Breaking News

গল্পঃ ভাবির অহংকারী বোন । পর্ব - ৫



মিথিলা : তুই..... তুই শাকিব...?

আমিঃ হুম কেন চিনতে পারছিস না..?
মিথিলা : তুই এখানে কিভাবে..?
আমি : সে অনেক কথা..
মারুফ : তুই ওকে চিনিস..?( আমাকে বলল)
আমি : হুমম আমরা এক কলেজেই পড়তাম।
মারুফ : ওও..
আন্টি : হয়েছে আগে খাবার খেয়ে নে তারপর কথা বলিস...
আর কথা না বলে সবাই একসাথে খেতে বসলাম খাওয়া শেষ করে মারুফ ভাই তার রুমে চলে গেল। আন্টিও থালা-বাসন গোছাতে লাগল আমি মারিয়া আর মিথিলা গিয়ে সোফাতে বসলাম।
আমি : এবার বল কেমন আছিস..?
মিথিলা : ভালো। তোর কি অবস্থা..?
আমি : দেখতেই তো পারছিস।
মিথিলা : একটা সত্যি কথা বলবি..?
আমি : কি..?
মিথিলা : তুই কি সত্যিই সাকিব নাকি অন্যকেও
আমি : কেন বিশ্বাস হচ্ছে না।
মিথিলা : কেমন যেনো মনে হচ্ছে... তুই এতো সুন্দর হোলি কিভাবে..?
আমি : কই..? ( ভাব রাখার জায়গা পাচ্ছি না)😁😜
মিথিলা : অনেক স্মার্ট হয়ে গেছিস....
আমি : হয়তো....
মিথিলা : তুই এখানে কিভাবে আসলি...?
আমি : ( প্রথম থেকে সবকিছু বললাম)
মিথিলা : ও
আমি : তোর কিসের যেনো ঝামেলা হয়েছে...?
মিথিলা : হুমম...
আমি : কিসের জন্য...?
মিথিলা : সাদিয়া করিয়েছে সবকিছু...
আমি : সাদিয়া ..?
মিথিলা : হুমম...
আমি : কিন্তু কেনো..?
মিথিলা : আমিই বলেছিলাম সবাইকে, যে তোর সাথে যা হয়েছে তা সব সাদিয়ার প্লান ছিলো...
আমি : ও
মিথিলা : তোর ভাবি সবটা শুনে সাদিয়াকে মারধোর করেছে, আর তার থেকেই সাদিয়ার আমার উপর রাগ...। আমাকে কয় একবার থ্রেড দিয়েছে। আরো অনেক ঝামেলা করেছে সাদিয়া। সেটা আব্বু জানতে পেরে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে....
আমি : কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না।
মিথিলা : ভালো হয়েছে ওর সাথে বন্ধুত্বটা নষ্ট করে...। ওর মতো মেয়ে কারো বন্ধু হওয়ার যোগ্য না।
আমি : তা এখন এখানেই থাকবি..?
মিথিলা : দেখি আব্বু কি বলে। এখানের ভাব ভালো হলেই আব্বু আবার নিয়ে যাবে।
আমি : ও আচ্ছা চল রুমে যাই...
মিথিলা : এখনি..?
আমি : হুমম কাল সকালে কথা হবে...
মিথিলা : আমারতো এখানেই ভালো লাগছে...
আমি : আমার লাগছে না... কাল সকালে কাজ আছে..
মিথিলা : কি কাজ..?
মারিয়া : সুন্দরি মেয়ে দেখা।
আমি : মারিয়া.......
মিথিলা : এখনতো মেয়েরা তোর পিছনে ঘুরবে....
আমি : কে ঘুরলো আর কে না ঘুরলো সেটা আমার দেখার বিষয় না।
মিথিলা : যে হ্যান্ডসাম হয়েছিস এখন তো যেকোনো মেয়ে প্রেম করতে চাইবে...
মারি : এখনো চায় তো...
মিথিলা : কে...?
মারিয়া : আমাদের স্কুল এর বড় আপু রা...
মিথিলা : সত্যি..?
মারিয়া : একদম সত্যি... ভাইয়া আমাকে স্কুলে দিয়ে আসার পর অনেক আপুরা আমাকে বিরক্ত করে।
মিথিলা : তোকে বিরক্ত করে..?
