Breaking News

বৌ এর ভালোবাসা । পর্ব -০৬



অফিসে এসে পড়লাম আরেক বিপদে ।
ওদের কান্ড দেখে আমার মাটির নিচে
ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছিল ।
গিয়ে দেখি অফিসের কলিগরা
সবাই আমাকে স্বাগত জানানোর
জন্য দাড়িয়ে আছে ।কেউ কেউ ফুলের তোড়া, আবার কেউ মালা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।
আমি তাদের কাছে যেতেই আমার কলিগ+কলেজের বেস্ট ফ্রেন্ড দিশা
এসে ইয়া বড় একটা মালা পরিয়ে দেয় ।
যেটা আমার গলায় ঝুলিলে আমায় দেখার কোন রাস্তা নেই ।
তারপর দিশা এসে বললো।
দিশা:-
congratulations
.

mister Arean Khan .

আমি:- hmm tnx
( খুব বিরক্ত লাগছে, এই অবস্থায়)
দিশা:- তা কেমন কাটছে বৈবাহিক জীবন ।
(কথাটা খোচা দিয়ে বললো)
আমি:- খুব বেশি ভালো ।
তখন পিছন থেকে md স্যার এসে বললো ।
স্যার:- আরে Arean যে !
তা কেমন আছো বাবা ।
(স্যার আমাকে ছেলের মতো দেখে! )
আমি:- জী ভালো স্যার, আপনি কেমন আছেন ।
স্যার :-আমিও ভালো! কিন্তু আজকেই অফিসে আসলে জে তোমার তো এখনো ছুটি শেষ হয় নি ।
আমি:- স্যার আপনাদের ছাড়া ভালো লাগেনা তাই চলে আসলাম ।
.
দিশা:- স্যার Arean সাহেবি একমাত্র মহাপুরুষ যে কিনা বিয়ের দুই দিন পরি অফিসে চলে আসে, অফিসকে ভুলতে পারে নাই ।
একথা বলার সাথে সাথে অফিসের
সবাই হো হো করে হেসে উঠলো ।
আমার তো লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করছে ।
ঐ পেত্নি দিশাকে শুধু হাতের নাগালে
একবার পাই তারপর দেখাব মজা ।
তারপর একে একে সবাই শুভেচ্ছা
জানিয়ে চলে গেল যার যার জায়গায় ।
আমিও চলে আসি।
কাজ করছিলাম তখন দিশা এসে বললো
দিশা:- বৌ পেয়ে তো আমাদের ভুলেই গেছিস ।
আমি কিছু না বলে ডাইরেক্ট দিশার চুলের
মুঠোয় ধরে বললাম ।
আমি:- তখন তো খুব মজা নিলি
আর বললি তদের ভুলি নি,
অফিসকে ভুলি নাই।
আর এখন বলছিস ভুলে গেছি ।
দিশা:- ওহ্ Arean লাগছে, ছাড় বললি।
আমি:- লাগুক ,লাগার জন্যই তো ধরছি ।
দিশা:- #Arean এর বাচ্চা,
আমার একটা চুল ছিড়লে তর
বৌ কে আমি নেরা করবো ।
.
আম:- কিই বললি তুই ।
দ্বারা তোকে দেখাচ্ছি মজা ।
দিশা:- আচ্ছা ভাই তোর বৌ কে কিছু
করবো না ।এখন তো ছাড় ।
আমি:- এবারের মতো ছেড়ে দিলাম ।
দিশা:- এখন বল কেমন আছিস??
আমি :- তোকে ছাড়া ভালো থাকি কেমনে ।
দিশা:- আমি তো দেখছি ভালই আছিস ।
না হলে তো একটা ফোন করতিস।
আমি:- আপনিও তো একটা ফোন দিয়ে
খবর নিলেন না, বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি।
দিশা:- sorry রে ,মার শরীর টা ভালো যাচ্ছে না ।
কিছু দিন আগে অবস্থা আরো খারাপ ছিল ।
আমি:- ওহ্ এই জন্য তুই আমার বিয়েতে ছিলি না ।
দিশা:- তোর বিয়ের দিন মাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম ।
আমি:- এখন আন্টি কেমন আছেন ।
দিশা:- এখন একটু ভালো ।
দিশা:- এখন বল ভাবিকে কবে অফিসে নিয়ে আসছিস।
.
