বৌ এর ভালোবাসা । পর্ব -০৭
কিন্তু মৌ কিছু না বলে আমাকে আবারও
অবাক করে দিয়ে একটা পাপ্পি দিয়ে দিলো।
কিন্তু এবার আর গালে নয় ডাইরেক্ট ঠোঁটে
হালকা করে ছুঁয়ে দিলো।
আমি এখনো বোকার মতো তাকিয়ে আছি মৌ এর
দিকে ।
এতো দিন তো শুধু গালে ছিল কিন্তু আজ এটা
কি হলো ।
ভাবনার বিচ্ছেদ ঘটিয়ে মৌ বললো ।
মৌ:- কি হলো, এত কি ভাবছেন ।
আমি:- ভাবছি একটু আগে কি হয়ে গেলো ।
মৌ:- এতো ভাবনার কি আছে, আর একটা দিবো নাকি বড় করে ।(দুষ্টুমি হাসি দিয়ে বললো মৌ)
হয় হায় এই মেয়ে বলে কি, লজ্জা বলতে দেখি কিছুই নেই
.
আমি:- না না আর লাগবে না ।( একটু লজ্জা পেয়ে)
মৌ:- ওমা আপনি দেখি লজ্জাও পান।
এসব বলছে আর আমরা দিকে ।
আমার কাছে এসে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে
দিয়ে আমার বুকের উপর চরে বসলো ।
দুজনের বুকের ধুকপুক শব্দ শুনতে
পারছি দুজনেই ।
মৌর ঠোঁট কাঁপছে, ওর গরম নিশ্বাস আমার
মুখের উপর পারছে ।
চোখ বন্ধ করে আমার দিকে আসছে ।
দুজনের ঠোঁটের মধ্যে এক সুতার সমান ফাঁক
রয়েছে ঠিক তখন, ঠিক তখনি ফোনটা বেজে উঠল
আপনারাই বলেন তো তখন কেমন লাগে ।
.
মৌ তখন আমার উপর থেকে সরে তারাতারি বাহিরে চলে গেল।
আমিও নিজেকে সামলে ফোনের দিকে তাকাতেই
দেখি ঐ পেত্নি দিশা ফোন দিয়েছে ।
তাই ফোন ধরেই ঝাড়ি দেওয়া শুরু করলাম ।
আমি:- ঐ পেত্নি তুই আর ফোন করার সময় পেলি না ।
দিশা:- কেন আমি কি ভুল সময়ে ফোন দিয়ে ফেলছি ।
আমি:- ভুল মানে মারাত্মক ভুল সময়ে তুই ফোন করছিস ।
দিশা:- কি এমন কাজে busy ছিলি।
আমি:- খুব বেশি রোমান্টিক মুহুর্তে ছিলাম
কিন্তু তুই রোমান্টিক মুহুর্ত টাই মাটি করে দিলি।
দিশা:- আচ্ছা বাবা sorry এই সময় ফোন
দেওয়াটা আমার অন্যায় হয়েছে ।
আমি:- যা ক্ষতি করার তা তো করলি ,
এখন বল কি জন্য ফোন করছিস ।
দিশা:- দোস্ত কালকে খান এন্ড কম্পানির
সাথে মিটিং টা তুই সামলে নিস্ plzzz.
আমি:- না না আমি পারবো না, তর টা তুই দেখ ,আমি পারবো না ।
দিশা:- plzzz দোস্ত না করিস না ।
আমি:- কেন তুই কি করবি ।
দিশা:- আমি একটু মা কে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাব।
আমি:- ওহ্ এই কথা আগে বলবি তো।
তুই নিশ্চিন্তে থাক আমি ঐ দিকে সব সামনে নিবো।
.
দিশা:- tnx দোস্ত ।
আমি:- বন্ধুদের মধ্যে tnx/sorry থাকতে নেই ।
দিশা:- হুম ।
আচ্ছা দোস্ত এখন বাই। তুই ভাবির……টোট টোট।
কথা শেষ করার আগেই আমি ফোন কেটে দেই।
এমনি লজ্জায় মরি,,ফোন না কাটলে নিশ্চিত দিশা
আরো লজ্জা দিতো।
আমার কিছু ফ্রেন্ড আছে যারা একদম অলস,
তারা গল্প পড়ে কিন্তু like and commented কিছু
করে না। আর কিছু আছে অর্ধ অলস তারা like করে কিন্তু commented করে না।
তারপর আমি শুয়ে ঘুম দিলাম।
দিন শেষে বিকেলে মৌ কে নিয়ে
ঘুরতে চলে গেলাম ।
চলে গেলাম শহরের বাইরে, অনেক সুন্দর একটা
জায়গায় । মৌ কে দেখলাম মৌ অনেক খুশি ।
.
