Breaking News

গল্পঃ ভাবির অহংকারী বোন । পর্ব - ৪



মিথিলা আজ ক্লাস না করে সোজা আমাদের বাসায় চলে যায়....

বাসায় গিয়ে কলিং বেল দিতেই আম্মু এসে দরজা খুলে দিল...
মিথিলা : আসসালামুআলাইকুম আন্টি..
আম্মু : (সালামের উত্তর দিয়ে) তোমাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না।
মিথিলা : আমি শাকিবের সাথে একই কলেজে পড়ি
আম্মু : শাকিবের কোন খোঁজ পেয়েছো..?
মিথিলা : আমিও তো সেটাই জানতে এসেছি। কিছুদিন ও কলেজে যায় না।
ভাবি : আরে মিথিলা কখন আসলে..? (ভাবি এসে)
মিথিলা : এইতো অল্প কিছুক্ষণ।
ভাবি : ভিতরে আসো...
মিথিলা ভিতরে গিয়ে বসলো।
ভাবি : হঠাৎ কি মনে করে..?
মিথিলা : সাকিবের খোঁজ নিতে আসলাম।
ভাবী : ওর মত ছেলের খোঁজ নিয়ে কী করবে তুমি..?
মিথিলা : ওর মত ছেলে মানে..?
ভাবি : ওর মতো বাজে ছেলের খোঁজ আমার কাছে নেই।
মিথিলা : ও মোটেও বাজে ছেলে না।
ভাবি : কতটুকু জানো ওর বিষয়..?
মিথিলা : আমি যতটুকু জানি সব সত্যি জানি কিন্তু আপনারা যা জেনেছেন তারমধ্যে ভুল আছে।
ভাবি : কি বলতে চাও তুমি..?
মিথিলা : আমি বলতে চাচ্ছি সাকিব কোন খারাপ কাজ করেনি।
ভাবি : কি বলছ..? ও কি করেছে তুমি জানো..?
মিথিলা : হুম জানি।
ভাবি : জানার পরও ওর হয়ে কথা বলছ কিভাবে..?
মিথিলা : আচ্ছা আন্টি শাকিব তো আপনার ছেলে আপনার কি মনে হয় যে ও এরকম একটা বাজে কাজ করতে পারে..? (আম্মুকে উদ্দেশ্য করে আম্মু)
আম্মু : না আমার এখনও বিশ্বাস হয় না।
ভাবি : কি বলছ তুমি আম্মু..? ও আমার বোনের ইজ্জত নষ্ট করতে চেয়েছে তারপরও তুমি......
মিথিলা : ব্যাস অনেক হয়েছে। শাকিব আপনার বোনের ইজ্জত নষ্ট করতে যায়নি। এই সবকিছুই আপনার বোনের সাজানো নাটক ছিল।
ভাবী : কি বলছো তুমি..? কোন প্রমাণ আছে তোমার কাছে..?
মিথিলা : প্রমান আপনার বোন। আপনার বোনকে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন।
ভাবি : কিন্তু সাদিয়া এসব কেন করবে..?
মিথিলা : এত দিনে আপনার বোনকে চিনতে পারলেন না। তবে শুনুন....
( তারপর মিথিলা একে একে সব কিছু বলতে লাগলো। সাদিয়াকে থাপ্পড় মারা থেকে তোর সব প্লান খুলে বলল।)
মিথিলা : আর এটা আমি কাজ কেউ নিজের কানে শুনে এসেছি। সাদিয়া আমাদের সবকিছু বলেছে আজ কলেজ থেকে। আমি এটা শোনার পর ক্লাস না করে সোজা আপনাদের এখানে চলে এসেছি।
আম্মু : আমি জানতাম আমার ছেলে এটা করতে পারে না। সেই শিক্ষা আমি ওদের দেইনি।
ভাবী : ( কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর) আম্মু আমি আজ বাসায় যাবো।
আম্মু : কেন..?
ভাবি : সত্যিটা জানার জন্য...
