Breaking News

মুখোশের আড়ালে। পর্ব - ০১



আ,আ,আ,হহহহহহ,,,,,,কারোর চিৎকারের আওয়াজ শুনে সেখানে দৌড়ে আসে, হ্যালি, ক্যাথিয়া রুহাম,রাফিন,উর্মি।

সবাই এসে দেখে কর্নিয়া অজ্ঞান হয়ে ফ্লোরে পড়ে আছে।
রাফিন গিয়ে কর্নিয়ার মাথার পাশে বসে,উর্মিকে বলে দ্রুত পানি নিয়ে আসতে।
উর্মি পাশে থাকা টেবিল থেকে পানির জগ এনে কর্নিয়ার মুখে পানি ছিটাতে থাকে।
কিছুক্ষণের মধ্যে কর্নিয়ার জ্ঞান ফিরে আসতেই। সবাই একসাথে কর্নিয়ার চারপাশে বসে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে? এইভাবে চিৎকার কেনো দিলি?
কর্নিয়ার জ্ঞান ফিরতেই শুধু মুখ দিয়ে একটা কথা বের হচ্ছে লাশ!লাশ!এখানে লাশ আছে।
রাফিন কর্নিয়ার মাথায় হাত দিয়ে বলে কি বলছিস এসব? এখানে লাশ কোথায় থেকে আসবে?
সবাই চারপাশে তাকিয়ে দেখে কোথাও কোন লাশ নেই।
হ্যালিঃআরে কোথায় লাশ? এখানে তো কিছুই নেই?

উর্মি আর ক্যাথিয়া কর্নিয়াকে ধরে দাঁড় করাতেই। কর্নিয়া ওয়াশরুম দেখিয়ে বলে ওখানে লাশ।এটা শুনে সবাই একসাথে সেদিকে এক পা এক পা করে এগুতে থাকে।
কর্নিয়া ভয়ে এগুনোর সাহস পাচ্ছে না।
ক্যাথিয়া,হ্যালি কর্নিয়াকে ধরে ধীর পায়ে ওয়াশরুমের দিকে এগুতে থাকে।
সবাই ওয়াশরুমের সামনে গিয়ে দেখে রক্তের ছিটে ফোঁটা বাহিরের চার পাশে ছড়িয়ে আছে।
রাফিন গিয়ে ওয়াশরুমের দরজাটা খোলতে, উর্মি সামনে থাকা লাশকে দেখে চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে নিচে পড়ে যাওয়ার আগে রুহাম উর্মিকে ধরে নেই।
হ্যালি, ক্যাথিয়া, কর্নিয়া ওয়াশরুমের ভিতরে যেতে লাশ দেখে ভয়ে একে অপরেকে আর শক্ত করে ধরে রাখে। রুহাম হ্যালিকে ডাক দেয় উর্মিকে ধরার জন্য।

হ্যালি আর রুহাম উর্মিকে ধরে বিছানায় সুয়ে দিয়ে দ্রুত ওয়াশরুমে চলে আসে।
রাফিন লাশটা দিকে ধীর পায়ে এগুতে থাকে।
লাশের কাছে গিয়ে লাশটা কে উল্টাতে,তার মুখ দেখে রাফিন দ্রুত বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায়।
ক্যাথিয়া লাশটার মুখ দেখে তর্নিশা আ,,আ,,বলে চিৎকার দেয়।
কর্নিয়া তর্নিশার নাম শুনে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে কিইই তর্নি,শা,আ,?
কর্নিয়া তর্নিশার লাশ দেখে মাথা ঘুরতে থাকে রাফিন এসে কর্নিয়াকে জড়িয়ে ধরে।
রুহাম তর্নিশার লাশের দিকে বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। সে বিশ্বাস করতে পারছে না যাকে কিছুক্ষণ আগে এত হাসি খুশি দেখে ছিলো, তাকে এতটা ভয়ংকর লাশে দেখবে।(তর্নিশার গলা চুরি দিয়ে কাটা,মুখে চুরি দিয়ে ক্রস চিহ্ন আঁকা,হাতে পায়ে চুরির অজস্র কাঁটা চিহ্ন,চোখ দুটো যেনো উপড়ে ফেলেছে। এতটা ভয়ংকর কোন লাশ, আজ পযন্ত দেখেনি)

