইকো টার কোনো সাড়া শব্দ পাচ্ছি না। ও ঘুমিয়ে গেছে নাকি দেখার জন্য আমি উঠে বসলাম। ওর চোখ বন্ধ, ঘুমিয়ে পড়েছে। এখন মেঘকে অনেক সুন্দর লাগছে। ওর চেহারায় মায়া আছে, নিষ্পাপ একটা চেহারা।। কে বলবে এই ছেলেটাই আমাকে কারনে অকারণে টর্চার করে। নিজের অজান্তেই আমার হাতটা ওর মাথায় চলে গেলো।। মেঘ একটু নড়ে উঠলে আমি হাতটা সরিয়ে নিলাম। হয়তো আমি মেঘকে ভালোবাসে ফেলেছি। কিন্তু পরক্ষণেই ভাবতে লাগলাম নাহ্ আমি ওকে ভালোবাসি না। ওতো আমাকে টর্চার করে। আবার ভাবলাম, নাহ্ ভালোবাসি।
কখনো ওর বিহেভ দেখলে ইচ্ছা করে ওর সাথে সারাজীবন থাকি। আবার কখনো ওর বিহেভ দেখে ইচ্ছা হয় তখনি ওকে ছেড়ে চলে যেতে।
কিন্তু কেনো জানি পর মুহূর্তেই আমি ওর দেওয়া কষ্টগুলো ভূলে যাই।
শুয়ে পড়লাম,, না বালিশে নয়, মেঘের বুকে।
ওর বুকে মাথা রাখতেই মনে হলো এটাই আমার আশ্রয়স্থল। আমি মেঘকে জড়িয়ে ধরলাম।
কেনো যে আমাকে কষ্ট দেয়,, আমাকে তো ভালোবাসে ও।
কুত্তা, বিলাই শয়তান, বান্দর, হারামি মনে মনে বকলাম। ওর সামনে তো বকার সাহস নাই ।
ওর সামনে বললে অনেক মাইর জুটবে কপালে। আমি আরও একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।
এতক্ষন মন খারাপ থাকলেও এখন ভালো হয়ে গেছে। মেঘ ও আমাকে ঘুমের মধ্যেই জড়িয়ে ধরলো।
কখন ঘুমিয়ে পড়লাম জানি না।
সকালে যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখন ও আমি মেঘের বুকেই শুয়ে আছি।
মেঘ এখনো আমাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। আমি আস্তে করে উঠে গেলাম।
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি মেঘ উঠে গেছে।
আমাকে দেখছে, কিন্তু ওর তাকানোটা জানি কেমন মনে হলো আমার কাছে।
মেঘ উঠে আমার কাছে আসলো। ভ্রু কুচকে আমাকে দেখলো।
অথৈ— কি দেখছো, তুমি???
( যারা গল্প পরেন তারা একটু রেসপন্স করবেন ????৷ কারন আমার আইডির রিচ নেই বললেই চলে ৷ )
ওর এইভাবে তাকানো দেখে জিজ্ঞেস; করে ফেললাম।
মেঘ— বিয়ে আগে তুমি কার বুকে মাথা রেখে ঘুমুতে??
আমার কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বললো।
কি বলে এইগুলো,, আসলেই ও পাগল হয়ে গেছে।।
অথৈ— মানে কি???
মেঘ— কাল রাতে তুমি আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমুলে।
একটু পর আমি তোমাকে তোমার বালিশে শুইয়ে দিলাম।
আবার তুমি আমার বুকে, আমি আবার তোমাকে তোমার বালিশে শুইয়ে দিলাম।
আবার তুমি আমার বুকেই মাথা রাখলে। এবার সরাতে গেলাম,
তিন চারটা কিল মেরে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়লে।
আমি অন্য দিকে ঘুরে ভাবতে লাগলাম। আমি কি সত্যি সত্যি এই কাজ করেছি নাকি।
নাহ্ আমি এই কাজ করি নাই। এই মেঘ কুত্তা, ও মিথ্যা কথা বলতাছে।
মেঘ— আচ্ছা ম্যাডাম আমাকে কি আপনার বালিশ মনে হয়???