মিথিলা : শাকিবের কোন খোঁজ পেয়েছেন..?
আম্মু : না। ওকে সেই দিনই ওর আব্বু বাসা থেকে বের করে দিয়েছে। কোথায় আছে কি করছে কিছুই জানিনা।( আম্মু কান্না করে দিল)
মিথিলা : শান্ত হন আন্টি। যেভাবেই হোক খুঁজে বের করতে হবে।
ভাবি ওখান থেকে উঠে রুমে চলে এল। তৈরি হয়ে আম্মুকে বলে একাই বেরিয়ে পরলো।
ভাইয়াকে ফোন দিয়েছিল কিন্তু ভাইয়া বিজি থাকায় আসতে পারেনি।
মিথিলা ও তার বাসায় চলে গেল।
ভাবি তার বাসায় গিয়ে কলিং বেল দিতেই ভাবির আম্মু এসে দরজা খুলে দিলো...
আন্টি : তুই এ সময়।
ভাবি : কাজ আছে।
আন্টি : আর কেউ আসেনি..?
ভাবি : না আমি একাই এসেছি।
আন্টি : ভিতর আয়।
ভাবি ভেতরে গিয়ে চুপচাপ সোফায় বসে রইলো।
আন্টি : কিছু হয়েছে..?
ভাবি : না কিছু না।
আন্টিঃ তাহলে এভাবে বসে আছিস কেন..? শরীর খারাপ করেছে।
ভাবি : আরে বললাম তো না.....
আন্টি : এভাবে কথা বলছিস কেন..?
ভাবী : একটু চুপ থাকবে...?
আন্টি আর কিছু না বলে রুমে গিয়ে আংকেলকে ফোন দিয়ে বাসায় আসতে বলল।
এদিকে সাদিয়া কলেজ করে বাসায় এসে বেল বাজাতে ভাবি দরজা খুলে দিল....
সাদিয়া : আরে আপু কখন আসলি...?
ভাবি : এইতো একটু আগেই।
সাদিয়া : দুলাভাই আসেনি..?
ভাবি : না আমি একাই এসেছি।
সাদিয়া : ও...
ভাবি : যা রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে।
সাদিয়া রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে দেখে ভাবী ওর বিছানায় বসে আছে...
সাদিয়া : তা বল কেমন আছিস..?
ভাবি : তুমি শাকিবের সাথে এরকম করলি কেন..?
সাদিয়া : ( হঠাৎ এরকম প্রশ্ন শুনে একটু ভয় পেল)
ভাবি : শাকিবের সাথে এরকম করেছিস কেন..? (একটু জোরেই বলল)
সাদিয়া : আ আমি কিরকম করেছি..? ওই তো আমাকে নষ্ট করতে চেয়েছিল।
ভাবি : ঠাসসসস্
(লাগিয়ে দিল সাদিয়ার গালে)
সাদিয়া : আপু তুই....
ঠাসসসস্ ( আরেকটা লাগিয়ে দিল)
ভাবি : কি দোষ করেছিল ও যার জন্য এত বড় শাস্তি দিলি ওকে..?
চিৎকার করে বলল। ভাবির চিৎকার শুনে আন্টি চলে এলো। আঙ্কেলও বাসাই এসে এসব শুনে সাদিয়ার রুমে চলে এলো।
আন্টি : কি হয়েছে..?
ভাবি : এখনো হয়নি তবে এখন হবে..
বলেই এক হাত দিয়ে সাদিয়ার চুল ধরে অন্য হাত দিয়ে থাপ্পর দিল।
আন্টি : কি হয়েছে ওকে মারছিস কেনো..?
ভাবি : চুপ আজ একটা কথা বলবে না কেউ।
আংকেল : কি হয়েছে আগে সেটা তো বলবি..?
ভাবি : এটা তোমার মেয়ের মুখ থেকেই শুনতে পাবে। বল তুই শাকিবের সাথে এরকম করলে কেন..?( সাদিয়াকে)
সাদিয়া : আপু ছাড় বলছি, লাগছে..
