Breaking News

বৌ এর ভালোবাসা । পর্ব -০৮



দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখি ফ্লোরে রক্তে
লাল হয়ে আছে ।
মৌ কে দেখছি না ।আমার বুক ধুকধুক করছে ।
বেড রুমে ঢুকে যা দেখলাম তাতে
আমার পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে ।
দেখি মৌ রক্তমাখা হাত নিয়ে মাটিতে পড়ে
পড়ে কান্না করছে ।।আমি মৌর কাছে গিয়ে ।
আমি:- মৌওও ,কি হয়েছে তোমার?, এতো রক্ত
কেন,? হাত কাটলো কি করে ?
মৌ:- আপনি এসেছেন ,জানেন আমি আপনার উপর রাগ করিনি ।(খুব কষ্টে বললো কথা গুলো)
আমি:- জানি মৌ তুমি আমার উপর রাগ করতে পার না ।( ততক্ষণে মৌ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে)
আমি ভয় পেয়ে গেলাম, ওর আবার কিছু হয়ে গেল না তো ।
না না এসব কি ভাবছি আমি, আমার মৌ র কিচ্ছু
হবে না ।আমি ওর কিছু হতে দিবো না ।
আমি তারাতারি আমার বন্ধু ডক্টর মাহি কে ফোন দিলাম ।
আমি:- হ্যালো বন্ধু কুশল বিনিময়ের সময় নেই।
তর ভাবীর হাত কেটে প্রচুর রক্ত পড়ছে ।
এখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে তুই তারাতারি আমার বাসায় আয়।
মাহি:- আমি এক্ষুনি আসছি ।
কিছুক্ষণ পর মাহি এসে হাত ভালো করে পরিষ্কার
করে হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো।
তারপর মাহি বললো ।
মাহি:- এসব কিভাবে হলো ।
.
সব ঘটনা খুলে বললাম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যা হয়েছে ।
আমি:- সব তো শুনলি।
মাহি:- হুম । আমার যা মনে হচ্ছে ভাবি মনে
করেছে তুই রাগ করে চলে গেছিস।
তাই এসব করেছে ।
আমি-: হুম এখন ওর কি অবস্থা ।
মাহি:- এখন মোটামুটি ভালো, ঘুমের ওষুধ দিয়েছি
অনেক রক্ত বের হয়েছে কয়েকটা দিন রেস্ট
নিতে দিবি, কোন কাজ করতে দিবি না ।
আর যে ঔষধ দিয়েছি সেগুলো ঠিক মতো খাওয়াবি।
আমি:- আচ্ছা ।
মাহি:- তাহলে আমি এখন আসি ।
আমি:- ওকে ভালো থাকিস ।
মাহি:- আমি ভালোই থাকি, তুই ভাবির খেয়াল রাখিস।
মাহি চলে গেলে আমি মৌ এর পাশে বসে আছি ।
মৌ ঘুমিয়ে আছে ।একদম নিষ্পাপ শিশুর মতো ।
দেখতে বাচ্চা বাচ্চা লাগছে ।
কান্না করে চোখ,মুখ ফুলিয়ে ফেলছে ।
রাত দুইটা বাজে মৌ এখনো ঘুমোচ্ছে ।
আমি ওর মাথার কাছে বসে মাথায়
হাত বুলিয়ে দিচ্ছি ।
কিছুক্ষণ পর মৌ চোখ খুললো।
আমার দিকে তাকিয়েই আবার
কান্না করতে লাগল ,আমি অবাক
মৌ কান্নার কি কারণ হতে পারে ।
তাই মৌ কে জিজ্ঞাসা করলাম ।
আমি:- মৌ কি হয়েছে কাঁদছ কেন ।
মৌ:- আপনি আমার উপর রাগ করেনি তো।
(একটু একটু কান্না করে বললো)
আমি:- আরে পাগলী রাগ করব কেন হুম ।
মৌ:- তাহলে এভাবে কিছু না বলে চলে গেলেন কেন
.
আমি:- আরে আমি তো তোমার রাগ
ভাঙ্গানোর জন্য ফুচকা আনতে গেছিলাম ।
মৌ:- তাহলে এতো দেরি করলেন কেন ।
(তারপর মৌ কে সব বললাম ।)
মৌ;- অন্য কারো ফোন দিয়ে তো
একটু বলতে পারতেন । জানেন আমার কতখানি
কষ্ট হচ্ছিল, আপনি যখন না বলে চলে গেলেন ।
আমি :- আচ্ছা sorry এরকম ভুল আর কক্ষনো হবে না ।
মৌ:- শুধু sorry বললে কাজ হবে না ।
আমি:- তাহলে??????