মারিয়া : হুমম। ভাইয়ার সাথে কথা বলিয়ে দিতে বলে..
মিথিলা : তাই নাকি...
মারিয়া : আমিও খেয়ে দিয়েছি...
আমি : তুই আবার কাকে খেয়ে দিলি..?
মারিয়া : এক আপুকে। তোমার নাম্বার দেবো বলে অনেক কিছু খেয়েছি।
আমি : তুই স্কুলে গিয়ে এসব করিস..?
মারিয়া : আমার কি দোষ..? আপুরাই এসে আমার মাথা খেয়ে নেয়।
মিথিলা : 😀😀😀😃
আমি : তুই আবার এভাবে দাঁত কেলিয়ে হাসছিস কেনো..?
মিথিলা : মারিয়ার কথা শুনে...। তাহলে এসব চলছে এখন...?
আমিঃ আমি আন্টিকে বলে দেব।
মারিয়াঃ আম্মু সব জানে।
আমিঃ তুই এসব আন্টিকেও বলেছিস..?
মারিয়াঃ হুমম...
আমিঃ মেরে দাঁত ভেঙে দেবো।😬
মিথিলাঃ কেন.. ঠিকই তো করেছে..
আমিঃ তুইও..?🙁 আচ্ছা তোরা থাক আমি গেলাম 😔
আমি আর ওখানে না থেকে উঠে চলে এলাম নিজের রুমে। মিথিলা আর মারিয়া দাঁত বের করেই আছে🤑। রুমে এসেই আগে আয়নার সামনে গেলাম। কোথায় বা যাব ভাব রাখার জায়গা পাচ্ছি না তো।😎😎 আয়নার সামনে এসেই তো শুরু হয়ে গেল ভাম্বুম মারা😏
নিজেকে ডান থেকে, বাম থেকে ,উপর থেকে, নিচ থেকে সবদিক থেকেই দেখছি। বাহ ভালই দেখাচ্ছে 😁।আজ আর দেখবো না বেশি দেখলে ফুরিয়ে যাবে।
বেশি রাত না জেগে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেলাম😴
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকটাই চমকে উঠলাম। মিথিলা আমার রুমে চেয়ারের উপর বসে আছে😯
আমিঃ তুই এখানে..?
মিথিলাঃ হ্যাঁ...
আমিঃ কখন আসলি..?
মিথিলাঃ একটু আগে।
আমিঃ কি করছিস এখানে..?
মিথিলাঃ তোকে দেখছি,
আমিঃ আমাকে কখনো দেখিস নি আগে..?
মিথিলাঃ দেখেছি তবে...
আমিঃ তবে কি..?
মিথিলাঃ তবে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখি নি কখনো।
আমিঃ দেখা হয়েছে,.? এবার যা..
মিথিলাঃ ভরছে না তো,,,
আমিঃ মানে,, কি ভরছে না..?
মিথিলাঃ তোকে দেখে মন ভরছে না।
আমিঃ এখন একদম মজা করবি না। আর যা এখন এখান থেকে।
মিথিলাঃ এখানে থাকলে কি সমস্যা..?
আমিঃ অনেক সমস্যা, তুই যা,,
মিথিলাঃ যাব একটা শর্তে,,
আমিঃ কোন শর্ত নয়,,
মিথিলাঃ তাহলে যাব না।
আমিঃ আচ্ছা বল।
মিথিলাঃ আজ আমাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে।
আমিঃ আমার কাজ আছে আমি পারবোনা।
মিথিলাঃ আমিও যাচ্ছি না। এখন, এখানেই ঘুমাবো।
আমিঃ ধুর,,, আচ্ছা যাব।
মিথিলাঃ সত্যিই...? ওকে...