ভাবী : আগে বল তুই এরকম কেন করলি..? না হলে আজ তোকে...
সাদিয়া : ছার বলছি (এক ঝটকায় ভাবীর হাত ছাড়িয়ে নিল।) যা করেছি বেশ করেছি। আমার পিছনে লাগতে এসেছিল।
ভাবি : তুই ওকে দিনের-পর-দিন অপমান করেছিস।
সাদিয়া : তো কি করবো মাথায় তুলে নাচবো..?
ভাবি : তুই যে আমার বোন এটা বলতে আমার লজ্জা করছে।
সাদিয়া : বলতে বলেছে কে..?
ভাবি : আজ থেকে আমার কোন বোন নেই যে ছিল সে মারা গেছে।
আন্টি: কি হয়েছে আমাকে একটু খুলে বলবি
তারপর ভাবী সব কিছু খুলে বলল। সবকিছু শোনার পর আঙ্কেল এসে সাদিয়াকে একটা থাপ্পর দিল...
আঙ্কেল : তুই এত নোংরা একটা কাজ করবি কখনো ভাবতেও পারিনি। একটা নির্দোষ ছেলেকে বাড়ি ছাড়া করেছিস। ছি,,,,,
ভাবি : আর কখনও এই বাড়িতে আসবো না।
ভাবি r না দাঁড়িয়ে সোজা বেরিয়ে এল। আন্টি আঙ্কেল পিছন থেকে অনেক ডেকেছিল কিন্তু তাদের কথায় সাড়া না দিয়ে গাড়িতে উঠে বাসায় চলে এলো।
আঙ্কেল : শাকিবের যদি কোন ক্ষতি হয় তাহলে আমার থেকে খারাপ আর কেউ হবে না। (সাদিয়া কে উদ্দেশ্য করে)
আঙ্কেলও সেখানেই না দাঁড়িয়ে সোজা অফিসে চলে এলো।
সবাই তোমাকে খুঁজতে লাগল কিন্তু কোনো খোঁজই পেলো না। আমার বন্ধুদেরও বলে কোন লাভ হল না কারন কেউই আমার ঠিকানা দেয়নি।
&- এদিকে আমার কথা-&
কলেজ থেকে বন্ধুদের দিয়ে TC এনে এখানেই একটা কলেজে ভর্তি হয়ে গেলাম। বড় ভাইয়ের কাছে অনেক জোর জুলুম করে বলার পর দুইটা টিউশনির ব্যবস্থা করে দিল। ভালই চলতে লাগলো দিন গুলো। মনের মধ্যে একটা জেদ তৈরি হয়ে গেলো সময় মত খাবার খাওয়া ঘুমানো শরীরের যত্ন নেওয়া সবকিছুই করি। এককথায় নিজেকে বদলানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছি।
কিছুদিন টিউশনি করার পরে আরেকটা বেড়ে গেল এখন মোট তিনটা টিউশনি করি। টিউশনি গুলো বাসার পাশেই হওয়ায় খুব বেশি একটা প্রবলেম হলোনা।
প্রতিদিন মারিয়াকে স্কুলে দিয়ে কলেজে যাওয়া, টিউশনি করানো, সময়মতো খাওয়া, রাতে পড়া সবকিছুই যেন নিজের আয়ত্তে চলে এসেছে।
সাদিয়ার বলা কথাগুলো মনে পড়লে নিজের জেদটা যেন আরো বেড়ে যায়।
দেখতে দেখতে 2 মাস পার হয়ে গেল। শরীর-স্বাস্থ্য আগের থেকে ভালো হয়েছে। হাতে বেশ কিছু টাকা জমা হয়েছে। মারুফ ভাইয়ের সাহায্য নিয়ে এখানে একটা জিমে ভর্তি হয়ে গেলাম।......
এখন খুব বেশি একটা কলেজে যাইনা।
সারাদিন জিম, টিউশনি, খাওয়া, পড়াশোনা etc এগুলো নিয়েই থাকি....
আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিচে এলাম....
মারিয়া : ভাইয়া আজ আমাকে স্কুলে দিয়ে আসো....
আমি : আজ....... আচ্ছা ঠিক আছে....
মারিয়া : আম্মু খাবার দাও...( আন্টিকে বলল)
আন্টি : আনছি বস তোরা...
আন্টি খাবার নিয়ে এলো আমি আর মারিয়া খাবার খেয়ে মারিয়ার স্কুলের দিকে রওনা দিলাম।
মারিয়া : ভাইয়া একটা কথা বলবো..?
আমি : কি..?
মারিয়া : তুমি দিন দিন এতো সুন্দর হয়ে যাচ্ছো কেনো...?
আমি : কই...?
মারিয়া : আগের থেকে অনেক সুন্দর হয়েছো।
আমি : হয়েছে আর পাম দিতে হবে না।
মারিয়া : আমাকে পাম্পার মনে হয়..?
আমি : একটু.....
মারিয়া : ভাইয়া...... ( একটু অভিমানি শুরে)
আমি : আচ্ছা হয়েছে.. চল এখন....
মারিয়া কে স্কুলে দিয়ে একটু মার্কেটে গেলাম। দুইটা টি-শার্ট নিয়ে বাসায় এলাম। রুমে এসে ফ্রেস হয়ে বিছানার উপর বসে একটা বই নিয়ে পড়ছি হঠাৎ....
- ভাইয়া.......
দরজার কাছ থেকে ডাক টা শুনে তাকিয়ে দেখি মারিয়া.......
আমি : তুই বাসায়..?
মারিয়া : হুম।
আমি : তোর স্কুল কি হলো..?
মারিয়া : আজ স্কুল ছুটি দিয়ে দিয়েছে...
আমি : কিন্তু কেনো...?
মারিয়া : আজ স্যারদের কি যেনো একটা মিটিং আছে তাই প্রথম ক্লাস করেই ছুটি দিয়েছে..
আমি : ও,, যা ফ্রেস হয়ে নে।
মারিয়া : আচ্ছা,,,,
মারিয়া চলে যাওয়ার পর আবার পড়ায় মন দিলাম।
এভাবেই চলছিল দিন গুলো দেখতে দেখতে আরও পাঁচ মাস অতিক্রম হয়ে গেল। নিজেকে অনেকটাই বদলে নিয়েছি। অনেকটা বলতে সম্পূর্ণ বদলে নিয়েছি। শারীরিক দিক থেকে মানসিক দিক থেকে একদম অন্যরকম হয়ে গিয়েছে। আমার বদলানোর পিছনে যেটা কাজ করেছে সেটা হচ্ছে জেদ। এই জেদ যে কাউকে বদলে দিতে পারে। তবে জেদটা হতে হবে ভালো কাজের জন্য।
আজ দুপুরে খাঁটে আধশোয়া হয়ে আছি হঠাৎ
কারো আসার আওয়াজ পেয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে দেখি আন্টি.......
আমি : আন্টি আপনি...?
আন্টি : হুম,,,,
আমি : কিছু বলবেন...?
আন্টি : হুম একটু কাজ আছে....
আমি : বলুন...
আন্টি : মারুফ অফিস থেকে আসতে দেড়ি হবে, বাসায়ও বাজার তেমন কিছু নেই তাই তোমাকেই বলতে এলাম।
আমি : আরে আন্টি আপনি বলুন...
আন্টি : কিছু বাজার করতে হবে।
আমি : বলুন কি কি আনতে হবে...( কাগজ আর পেন নিয়ে)
আন্টি : এখন যেতে হবে না, একটু পর....
আমি : সমস্যা নেই এখনই লিখে রাখি....
আন্টি যা যা বলল সবকিছুর একটা লিস্ট তৈরি করে নিলাম।
আমি : আন্টি, কেউ আসবে নাকি...?
আন্টি : হুমম সে জন্যইতো এত কিছু...
আমি : কে আসবে....?