মৌ:- কান ধরে 20 ভার উঠবেন আর বসবেন ।
আমি:- কিহ্,, আমি এতো পারবো না ।
মৌ:- তাহলে আপনার সাথে কোন কথাও নেই ।
আমি:- একটু কমিয়ে দেওয়া যায় না ।
মৌ:- আচ্ছা 19 বার করেন ।
আমি:- 19আর 20 সেই একি হলো ।
5 বার করি।
মৌ:- নাহ্ তাহলে 10 বার করেন ।
আমি:- আচ্ছা কি আর করা । 10 বারি করি।
মৌ:- হুম তাই করেন ।(মুচকি হেসে বলল মৌ)
তিন বার করার পর মৌ বললো ।
মৌ:- থাক আর দরকার ,এখন খাটে আসেন ।
.
(যাক বৌ আমার নরম রিদয়ের অধিকারী ।)
তারপর শুয়ে পড়লাম ।
সকালে মৌ ঘুম থেকে ডেকে তুলল ।
ব্রেকফাস্ট করে জানাজা পড়তে যাব।
তখন মৌ এসে বললো ।
মৌ:- আজকে কি আমায় নিয়ে অফিসে যাবেন ।
আমি:- না আজকে না।
আজকে দিশা নেই । কিছু দিন পর নিয়ে যাবো ।
মৌ:- আচ্ছা, তাহলে সাবধানে যাবেন
আর তারাতারি বাসায় ফিরবেন ।
আমি:- আচ্ছা, তুমি দুপুরে খেয়ে ঔষধ
ঠিক মতো খেও।
মৌ:- হুম ।
তারপর আমি জানাজা পরতে চলে আসি ।
জানাজা শেষে দিশার সাথে দেখা করে
অফিসে এসে পড়লাম ।
এভাবেই কয়েকটা দিন চলে গেল ।
আজ মৌ কে নিয়ে অফিসে যাচ্ছি।
অফিসের ভিতরে প্রবেশ করতেই সবাই
আমাদেরকে ঘিরে ধরল মৌ কে নানা রকমের প্রশ্ন করতে শুরু করলো যেমন ,
কেমন আছি,বিবাহিত জীবন কেমন কাটছে, ভাবির বাসা কই , দরজা কই,
জানলা কই?? ইত্যাদি ।
মনে হচ্ছে মৌ কিছুটা বিরক্ত হচ্ছে ।
একটু পর md স্যার এসে শুভেচ্ছা জানালো ।
.
কিন্তু md স্যার আমাকে অবাক করে
দিয়ে হাতে একটা চাবি ধরিয়ে দিল ।
তাই আমি অবাক হয়ে বললাম ।
আমি:- এটা কিসের চাবি স্যার ।
স্যার:-গাড়ির চাবি, অফিসের পক্ষ থেকে তোমাদের জন্য ছোট্ট একটি গিফট ।
আমি:- স্যার এসবের কি দরকার ছিল ।
স্যার:- এটা তোমার প্রাপ্য ছিল ।
বিয়ের আগেই এটা দিতে চেয়েছিলাম
আবার ভাবলাম বিয়ের পর দুজনকে একসাথে দিবো ।
আমি:- ধন্যবাদ স্যার ।
স্যার:- ধন্যবাদের কোন প্রয়োজন নেই ।
দোয়া করি তোমারা সুখী হও।
আমি:- দোয়া করবেন স্যার।
স্যার:- আর #Arean একটি কথা ।
আমি:- বলোন স্যার ।
স্যার:- আজ থেকে আমার ছেলে রাফি অফিস সামলাবে ।
আমি:- ওহ্ রাফি স্যার কি আজকেই আসবে ।
স্যার:- হে আজকে থেকেই । তুমি তো সব জানো
ছেলেটা আমার বাজে লাইনে চলে গেছে ।
অনেক কষ্টে অফিস আসতে রাজী করেছি ।
আমি:- ওহ্ ভালো ।
স্যার:- হুম,আমি আসা করি তুমি রাফিকে পূর্ণ
সহযোগিতা করবে ।
আমি:- অবশ্যই স্যার কেন নয়।
স্যার:- খুব খুশি হলাম ।এখন তোমরা যার যার কাজে মন দাও ।
এই বলে স্যার চলে গেল ।
একটু খেয়াল করে দেখলাম সবার
মাঝে দিশা নেই, কিন্তু মেয়েটা গেল কই।
দিশা তো জানে আজকে অফিসে মৌ
কে নিয়ে আসব ,তাহলে কেন এলো না ।
.