মেয়েটি অনেক অদ্ভুত ।
একদম অন্যরকম ,সবার চেয়ে একটু
বেশিই আলাদা ।
ইচ্ছে গুলো ছোট ছোট ।
এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মৌ বললো ।
মৌ:- কি হলো কি ভাবছেন ।
আমি:- কই কিছু না তো ।
মৌ:- আমি সব সময় দেখি আপনি যেন কি ভিবেন।
কি এতো চিন্তা আপনার, আমাকে বলেন ।
আমি:- আমার ভাবনা ,চিন্তা তো তোমাকে নিয়ে ।
তুমি যে আমার সব কিছুতে মিশে গেছো
( মনে মনে বললাম আমি )
মৌ:- কি হলো বললেন ।
আমি:- সময় হলে সব জানতে পারবে ।
মৌ:- আচ্ছা আমি সেই সময়ের অপেক্ষায় রইলাম ।
খুব বেশি সময় না মৌ আর একটু অপেক্ষা করো।
খুব তাড়াতাড়ি আমার মনে কথা জানাবো তোমায়।
তারপর আরো কিছুক্ষণ হাঁটার পর মৌ বললো এখন বাসায় যাবে ।
তাই মৌ কে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম ।
বাসায় এসে মৌ বললো ।
মৌ:- আপনি ফ্রেশ হয়ে রুমে রেস্ট নিন আমি
রান্না ঘরে আছি, কিছু লাগলে বলেন ।
আমি:- এখন আবার রান্না ঘরে কি করবে।
মৌ:- সেকি রান্না করতে হবে না ।
আমি:- না আজকে রান্নার দরকার নেই ।
মৌ:- তাহলে খাবেন কি।
.
আমি:- অনলাইনে খাবার অর্ডার করে দিচ্ছি ।
তুমিও ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নাও।
মৌ:- না না সমস্যা নেই আমি
রান্না করতে পারবো ।
আমি:- থাক তার আর দরকার নেই ।
আজকে আমারা ফেবারিট বিরিয়ানি খাবো ।
তাই আমি এখুনি অর্ডার করছি।
মৌ:- বিরিয়ানি আপনার পছন্দের খাবার ।
আমি:- হুম কেন ।
মৌ:- তাহলে তো আর কোন অর্ডার ফর্ডার হচ্ছে না।
আমি:- তাহলে বিরিয়ানি খাবো কি করে ।
মৌ:- তাহলে আমাকে এ বাড়িতে এনেছেন
কেন, আমি আজকে নিজের হতে
আপনার ফেবারিট বিরিয়ানি রান্না
করে খাওয়াবো।
আমি:- ওয়াও সত্যি ।
মৌ:- তিন সত্যি । আপনি একটু
বসেন আমি এক্ষুনি বিরিয়ানি রান্না করে আনছি।
এই বলে মৌ ঝটপট রান্না ঘরে চলে গেল ।
মেয়ে টা সত্যি পাগলী, আমার পছন্দের বলে
সে নিজের হতে রান্না করবে ।
কয়জনের ভাগ্যে এমন বৌ মিলে।
(আহ্ আমার ভাগ্যে যদি এমন একটা বৌ মিলতো )
![🙈](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t52/1/16/1f648.png)
![🙈](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t52/1/16/1f648.png)
![🙈](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t52/1/16/1f648.png)
তখন খুব কষ্ট পাই,যখন গল্প পড়ে কমেন্টস না করে
চলে যান।আপনাদের একটু অনুপ্রেরণা আমায়
পরবর্তী পর্ব লিখতে অনুপ্রাণিত করে ।
যাইহোক আমি বিছানায় শুয়ে শুয়ে গল্প লিখছিলাম একটু পর বিরিয়ানির গন্ধে সারা ঘর মৌ মৌ করছে ।
.
একটু পর দেখি মৌ বিরিয়ানির প্লেট নিয়ে ঘরে
ঘরে প্রবেশ করল।
তারপর মৌ বিরিয়ানি একটা প্লেটে নিয়ে
আমার কাছে আসলো । প্লেট একটা
দেখে আমি বললাম ।
আমি:- কিব্যাপার প্লেট একটা কেন
তুমি খাবে না ।
মৌ:- হুম খাবো আপনি খাইয়ে দিলে ।
আমি:- আমি![😱](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t2c/1/16/1f631.png)
![😱](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t2c/1/16/1f631.png)
![😱](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t2c/1/16/1f631.png)
![😱](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t2c/1/16/1f631.png)
![😱](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t2c/1/16/1f631.png)
![😱](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t2c/1/16/1f631.png)
![😱](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t2c/1/16/1f631.png)
![😱](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t2c/1/16/1f631.png)
মৌ:- হুম আপনি ।
আমি এতো কষ্ট করে আপনার জন্য
বিরিয়ানি রান্না করলাম আর আপনি খাইয়ে দিতে পারবেন না ।
আমি:- আচ্ছা বাবা দিচ্ছি এতো রাগ করতে হবে না ।
মৌ:- হুম,,
তারপর আমিও লক্ষি ছেলের মতো
মৌ কে খাইয়ে দিচ্ছি ।
মৌ খাচ্ছে আর মাঝে মাঝে আমার হাতের
আঙুলের কামড় দিচ্ছে ।
এখনকার কামড় টা একটু জোরে দিল।
তাই আমি অহ্ করে উঠলাম আর বললাম ।
আমি:- কি হচ্ছে মৌ, এতো জোরে কেও
কামড় দেয় । ( ধমক দিয়ে বললাম )
মৌ:- আসলে আমি sorry এতো জোরে দিতে
চাই নি। (মন খারাপ করে )
.