আমি:- তুই আজকে আমারা সাথে যাবি।
দিশা:- আজকে না, অন্য দিনা ।
ভাবিকে কবে নিয়ে আসবি সেটা বল।
আমি:- আচ্ছা নিয়ে আসবোনি কোন এক দিন ।
তারপর আরো কিছুক্ষণ গল্প করে দিশা চলে যায় ।
আমিও কাজ করতে থাকি।
কাজ করতে করতে কখন যে দুপুর হয়ে গেছে
টের পাইনি ।তখনই ফোনে মেসেজের শব্দ হয় ।
ফোন হাতে নিয়ে দেখি মৌ মেসেজ
দিয়েছে ।মেসেজ টা এরকম ছিল ।
মৌ :- আপনার আসার দরকার নেই,
আমি মাকে ফোন করে আসতে বলি।
হায় হায় এখন কি হবে মৌ তো দুপুরে
বাসায় যেতে বলছে।ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখ 2:30 বাজে।
.
এখন কি করি।তারাতারি করে মৌ কে ফোন করি।
ফোন ধরতেই মৌ বলে ।
মৌ:- কী বলবেন তারাতারি বলেন
আমার কাজ আছে ।
( হায় হায় মহারানি তো রাগে ফায়ার )
আমি:- বলছিলাম কি কাউকে ফোন করার প্রয়োজন নেই আমি এখুনি আসছি ।
মৌ:- দুই মিনিটের মধ্যে বাসায়
না আসলে মা কে ফোন করবো ।
আমি:- এতো দুরের রাস্তা দুই মিনিটে আসবো
কেমনে ।
মৌ:- আমি কিছু জানি না, । টুট টুট
আমি:- যাহ্ ফোনটা কেটে দিল ।
এখন আমি কি করি ,পনেরো মিনিটের রাস্তা দুই মিনিটে যাবো কেমনে ।আপনারাই বলুন তো ।
তারপর বাইরে এসে দেখি সবাই একসাথে আড্ডা দিচ্ছে (লাঞ্চ টাইম তো তাই )
আমাকে আসতে দেখে দিশা বললো ।
দিশা:- বন্ধুগন আগামী কাল মানে শনিবার আমাদের Arean সাহেব
তার স্ত্রী মানে আমাদের ভাবিকে নিয়ে অফিসে আসছে ।
আমি ত হা করে তাকিয়ে আছি একথা ওকে কখন বললাম ।
.
পিছন থেকে md স্যার এসে বললো
স্যার:- তাই নাকি Arean
আমি:- জী স্যার ।
আর স্যার আমাকে আজকে যেতে হবে ।
স্যার:- আচ্ছা যাও কালকে চলে এসো।
তারপর সবাই কে বলে চলে আসি ।
রাস্তায় এসে মনে হলো মৌ ফুচকা খেতে ভালোবাসে ।
তাই মৌ এর জন্য ফুচকা আর
Dairy milk চকলেট নিয়ে
বাসায় আসলাম .
কলিং বেল বাজাতেই মৌ দরজা খুলে দিয়ে
চলে যেতে লাগল ।তখন আমি বললাম ।
আমি:- তাহলে ফুচকা আর চকলেট গুলো
আমিই খাই।
মৌ:- কিহ্ আপনি আমার জন্য ফুচকা আর চকলেট এনেছেন ।
আমি:- হুম কিন্তু তুমি তো চলে যাচ্ছো।
মৌ:- কই যাচ্ছি আমি
এই বলে মৌ আমার কাছে এসে
ফুচকা আর চকলেট নিয়ে চলে যাতে লাগল ।
কি মনে করে যেন আবার আমার
দিকে ফিরে আসতে লাগল ।
ফুচকা আর চকলেট গুলো সোফায় রেখে ।
আমি ওর আসার দিকে তাকিয়ে
আছি।মৌ আমার কাছে এসে আমার
পায়ের উপর দাঁড়িয়ে গলা জড়িয়ে
ধরে গালে একটা পাপ্পি দিয়েই
আবার তারাতারি করে ফুচকা আর চকলেট
নিয়ে ঘরে চলে গেল।
.
আমি শুধু হা করে তাকিয়ে আছি ।
আর ভাবছি কি হয়ে গেলো কিছুক্ষণ আগে ।
ভাবনা চিন্তা বাদ দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম ।
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি মৌ খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।
আমিও খাওয়া শুরু করে দিলাম ।
মৌর দিকে তাকিয়ে দেখি মৌ আমার
দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে ।
তাই মৌ কে বললাম ।
আমি:- তুমি খেয়েছ।
মৌ:- আমি না খেলেই কির কি?