হ্যালি তর্নিশার লাশের পাশে দেখে হাসির ইমোজির স্টিকার, স্টিকারে রক্ত লাগানো যেটা দেখতে খুব ভয়ংকর লাগছে হ্যালি এটা দেখে আর ভয় পেয়ে যায়।
ক্যাথিয়া যখন ওয়াশরুমের আয়নায় দিকে তাকায়, তখন সে দেখে সেখানে রক্ত দিয়ে লেখা,,I Am Back,মৃত্যুর জন্য তৈরি হয়ে নাও। আর আয়নার চারপাশে হাসির ইমোজির স্টিকার লাগানো।
ক্যাথিয়া এটা দেখে ভয়ে দুই পা পিছিয়ে যায়।
আর ভয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠ বলতে শুরু করে , আমি মরতে চাই না, আমি মরতে চাই না। আমি বাঁচতে চাই, আমি আর এখানে এক মুহুর্ত থাকবো না।

ক্যাথিয়ার কথা শুনে হ্যালি এসে ক্যাথিয়ার কাঁধে হাত দিয়ে বলে, কি হয়েছে ক্যাথি? তোকে আবার কে মারবে?
ক্যাথিয়া হাত দিয়ে সবাইকে আয়নার মাঝে লেখাটা দেখায়।
সবাই আয়নার মাঝে লেখাটা দেখে একে অপরের দিকে বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে।
রুহাম এই রিসোর্টের ম্যানেজারকে কল দেওয়ার জন্য ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে উর্মির জ্ঞান ফিরে এসেছে, সে উঠে বসতে রুহামকে দেখে বলে আমি বাড়ি যাবো,আমার খুব ভয় করছে। রুহাম উর্মি পাশে বসে ও কে জড়িয়ে ধরে বলে-- ভয় পাস না আমরা সবাই আছি তো।
এই বলে রুহাম উর্মি পাশে বসে ম্যানেজারকে কল দেয়।
কল রিসিভ করছে না দেখে, রুহাম আবার কল দেয়। তখনি ম্যানেজার কল রিসিভ করতেই রুহাম সব ঘটনা খোলে বলে।

দ্রুত ম্যানেজার সেখানে চলে আসে সাথে রিসোর্টের সব স্টাফ ও আসে। সবাই লাশ দেখে ভয়ে এক জড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।
উর্মি তর্নিশার লাশ দেখে কান্না ভেঙ্গে পড়ে, সে বিশ্বাস করতে পারছে না। তর্নিশাকে এই অবস্থায় দেখবে।
ম্যানেজার পুলিশকে কল দেয়। কিছুক্ষনের মধ্যে পুলিশ সেখানে এসে হাজির হয়।
পুলিশ তর্নিশার লাশ দেখে বলে এই রিসোর্টে আবার খুন?
রাফিন এটা শুনে পুলিশের উদ্দেশ্য বলে এই কথা কেনো বললেন? এখানে আর একবার খুন হয়েছে নাকি?
পুলিশ অফিসার (সাইফ আহমেদ) সেখানে উপস্থিত সবার উদ্দেশ্য বলে, হুম এইবার নিয়ে তিনবার হয়েছে। কেনো তোমাদেরকে ম্যানেজার কিছু বলে নি?
সবাই এটা শুনে একে অপরের দিকে তাকাই রুহাম এটা শুনে ম্যানেজারের উদ্দেশ্য বলে, আপনি আমাদের এই বিষয়ে কিছু জাননি কেনো?