আমার গাল টেনে দিয়ে চলে গেল কি ঝামেলায় পড়লাম রে বাবা। ধুর ভালো লাগেনা,,
উঠে গিয়ে দাতব্রাশ করে নিলাম।
নিচে গিয়ে দেখি সবাই আছে
আমিঃ নতুন ম্যাডামকে পেয়ে আমার কথা কারো মনেই নেই।
আন্টিঃ কেন মিথিলা তো তোমাকে ডাকতে গিয়েছিল।
মিথিলাঃ আমি কখন ডেকে এসেছি, তাও ওঠেনি। গিয়ে দেখি কি যেন স্বপ্ন দেখছে আর একা একাই বকবক করছে।
আমিঃ একদম মিথ্যা কথা বলবি না।
মিথিলাঃ আমি মিথ্যা বলি না।
আমিঃ এটাই তো মিথ্যা বললি।
আন্টিঃ হয়েছে এবার নাস্তা করে নে,,
মিথিলাঃ একটা গুড নিউজ আছে, আজ শাকিব আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবে।
আমিঃ আমি সময় পেলে নিয়ে যাবো, আর না পেলে নাই।
মারিয়াঃ ভাইয়া তাহলে আমিও যাব।
মিথিলাঃ কোন কথা শুনতে চাই না, আমাদের নিয়ে যেতেই হবে।
আমিঃ আন্টি দেখো না, আমি বলছি আমার একটু কাজ আছে। নোটগুলো আনতে হবে বন্ধুদের থেকে তাও ওরা কথা শুনছেনা।
মিথিলাঃ কিন্তু,,,,
আন্টিঃ চুপ... কোন কথা না. খাবার খা..
মিথিলা আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে খেতে শুরু করল। ভালোই হয়েছে, যেতে হবে না।
আমি ভালোমতো আমার কাজ করতে পারব।
যাইহোক,,,
খাওয়া-দাওয়া করে রুমে চলে গেলাম। একটু পরেই দেখি মিথিলা চলে এসেছে।
আমিঃ তুই আবার কি করতে আসলি..?
মিথিলাঃ কথা কিন্তু এটা ছিল না...
আমিঃ তো কি কথা ছিল..?
মিথিলাঃ তুই একটু আগে বললি নিয়ে যাবি ঘুরতে, আবার এখন বলছিস যাবি না।
আমিঃ বললাম তো আমার কাজ আছে বন্ধুদের থেকে নোটগুলো আনতে হবে।
মিথিলাঃ তোকে এখনি নিয়ে যেতে হবে।
আমিঃ আজকে পারব না কালকে নিয়ে যাব।
মিথিলাঃ না আজকেই এবং এখনই,,,,
আমিঃ এখন কিভাবে।
মিথিলাঃ এটাই তোর শাস্তি,,,
আমিঃ আমি যেতে পারব না।
মিথিলাঃ পারবিনা মানে, তোর কিন্তু এখন খবর আছে,,
আমিঃ কি করবি তুই..?
মিথিলাঃ দেখতে চাস আমি কি করতে পারি..?
আমিঃ বললাম তো আমার কাজ আছে আজকে। তার পরেও এরকম করছিস কেন। আজ নোটগুলো না আনলে আর আনতে পারবোনা।
মিথিলাঃ তুই নিয়ে যাবি ব্যস আর কোন কথা শুনতে চাই না।
আমিঃ আমি বলছিতো কালকে নিয়ে যাব। এতো জিদ করছিস কেনো..?
মিথিলাঃ আমিও বলছি তো আজ এবং এখনই নিয়ে যেতে হবে।
আমিঃ আমি যাব না, তোরা যা,,,,
মিথিলাঃ যাবি না মানে...
আমিঃ যাব না মানে যাব না।
মিথিলাঃ তুই যাবি তোর ঘাড় যাবে। এভাবে বললে হবে না দাড়া দেখাচ্ছি মজা।
(আমার দিকে এগিয়ে আসছে)
আমিঃ এদিকে আসছিস কেন..?
মিথিলাঃ দেখাচ্ছি তোকে...
আমিঃ বোঝার চেষ্টা কর..
মিথিলাঃ আমি কিচ্ছু বুঝতে চাই না।
আমিঃ ওখানেই দাঁড়া একদম আমার কাছে আসবি না।
মিথিলাঃ তাহলে আমি দরজা আটকে দিয়ে আসছি...
আমিঃ দরজা আটকে কি করবি...?
মিথিলাঃ চিৎকার করব...
কথাটা শুনেই মনের মধ্যে ঝড় বয়ে গেল। আমার কথা বলার শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে। আবার সেই পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়ে গেল...