আপনার খাওয়া আপনি খান।
বুঝতে বাকি নেই মৌ এখনো খায়নি+
অভিমানও করেছে অনেক ।
আমারি ভুল হয়েছে মৌ কে না বলে।
তাই মৌ কে বললাম আমার পাশে বসতে ।
বসলো ঠিক কিন্তু গাল ফুলিয়ে অন্য দিকে ঘুরে ।
তারপর ভাত মেখে ওর মুখের কাছে নিয়ে বললাম ।
আমি:- নাও হা করো।
মৌ:- আপনার খাওয়া আপনি খান।
আমার খিদে লাগে নি।
অভিমানী সুরে বলল মৌ ।আমিও নাছোড় বান্দা হাল না ছেড়ে রাগি সুরে বললাম ।
আমি:- খেয়ে নাও বলছি । (ধমক দিয়ে)
ভয়ে মৌ খাওয় শুরু করলো ।
দুজনেই খেতে লাগলাম লক্ষ্য করে দেখি
মৌ এর চোখে জল ।
.
আমি::- কি হয়েছে মৌ, তোমার চোখে জল কেন ।
মৌ:- এমনি আপনি বুঝবেন না ।
আমি:- বুঝেছি ধমক দিয়েছি বলে ভয় পেয়েছো।
মৌ:- আপনি আসলেই অনেক বোকা ।
কিচ্ছু বুঝেন না ।
সত্যি আমি বোকা, নাহলে ওর মনের কথা গুলো
কোন বুঝি না । অনুভূতির কোন দাম দেই না ।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে মন খারাপ
করে বসে আছি, এটা দেখে মৌ বললো ।
মৌ:- কি হলো আপনি এভাবে মন খারাপ করে
বসে আছেন কেন ।
আমি:- আর বলো না কোথাকার কোন জুয়েল
বলে আমি নাকি গল্প কপি করি।
.
মৌ:- ঐ জুয়েল কে তো আমি ফুটবল বানিয়ে
বেট দিয়ে পিটাবো।
আমি:- হুম
মৌ:- আর মন খারাপ করে থাকবেন না plz.
আপনার পাঠক/পাঠিকারা তো বলেনি।
আমি:- হুম, কিন্তু কারো কারো মনে সন্দেহ জেগেছে ।
মৌ:- যারা আপনাকে এবং আপনার গল্পকে ভালোবাসে তারা সন্দেহ করবে না।।
কি হলো এখনো মন খারাপ করে থাকবেন ।
আমি:- নাহ্, তুমি ঠিক বলেছো আর মন খারাপ করে থাকবো না ।
তারপর শুয়ে পড়লাম ।শুয়ে মৌ কে বললাম ।
আমি:- মৌ শনিবারে আমার সাথে অফিসে যেতে হবে ।
মৌ:- আমি অফিসে যেয়ে কি করবো ।
আমি:- এমনি আমার বন্ধুদের সাথে পরিচিত হবে ।
.
মৌ:- আচ্ছা তাহলে যাব,এখন ঘুমান।
তারপর মৌ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে
দিতে থাকলো আর আমি ঘুমিয়ে পড়ি ।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মৌ আমার বুকের উপর শুয়ে আছে একদম বাচ্চা দের মতো ।
ঘুমন্ত অবস্থায় মৌ কে স্বগীর্য় পরীদের মতো লাগছে ।
আমি মৌ কে ওর বালিশে রেখে বারান্দায় চলে
আসি।পরিবেশ টা উপভোগ করার জন্য বাহিরে চলে আসলাম ।
স্নিগ্ধ হাওয়ায় প্রাণ ভরে নিশ্বাস নিলাম।
এই স্নিগ্ধ হাওয়াতেও বিষাক্ত ধোঁয়া নিলাম।
((যারা খায় তারা ঠিকি বুঝতে পারছে কি এটা))
তারপর বাসায় এসে পারলাম ।
ভিতরে ঢুকতেই মৌ বললো ।
মৌ:- কোথায় গিয়েছিলেন এতো সকালে ।
আমি:- এই তো একটু হাঁটাহাটি করলাম ।
মৌ:- তাহলে আমায় ডাকলেন না কেন ।
আমি:- তুমি ঘুমিয়ে ছিলে তাই ডাকিনি।
মৌ:- তাতে কি হতো, ডাকতেন দুজনে স্নিগ্ধ বাতাস খেতাম।।
আমি:- তুমি থাকলে তো বিষাক্ত বাতাস
খেতে পারতাম না (বির বির করে বললাম কথা টা)
মৌ:- কিছু বললেন ।
আমি:- না কই কিছু বলিনি তো ।
মৌ:- এখন যান রেস্ট নেন।আমি রান্না শেষ করে খাবার নিয়ে আসছি ।
তারপর আমি শুয়ে পড়লাম ।কিছুক্ষণ পর মৌ
খাবার নিয়ে এলো ।খাওয়া দাওয়া শেষ করে
মৌ কে বললাম বিকেলে রেডি থাকার জন্য
জুমার নামাজের পর ঘুরতে যাবো ।
কিন্তু মৌ কিছু না বলে আমাকে আবারও
অবাক করে দিয়ে …
.
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com