মেঘ আমাকে দেখছে। আমি মেঘের দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলাম।
অথৈ— হুহ্,,, তুমি বললেই আমি বিশ্বাস করবো নাকি।
আমি তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমবো,,,
অসম্ভব।দরকার পড়লে আমি ইলেকট্রিক তারের বুকে মাথা রেখে
ঘুমাবো তারপর ও তোমার বুকে মাথা রেখে ঘুমানোর প্রশ্নই আসে না।।
মেঘ— ওহ্,, really,, Madam..!!!
আমাকে ওর কাছে টেনে নিয়ে বললো। আমি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে,,
অথৈ— হুম,, স্যার।।
.
আমি ভেংচি কেটে রুম থেকে বেরিয়ে এলাম।।কি মিথ্যাবাদী। আমি নাকি তার বুকে মাথা রেখে ঘুমাই।
তাকে নাকি কিল মারছি,,। হুম তার বুকে মাথা রেখে ঘুমুতে পারি
কিন্তু তাকে মারার কথা আমি স্বপ্নেও ভাবি না।
আর যদি মারতাম ও তাহলে ঐ সাইকো এখনো আমাকে আস্ত রাখতো না।।
তারাতারি হেটে নিচে যাচ্ছিলাম।
হঠাৎ কার সাথে যেনো ধাক্কা খেয়ে নিচে পড়ে গেলাম।।
দুজনেই একসাথে ও মা গো,, বলে উঠলাম। তাকিয়ে দেখি বৃষ্টি ফ্লোরে পড়ে আছে।
আর আমার দিকে রাগি লুকে তাকিয়ে আছে।
বৃষ্টি — ভাবি!! তুমি কি দেখে হাটতে পারো না। উফফফফ ,,,
কোমর টা ভেঙ্গে গেছে।
আমি বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে হাসি আর আটকে রাখতে পারলাম না। আমি হেসে দিলাম।।
বৃষ্টি— আবার হাসছো,, অনেক ব্যাথা পেয়েছি!!
অথৈ— স স স সরি।
হাসির জন্য কথায় বলতে পারছি না।
অনেক কষ্টে হাসি থামালাম, তারপর বৃষ্টির দিকে হাত বাড়িয়ে দিলাম।
বৃষ্টি উঠে আমাকে দেখলো। তারপর হেসে দিলো।
বৃষ্টি — এতো তারাতারি হেটে কোথায় যাচ্ছিলে তুমি?
অথৈ— নিচে যাচ্ছিলাম।।
বৃষ্টি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে হঠাৎ আঁতকে উঠলো।।
বৃষ্টি— ভাবি,,, তোমার ঠোট কাটলো কিভাবে??
আমি ঠোট চেপে ধরলাম। মনেই ছিলো না,, যে আমার ঠোট কেটে গেছে।
কুত্তা কামড় দিছে বিড়বিড় করে বললাম।
বৃষ্টি— কি, বললে??
অথৈ—ওয়াশরুমে পড়ে গিয়ে কেটে গেছে আর কি।।এখন চলো নিচে যায়।
বৃষ্টি— ভাবি, তুমি এত্ত কেয়ারলেস।। ওয়াশরুমে পড়লে কিভাবে, বুঝি না।।
অথৈ— এত বুঝতেও হবে না আপনার।
তারপর বৃষ্টিকে নিয়ে নিচে নামলাম।সাবাই আমাকে দেখে আর জিজ্ঞাস করে ঠোঁটে কি হয়েছে।
আর আমি সবাই কে ঐ এক কথায় বলি।।
একটু মেঘ নিচে নেমে এলো।। ড্রেস দেখেই বুঝা যাচ্ছে অফিসে যাবে।
আমার শশুরমশাই আর মেঘ দুজনেই অফিসে চলে গেলো,না খেয়েই।
ওরা চলে গেলে আমার শাশুড়ি জানায় আমাকে নাকি বাসায় কয়েকদিন একা থাকতে হবে।
বৃষ্টি আর মা— বাবা সবাই নাকি বৃষ্টির নানা বাড়িতে যাবে।
মেঘকে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিলো কিন্তু বাবা চলে যাবে বলে তাকে নাকি অফিসে থাকতে হবে।
তাই তার যাওয়া হবে না, আর এই জন্যে আমাকেও নেওয়া হবে না।
তার মানে আমাকে একা থাকতে হবে এই কয়েকদিন। তাও আবার সাইকোর সাথে,,,
হুহ্ একেই মনে হয় কপাল বলে।
আল্লাহ জানে আমার কপালে কি আছে,,,,,,
চলবে,,

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com