আমি:-হুম হয়েছে, এখন নাও হা করো।
মৌ:- আমি আর খাবো না ( নরম সুরে বলল)
আমি:- কেন????
মৌ:- এমনি খিদে নেই ।( বলেই চলে যাচ্ছে)
আমি :- আরে আরে যাচ্ছ কোথায় ।
মৌ:- একটু রান্না ঘরে কাজ আছে । আপনি খান।
বুঝলাম মহারানি রেগে আছে ।বুঝিনে এই একটু তেই এতো রাগ করে কেনে।
আমিও কম কিসে তাই আমি বললাম ।
আমি:- কোথাও যাওয়া হচ্ছে না ।আমি তোমাকে খাইয়ে দিয়েছি এখন তুমি আমায় খাইয়ে দিবে।
আমার কথা শুনে মৌ ফিরে এসে খাইয়ে দিতে লাগল, কিন্তু মুখ গুমরাহ করে ।
এখনো রেগে আছে ।
কিন্তু রাগলে ওরে বহুত কিউট লাগে । নাক টা ঘেমে লাল হয়ে যায় ।
যাই হোক মৌ খাইয়ে দিচ্ছে কিন্তু অন্য দিকে তাকিয়ে ।
আমি ভাবছি কিভাবে পরী টার রাগ ভাঙ্গাব।
হঠাৎ মনে পড়ে গেল ফুচকার কথা ।
মৌ ফুচকা খেতে খুব ভালোবাসে ।
তাই আমি কিছু না বলে ঘরের বাইরে যেতে
লাগলাম ।পিছন থেকে মৌ বললো ।
.
মৌ:- আরে না খেয়ে কোথায় যাচ্ছেন।
আমি:- একটু বাহিরে যাবো ।
মৌ:- শুনুন plzzz যাবেন না । এই দেখুন আমি রাগ করি নি
আমি কিছু না বলে চলে আসি ।
তারপর ফুচকা নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিবো ঠিক তখন ফোনটা বেজে উঠল ।
তাকেয়ে দেখি আমার বন্ধু রাশেদ ফোন দিয়েছে।
ফোনটা ধরে ।
আমি:-হে রাশেদ বল।
রাশেদ:- দোস্ত তুই এখনি………….এই হাসপাতালে
আয়।খুব তারাতারি ।
আমি:- কেন কার কি হয়েছে ।
রাশেদ:- দিশার মা মারা গেছে ।
আমি:- কিহ্!! কি বলছিস এসব ।
রাশেদ:- হে তুই একটু তারাতারি আয় দিশাকে
সামলানো যাচ্ছে না ।
আমি:- আচ্ছা আমি এক্ষুনি আসছি ।
তারপর আমি হাসপাতালে চলে আসি ।
সেখানে গিয়ে দেখি দিশা কাঁদতে কাঁদতে
জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে ।
ওর জ্ঞান ফিরলে ওকে সবাই সান্ত্বনা দিয়ে
ঘুম পাড়ানোর চেষ্ট করি।
.
তারপর দিশার বাবার কাছে শুনলাম
জানাজা হবে কালকে ।এখন তারা লাশ নিয়ে
বাসায় যাবে ।এখানে সব কিছু ঠিক করে
দিয়ে হাসপাতালের দেয়াল ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি
11 টা বাজে। বাসা থেকে বের হয়েছি আটটায়
আর এখন বাজে এগারোটা ।
না জানি মৌ এখন কি করছে।
তারাতারি করে বাসার দিকে
রওনা দিলাম ।
বাসায় যেয়ে কলিং বেল বাজাচ্ছি কিন্তু
মৌ দরজা খুলছে না ।
দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখি ফ্লোরে রক্তে
লাল হয়ে আছে ।
মৌ কে দেখছি না ।আমার বুক ধুকধুক করছে ।
বেড রুমে ঢুকে যা দেখলাম তাতে
আমার পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে ।
দেখি মৌ রক্ত …..কেমন হয়েছে জানাবেন ,পরবর্তীতে পর্ব আসিতেছে খুব জলদি !
মানে কালকেই ।
আর না জানালে আবার দুই দিন পরে।
.
চলবে …
No comments
info.kroyhouse24@gmail.com