আন্টি : মারুফের বড় চাচ্চু....
আমি : ও
আন্টি : হুম,,,। অনেক দিন পর আসছে...
আমি : আচ্ছা আন্টি সমস্যা নেই আমি বাজার নিয়ে আসবো...
আন্টি : আচ্ছা....
আন্টি চলে যাওয়ার পর উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে গোসল সেরে নিলাম। মারিয়া রুমে এসে....
মারিয়া : ভাইয়া তুমি বাজারে যাচ্ছ..?
আমি : হ্যাঁ
মারিয়া : আমার এই গুলো এনে দিও ( একটা কাগজ দিয়ে)
আমি : আচ্ছা....
তৈরি হয় ফোনটা হাতে নিয়ে সাগর কে ফোন দিলাম। একবার রিং বেজে কেটে গেল আবার দিলাম এবারও তার ব্যতিক্রম হল না হয়তো বিজি আছে।
ফোনটা রেখে ভেজা কাপড় গুলো ছাদে নিয়ে শুকাতে দিলাম। ছাদ থেকে নামার সময় আবার আন্টির সঙ্গে দেখা হলো...
আন্টি : তুমি একেবারে তৈরি হয়ে আছো..?
আমি : ভাবলাম এখনই যাই।
আন্টি : আচ্ছা যাও উনারাও খুব তাড়াতাড়ি চলে আসবে।
আমি : ও আচ্ছা..
আন্টি : নিচে এসো আমি টাকা দিচ্ছি।
নিচে গিয়ে আন্টির থেকে টাকা নিয়ে বেরিয়ে গেলাম বাজারের উদ্দেশ্যে। মনে হচ্ছে পুরো বাজারের লিস্ট দিয়েছে। এত কিছু কিনতে অনেক সময় পার হয়ে গেল। শেষমেষ অনেক কষ্টে বাজার শেষ করে একটা রিক্সায় করে বাসার দিকে রওনা দিলাম।
বাসায় এসে কলিং বেল দিতেই আন্টি এসে দরজা খুলে দিল। একে একে সব কিছু ভিতরে নিয়ে গেলাম।
রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ওয়াশরুম থেকে বের হতেই ফোনটা বেজে উঠলো ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি সাগর ফোন করেছে...
আমি : ওই শালা কোথায় ছিলি তখন..?
সাগর : একটু কাজে ছিলাম তাই ফোনটা ধরতে পারিনি।
আমি : বাসার সবাই কেমন আছে..?
সাগর : ভালোই আছে, তোর কি অবস্থা..?
আমি : এই তো চলছে মোটামুটি।
সাগর : তোর পড়ালেখা কেমন চলছে..?
আমি : ভালো..
সাগর : আমাদের তো জায়গায় অবস্থান।
আমি : কেন..?
সাগর : এবার মনে হয় টেনেটুনে পাশ করব।
আমি : ভালো করে পড়ালেখা কর। এখনো সময় আছে।
সাগর : দেখি..
আমি : আমাদের বাসার সবাই কেমন আছে..?
সাগর : ভালোই আছে সবাই।
আমি : আমার কথা বলে এখনও..?
সাগরে : কালকেও তোর ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল।
আমি : কি বলল..?
সাগর : তোর কথা জিজ্ঞাস করল, যে তোর কোন খোঁজ পাওয়া গিয়েছে কিনা...
আমি: তুই কি বললি..?
সাগর : আমার সেই এক কথাই, যে আমি কিছু জানিনা।
আমিঃ হুম..
সাগর : তা এখন কি করছিস...?
আমি : এইতো রুমে আছি।
সাগর : মারুফ ভাইয়েরা কেমন আছে..?
আমি : সবাই ভালো আছে।
সাগর : তুই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলিস না কেন..?
আমি : ফোন নেই।
সাগর : কেন তুই ফোন কিনিস নি..?
আমি : না, এখনো বাটন ফোন চালাই।
সাগর : এখনো ফোন কিনিস নাই কেন..?