আমিঃ চুপ... একদম চুপ..। আমাকে কি পেয়েছিস তোরা..? যখন যা বলবি তাই করতে হবে..? সাদিয়ার এরকম ব্যবহারের জন্য আজ আমি বাড়ি ছাড়া, নিজের পরিবার ছাড়া এখানে এসে উঠেছি। কিন্তু, এখানে এসেও যে এরকম কিছু আবার শুনতে হবে, এটা ভাবতেও পারিনি। তোর থেকে এটা কখনো আশা করিনি। তুই ঘুরতে যেতে চাস তো..? আচ্ছা যা তৈরী হয়ে নে।
মিথিলাঃ আমি সরি রে বুঝতে পারিনি, আমি সত্যি বুঝতে পারিনি।
আমিঃ হুম এটাই, মেয়েরা বুঝতেই পারেনা যে তারা কি করে।
মিথিলাঃ আমার মনে কোন খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না, বিশ্বাস কর..
আমিঃ হয়েছে আর বলতে হবে না দ্রুত তৈরী হয়ে নে।
আমি আর কোন কথা না বলে মিথিলাকে দরজা থেকে সরিয়ে বাইরে চলে এলাম। মারিয়ার রুমে গিয়ে ওকে ও বললাম তৈরি হয়ে নিতে
আর মিথিলা কেউ ডেকে আনতে। আমি নিচে এসে সোফাতে বসে আছি। মনটা আবার খারাপ হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পরে দেখি মারিয়া মিথিলাকে টেনে নিচে আনছে। জোর করেই মিথিলাকে নিয়ে এলো।
মিথিলা আমার দিকে অসহায়ের মত তাকিয়ে আছে.. ওদের সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। রাস্তা দিয়ে তিনজন হেটে চলেছি,,
হঠাৎ...
মিথিলাঃ মারিয়া তুই একটু এগিয়ে যা।
মারিয়াঃ কেন..?
মিথিলাঃ এত প্রশ্ন করিস কেনো..? যেতে বললাম যা।
( মারিয়া আমাদের থেকে একটু সামনে চলে গেল
আমি আর মিথিলা পিছনে হেঁটে আসছি)
মিথিলাঃ আমার উপর রেগে আছিস..?
আমিঃ না..
মিথিলাঃ আমি সত্যি সরি, মজা টা একটু বেশি করে ফেলেছি।
আমিঃ ঠিক আছে।
মিথিলাঃ তুই চাইলে আমাকে শাস্তি দিতে পারিস।
আমিঃ সেটার দরকার নেই।
মিথিলাঃ আমাকে মাফ করেছিস তো..?
আমিঃ বললাম তো ঠিক আছে। ( বিরক্তি নিয়ে)
মিথিলাঃ আমি ঘুরতে যাব না..
আমিঃ কেন?
মিথিলাঃ তুই এভাবে গোমরা মুখ করে থাকলে নিজেকে অপরাধী বলে মনে হয়।
আমিঃ আমি কোথায় গোমরা মুখ করে আছি..?
মিথিলাঃ আমার ভালো লাগছে না এভাবে ঘুরতে যেতে। চল বাসায় যাবো।
আমিঃ না এখন ঘুরবো।
মিথিলাঃ তাহলে এভাবে গোমনা মুখ করে থাকা যাবে না।
আমিঃ আরে চলতো..
মিথিলাঃ না আগে একটু হাস তারপর..
আমিঃ আচ্ছা চল (একটু হেসে)
তারপর আমরা তিনজন হাঁটতে হাঁটতে নদীর পারে চলে এলাম
আমিঃ চল গিয়ে ফুচকা খাই।
মিথিলাঃ মাত্রই তো খাবার খেয়ে আসলাম।
আমিঃ তাতে কি হয়েছে, ফুচকা কি পেট ভরে খাওয়ার জিনিস..
মারিয়াঃ চলো আমিও ফুচকা খাবো।
মিথিলাঃ আচ্ছা চল..
অনেক লোক এসেছে নদীর পাড়ে ঘুরতে। আমরা গিয়ে ফুচকার দোকানে বসে তিন প্লেট ফুচকার অর্ডার দিলাম একটু পরেই তিন প্লেট ফুচকা দিয়ে গেল আমরা তিনজন তিনটা চেয়ারে বসে ফুচকা খাচ্ছি..
হঠাৎ....
( হঠাৎ কি হলো,...?)
.
চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com