গল্পঃ বারবনিতা । পর্ব -০১


মিটিং শেষে হাত ঘড়িটার দিকে চোখ রাখে রেজা,
নয়টা বেজে পঁয়তাল্লিশ মিনিট। মনে মনে আটকে উঠে সে।পেশায় সাংবাদিক। পুরো নাম রেজা জাকির। একটা টিভি চ্যানেলের ক্রাইম রিপোর্টার সে। বছর দুই হয় জয়েন্ট করেছে। একটু একটু নামও ছড়াচ্ছে চারিদিকে।
দেশের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবাহ।কঠোর লক ডাউনের একুশ দিন চলছে আজ। বৈশ্বিক মহামারি করোনার ভয়াল থাবায় পুরো পৃথিবীতে আজ অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজমান। কোন কিছুই আজ স্বাভাবিক নেই।
প্রেসক্লাব থেকে বের হয়ে সে রিকশা খুঁজতে থাকে,গন্তব্য হাজীপাড়া। রাস্তা পার হয়ে সে ফুটপাত ধরে পল্টন মোড়ের দিকে এগুতে থাকে।
.
হঠাৎ দমকা হাওয়া শুরু হল ঝড়ের বেগে আর তার সাথে ধুলো উড়তে লাগল চারিদিকে।কিছু বুঝে উঠার আগেই ঝুউম বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। জাকির কোন মত দৌড়ে তোপখানা রোডের,মেহেরবা প্লাজার নীচে যেয়ে দাড়াল।সে মনে মনে প্রবোধ গুনে। মা,নিশ্চয়ই টেনশন করছে। মোবাইলটা পকেট থেকে বের করে ওপেন বাটনে চাপ দিতেই টো টো শব্দ করে ব্যাটারির চার্জ শেষ জানান দিয়ে বন্ধ হয়ে গেল।
যা বাবা,এখন কি হবে?আকাশ এত বৈরী ছিল সে খেয়াল করেনি। বৃষ্টির ছাঁট এসে লাগছে,সে সিঁড়ি বেয়ে আরেকটু উপরে উঠে দেয়াল ঘেষে দাড়ায়। কিংকর্তব্যবিমূঢ় সে।
রাস্তায় জনমানব নেই বললেই চলে,সে আর বৃষ্টি।যেন জনম জনমের সাথী।
সিগারেটের খুব তেষ্টা পেয়েছে তার।
.
ব্যাগে রাখা প্যাকেট থেকে বেনসন এন্ড হ্যাজেস এর একটা স্টিক তুলে নেয় সে।আলতো করে ঠোঁটে গুঁজে দিয়ে লাইটারের জন্য প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকায়।
হতাশ! নাই। রাগে তার চোখমুখ জ্বলতে থাকে।কি হচ্ছে এসব তার সাথে। সে বৃষ্টিকে অভিশাপ দিতে থাকে।
বৃষ্টি তুই মর!
হঠাৎ একটা দৈব বাণী শুনতে পেল সে।
চোখের সামনে লাইটার সমেত একটা সুন্দর মখমলী হাত
বলল, নিন।
জাকির একটু হোচট খায় মনে মনে।
লাইটার সমেত মেয়ে মানুষ! ভেরী ইন্টারেস্টিং।
সে লাইটারটা লুফে নেয়। সিগারেটে অগ্নি সংযোগ করে।
.
চলবে…
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url