আমি : ফোন থাকলেই রাতটা একটু বেশি জাগা হয় তাই কিনিনি।
সাগর : ও...
আমি : সাদিয়ার সাথে দেখা হয়..?
সাগর : হুম এখনো কলেজে আসে।
আমি : এখনও কি আগের মতই আছে..?
সাগর : না। আমার মনে হয় একটু পরিবর্তন হয়েছে।
আমি : যেমন..?
সাগর : একটু কথা কম বলে এই আর কি...
আমি : ও... আচ্ছা তাহলে পরে কথা বলবো..
সাগর : আচ্ছা সাবধানে থাকিস।
ফোনটা রেখে ছাদে গেলাম কাপড় আনতে গিয়ে দেখি মারিয়া আর একটা মেয়ে ছাদের এক কোণায় দাঁড়িয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে কথা বলছে। এই মেয়েটা আবার কে আগে তো কখনো দেখিনি। যাইহোক আমি আমার মতো কাপড় নিয়ে নিচে চলে এলাম।
কাপড় গুলো রুমে রেখে আন্টির কাছে গেলাম গিয়ে দেখি আন্টি রান্না করছে...
আমি : আন্টি কে কে এসেছে..?
আন্টি : মারুফের বড় চাচ্চু আর তার মেয়ে এসেছে।
আমি : ও তাহলে অনাকেই দেখলাম মারিয়ার সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলছে ছাদে।
আন্টি : হুম
আমি : তাহলে ওনার আব্বু কোথায়..?
আন্টি : চলে গিয়েছে..
আমি : আজ এল আর আজকেই চলে গেল..?
আন্টি : হুম। মিথিলাকে রাখতে এসেছিল।
আমি : মিথিলা কে..?
আন্টি : মারুফের বড় চাচ্চুর মেয়ে।
আমি : ও..... উনি কি এখানেই থাকবে..?
আন্টি : না কিছুদিনের জন্য বেড়াতে এসেছে। কি যেন একটা ঝামেলা হয়েছে ওকে নিয়ে। তাই এখানে কিছুদিন থাকবে।
আমি : ও আচ্ছা...
আমি রুমে এসে পড়তে বসে গেলাম হঠাৎ মারিয়া রুমে এলো.....
মারিয়া : ভাইয়া একটা বই দাও তোমার।
আমি : তুই আমার বই দিয়ে কি করবি..?
মারিয়া : মিথিলা আপু পড়বে।
আমি : উনি কিসে পড়ে..?
মারিয়া : তোমার সাথেই পড়ে।
আমি : তা কি বই নিতে বলেছে..?
মারিয়া : যেকোন একটা দাও...
তারপর মারিয়াকে একটা বই দিয়ে আবার পড়তে লাগলাম।
পড়া শেষ করে নিচে গেলাম রাতের খাবার খেতে। এখনো সবাই খাবার টেবিলে আসেনি শুধু আন্টি আর মারুফ ভাই বসে আছে। আমিও গিয়ে মারুফ ভাইয়ের পাশে বসলাম দুজন গল্প করছি।
আন্টি মারিয়াদের ডাক দিল খাবার জন্য। একটু পর মারিয়া আর ওই মেয়েটা নিচে নেমে এলো।
মেয়েটার মুখের দিকে তাকিয়ে কেমন যেন চেনা চেনা লাগলো। ভালো করে তাকিয়ে দেখি মিথিলা। সাদিয়ার বান্ধবী যে আমাকে সাদিয়ার থেকে সাবধান করেছিল। কিন্তু ও এখানে তাহলে কি ওই মারুফ ভাইয়ের চাচাতো বোন..?
আমি : আরে মিথিলা তুই এখানে..?
হঠাৎ এরকম কথা শুনে মিথিলা চমকে উঠলো। আমার দিকে তাকিয়ে বলল.....
মিথিলা : তুই..... তুই শাকিব...?
আমিঃ হুম কেন চিনতে পারছিস না..?
মিথিলা : তুই এখানে কিভাবে..?
.
চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com