বট অশত্থ ও ঝড়



বট অশত্থ ও ঝড়


 দিব্যি ছিল

খোলা আকাশের নিচে জড়িয়ে দুজনে ,
এর মাথা ওর কাঁধে
ওর হাত এর হাতে ,
পায়ে পা শেকড়ে শেকড় ,
মাটি কামড়ে।
সব ঝড় ঝাপ্টা সামলে ,
দুদণ্ড গল্প করতো
তারা গুনতো আকাশের।
হঠাৎ কোথা থেকে
এক মাতাল এসে বলে
"এই তুমি কি বট ? না অশত্থ ?
না না তুমি তো বট !
না - এই তো অশত্থ !"
কপালে ভাঁজ পরে দুজনের -
ভাবে তাই তো !
আমি তো বট !
আমি তো অশত্থ !
ইস - একদম আইডেন্টিটি ক্রাইসিস !
ভীষণ ভেদ বুদ্ধিতে হাত ছাড়িয়ে
পরস্পরকে থেকে সরিয়ে
কিল চড় লাথি ঘুঁষি মেরে
চায় আলাদা হতে।
সুযোগ বুঝে দুষ্ট বিদেশী ঝড়ও
হাজির হয় প্রলয় নিয়ে
বহুদিন থেকেই ও চাইছিলো
ওদের শুইয়ে দিতে।
তারপর সে এক ভীষণ দুর্যোগ !
ঝড় বৃষ্টি টানাটানি
ওদের আলিঙ্গন মুক্তির মারামারি ,
কেঁপে কেঁপে ওঠে বাবুইয়ের বাসা
সে গলাটা বের করে বলে
"এই কি করছো দুজনে
আটশ বছর জড়িয়ে ধরে
তোমরা আর কেউই
শুধু বট বা শুধু অশত্থ নেই
বরং অশত্থ অশত্থ বট
বা বট বট অশত্থ !
এক মাটি এক প্রাণ এক কাণ্ড !
এক খাবার এক ভাষা এক ছন্দ ,
আর এর আগে
তোমরা তো যুদ্ধও করেছে এক সাথে
এখন মাতালের বুদ্ধিতে যদি
জোর করে আলাদা হবার চেষ্টা করো
তবে শুধুই ক্ষত বিক্ষত রক্ত শবদেহ !
বরং এই মহাদুর্যোগে
হাতে হাত বুকে বুক রেখে
আরও গাঢ় করে নিবিড় হয়ে ওঠো
ঝড় থেমে গেলে দেখো
তোমাদের কচি সবুজ পাতারা
কেমন মাথা নাড়ে গল্প করে
শীতল দখিনা বাতাসে !!
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url