-- আসলে ওই খুন গুলো প্রায় আজ থেকে ষোল সতেরো বছর আগে হয়েছে। এতদিন আমরা ভেবেছি আর হয়তো কোন সমস্যা হবে না। কিন্তু হঠাৎ এতবছর পর আবার কেউ খুন হবে সেটা আমরা ভাবিনি(ম্যানেজার)
সাইফ তর্নিশার লাশ দেখে বলে, লাশের দিকে তাকিয়ে বলে এটা কি করে সম্ভব?
রাফিন সাইফের কথা শুনে বলে, কি হয়েছে স্যার?
-- একই স্টাইলে খুন এটা কি করে সম্ভব? কিছুদিন আগে তো ওর ফাঁসি হয়েছে।(সাইফ)
এটাই শুনে কর্নিয়া,হ্যালি, ক্যাথিয়া, উর্মি খুব ভয় পেয়ে যায়।তারা একে অপরের হাত ধরে রাখে।
সাইফ সবার উদ্দেশ্য বলে তোমরা এই রিসোর্টে কবে এসেছো?
-- তিনদিন হবে স্যার( রাফিন)

-- এই তিনদিনে তোমরা কোন লোক বা এমন কিছু দেখে তোমাদের সন্দেহ হয়েছে?
সবাই ভাবতে থাকে, একে একে সবাই উত্তর দেয়। না এমন কিছু দেখেনি,যেটা আমাদের সন্দেহ হবে।
তখন কর্নিয়া চোখ বন্ধ করে স্যার ওই স্টাফ,ওই স্টাফ কে দেখে একটু সন্দেহ হয়েছিলো, কিন্তু ও আমার ফ্রেন্ডকে কেনো খুন করবে?
সাইফ দ্রুত কর্নিয়ার সামনে এসে বলে এখানে দেখো এদের মধ্যে আছে সেই স্টাফ?
কর্নিয়া সকল স্টাফের দিকে তাকিয়ে বলে না স্যার এখানের মধ্যে নেই।
সাইফ ম্যানেজারের সামনে এসে বলে আপনার রিসোর্টে কয়জন স্টাফ আছে?
-- সবাই তো এখানে আছে এই দশজন। আর তো নেই। (ম্যানেজার)
সাইফ কর্নিয়ার সামনে এসে বলে তুমি তার মুখটা দেখে ছিলে?
কর্নিয়া মাথা নাড়িয়ে বলে না স্যার, এই জন্য তো সন্দেহ হয়েছে।
সাইফ আচ্ছা তুমি আমাকে সবটা খোলে বলো
কর্নিয়া তখন বলতে শুরু করে।

এখন থেকে প্রায় দেড়- ঘন্টা আগে আমি আর তর্নিশা আমার রুমে বসে ছিলাম। তর্নিশা মোবাইল নিয়ে গেইম খেলছিলো আমার খিদে লাগায় আমি রুমে বসে খাবার আনার জন্য কল দিয়।
কিছু ক্ষণের মধ্যে রুমের কলিং বেল বাজতে আমি দরজা খোলে দেখি খাবার নিয়ে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে মুখে মাক্স, হাতে পায়ে মোজা, মাথায় ক্যাপ দেওয়া।এসব দেখে আমি একটু অবাক হয়ে যায়।আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, একি তুমি মাক্স পড়ে আছ, আমি আসার পর থেকে তো এখান কার কোন স্টাফকে মাক্স পড়তে দেখি নায়।

ছেলেটি ভিতরে আসতে আসতে বলে
--ম্যাডাম আমি এইরকম থাকি। আপনি হয়তো আমাকে খেয়াল করেননি। আসলে বাহিরে অনেক ধুলো বালি। আমি নিজেকে খুব ভালোবাসি তাই সবসময় নিজেকে সব কিছু থেকে বাঁচানোর জন্য এইরকম থাকি।
-- বাহ খুব ভালো মেইনটেইন করো তুমি। ( কর্নিয়া)
ছেলেটি যখন খাবার রেখে চলে যেতে নিবে তখনি রুমের লাইট অফ হয়ে যায়।
লাইট অন হতে দেখে ছেলেটি রুমে নেই।
রুমে দরজা খোলে থাকায় আমি ভাবছি হয়তো ছেলেটি চলে গেছে।
এটা বলা শেষ করতেই তখন সাইফ বলে তর্নিশা যখন তোমার সাথে ছিলো তাহলে ও খুন হলো কি করে। তুমি কি তর্নিশাকে রুমে একা রেখে কোথাও গিয়েছিলে?
কর্নিয়া তখন আবার কিছু একটা ভেবে বলে হ্যাঁ আমি রুম থেকে বের হয়েছি তার কারণ

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com