এসব ভাবতে ভাবতে পিয়ন চাচা কে জিজ্ঞেস করলাম ।
আমি:- চাচা আজকে দিশা মেম আসেনি ।
চাচা:- মেডাম তো আইছে ।হের রুমে বইয়া রইছে।
আমি:- আচ্ছা চাচা আমি দেখছি
তারপর মৌ কে সাথে নিয়ে দিশার রুমে গেলাম ।
দেখি দিশা মন খারাপ করে বসে আছে ।
আসলে মন খারাপ করার কথাই ,
যার মা নেই সে বোঝে জীবনে মা নামক ব্যাক্তি কতো টা প্রয়োজন ।
তাই মার সাথে কেও খারাপ ব্যবহার করবেন না ।
হোক সেটা নিজের বা অন্যর মা
.
যাইহোক এবার গল্পে আসি।
দিশার কাছে গিয়ে মৌ কে দিশার
সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম ।
এখন দিশাকে একটু খুশি খুশি লাগছে ।
অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই দুজন ভালো বন্ধু হয়ে গেল ।
একটু পর পিয়ন চাচা এসে বললো
রাফি স্যার এসেছে, রাফি স্যারের সম্পর্কে কিছু বলে নেই । রাফি স্যার
আমার সমবয়সী, মদ্যপান, জুয়া খেলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন খারাপ কাজ করেন ।
অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করেছেন।
এমনকি অফিসের মেয়ে স্টাফ দের সাথে ও
খারাপ ব্যবহার করে ।
যাইহোক আমারা সবাই রাফি স্যার কে welcome জানালাম নতুন md স্যার হিসেবে ।
তারপর রাফি স্যার কে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে
পুরনো md স্যার চলে গেলেন।
আমারাও যার যার কাজে চলে গেলাম ।
Lunch টাইমে রাফি স্যার আমাকে ডেকে পাঠালেন ।
.
আমি স্যারের রুমের সামনে এসে ।
আমি:- may i come in : sir
রাফি:- yes yes come in mr. Arean Khan ভেতরে আসেন ।
ভিতরে ঢুকতেই স্যার বললো ।
স্যার:- বসুন mr. Arean
আমি:- thank you sir (বসতে বসতে বললাম)
স্যার:- শুনলাম আপনি নাকি বিয়ে করেছেন এন্ড wife সাথে নিয়ে অফিসেও এসেছেন।
আমি:- জি স্যার কিছু দিন আগে বিয়ে
করেছি এবং আজকে অফিসেও এসেছে ।
স্যার:- পরিচয় করিয়ে দিলেন না ।
আমি:- জি স্যার আমি ও কে নিয়ে আসছি ।
স্যার:- থাক তার দরকার নেই, আমি নিজেই পরিচিত হয়ে নিব।
আপনি এক কাজ করোন
ব্যাংক থেকে দের কোটি টাকা তুলে নিয়ে
আসুন ।
.
আমি:- জি স্যার !
তারপর স্যারের কাছ থেকে চেক নিয়ে ব্যাংকে আসতে লাগলাম ।
বুঝলাম না স্যার আসতে না আসতেই এতো গুলো
টাকা দিয়ে কি করবে ।
যাইহোক ব্যাংক টা অফিস থেকে একটু দূরে ,
এই দের ঘন্টার মতো লাগবে ।
ব্যাংক থেকে টাকা তুলে অফিসে এসে দেখি
রাফি স্যার চলে গেছে,
তাহলে শুধু শুধু টাকা গুলো আনালো কেন ।
মৌ কে রেখে গেছি দিশার রুমে ।
দিশার রুমে গিয়ে দেখি মৌ কান্না করছে ।
আমি তো অবাক মৌ কান্না করছে কেন ।
মৌ কে দেখে মনে হচ্ছে অনেক ভয় পেয়েছে।
ভয়ের মধ্যে আছে ।
আমি মৌ কে জিজ্ঞেস করলাম ।
আমি:- মৌ তোমার কি হয়েছে, এভাবে কান্না করছো কেন ।
মৌ…………….
মৌ কি বললো তা জানতে হলে পাশে থাকুন ।
চলবে…..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com