Breaking News

সুখ পাখি । পর্ব - ১১



হঠাৎ পেছন থেকে কারো ডাক শুনে দিশা আর আরু পেছনে তাকালো,,

রিহান দাঁড়িয়ে আছে,,
রিহান ধীর পায়ে আরুর সামনে এসে দারায়,,
রিহানঃ-- কেমন আছো আইরাহ,,
আরুঃ- খারাপ থাকলে নিশ্চয়ই এভাবে রাস্তায় দৌড়াতাম না,, অবশ্যই ভালো আছি
রিহানঃ-- আমাকে জিজ্ঞেস করলে না আমি কেমন আছি!
আরুঃ- আমি তো দেখতেই পাচ্ছি,, আপনি সুস্থ সবল বেডা মানুষ,, তা আর জিগাইয়া লাভ কি,,
রিহানঃ-- ওহ হ্যা তাই ই তো,,তো কোথাও যাচ্ছিলে নাকি?
আরুঃ- আমি যেখানে মন চাই সেখানেই যাবো সেটা আপনাকে বলতে যাবো কেন,,আর আপনি এখানে কি করছেন?
রিহানঃ-- না এমনি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম,,হঠাৎ তোমার সাথে দেখা,, তাই ভাবলাম কথা বলে যায়,,
আরুঃ- ওহ ভাইয়া,, আমার না কাজ আছে,,আপনি আমার বাবার বাড়িতে আসবেন সেখানে আমার মা আছে,, মায়ের সাথে ইচ্ছে মতো কথা বলবেন,,আজ তাহলে আসি,,
আল্লাহ হাফেজ,,

বলেই আরু দিশার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো,,
দিয়া এতক্ষণ হা করে আরু আর রিহানের কথা শুনছিল,,
দিশাঃ-- ওই ঝাড়ু,,ওই বেটা ক্যাবলাকান্ত কে রে?
আরুঃ- ফাস্ট অফ অল আমি আরু নট ঝাড়ু,, দ্বিতীয়ত ওই বেটা হলো আমার মায়ের লতা পাতার আত্মীয়,, খালি,,
গায়ে পরে কথা বলতে আহে,,
দিশাঃ- অহ,,আজ বাদে কাল পরীক্ষা,, বাড়িতে যাহ গিয়ে বেশি করে পড়,,আমিও যায়
আরুঃ- ওম্মা গোওও এ দেখি ভুতের মুখে রাম রাম,,
দিশাঃ- ভাই তুই তো না পড়েও পারিস আমি তো পড়েও পারি না,,
আরু ঃ-- আচ্ছা যাহ,,পরে ফেল করলে কইবি,,আরু পড়তে দেই নাই,,যাহ পড় গিয়া,,
আরু আর দিশা বিদায় নিয়ে বাড়িতে চলে যায়,,
এভাবে চলতে চলতে পরীক্ষার দিন চলে আসলো,,
পরীক্ষার দিন সকালে,,,
তরুঃ-- আরু, বোন আমার উঠ না,, পরীক্ষা আছে ভুলে গেলি,,
আরুঃ- তুই যা তো,, আমি ঘুমাবো,,
তরুঃ-- এই যে দেখ,, সাড়ে ৮ টা বাজে ১০ টা থেকে পরীক্ষা আছে,, পরে কিন্তু লেট হয়ে যাবে,,বোন আমার উঠ না,,

আরুঃ- দুর লেট হলে হবে,,আমি দিপু খালার সাথে কথা কমু নে,,এখন তুই যাহ,,
তরুঃ-- এমন ভাবে বলছে যেন দিপু মনি ওনার মায়ের পেটের খালা লাগে!!
আরুঃ- তুই যাবি!!!
তরুঃ-- তুই কি উঠবি না??
আরুঃ- না না,,,
হঠাৎ আরু মুখে এক মগ পানি এসে পরলে আরু লাফ দিয়ে উঠে,,
আরুঃ- আম্মুওওও গোওও তোমার ছাদ ফুটো হয়ে গেছে গোওও,,
আরু চোখ বন্ধ করেই চিল্লাচ্ছে,, তরু আর উপাই না পেয়ে আরুকে খাট থেকে ধাক্কা মারে আরু ঠাস করে ফ্লোরে পরে যায়,,ততক্ষণে আরুর ঘুম পুরোপুরি কেটেছে,,
আরুঃ- ওই ফহিন্নি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলি কেন?
তরুঃ-- আর একটা কথাও না ওয়াসরুমে যা তাড়াতাড়ি,, উনারে ঘুম থেকে তুলা আর ৩য় বিশ্ব যুদ্ধ করা একই,,
ওফফফ....

বলেই তরু আরুর ঘর ছেড়ে বের হয়ে নিচে যায়,,
আরু কতক্ষণ ঝিম ধরে বসে থেকে ওয়াসরুমে যায়,,
আয়েশা ঃ-- কি নবাব বেটি উঠেছে,,??
তরু নিচে নামতে মায়ের প্রশ্ন টি শুনতে পাই,,
তরুঃ-- তোমার মেয়ের জামাই এর কপালে ঢের দুঃখ আছে বলে দিলাম,,
তরুর কথা শুনে মিসেস আয়েশা মুচকি হাসে,,তিনি জানে তার ছোট মেয়ে বড্ড বেশি ঘুম কাতুরে,,
আরু রেডি হয়ে নিচে নেমে আসে,,আর সিড়ি দিয়ে নামার সময় মাহমুদ রাহমান ও নেমে আসে,,
মাহমুদ ঃ-- কি মামনি,,প্রিপারেশন কেমন?
আরুঃ- ভালো বাবা,,
মাহমুদঃ-- আলহামদুলিল্লাহ,, একদম ভয় পাবা না,,যা লিখবা ঠান্ডা মাথায় লিখবা,,
আরুঃ- মনে থাকবে বাবা,,
তরুঃ-- আয় এদিকে আয়,,
বোনের ডাকে আরু মাথা কাত করে দেখে তরু খাবার প্লেট নিয়ে দাড়িয়ে আছে,,
আরুঃ- আপু তুই খাইয়ে দিবি( খুশি হয়ে)
তরুঃ-- হুম,,আয় তাড়াতাড়ি,,
তরু সুন্দর ভাবে আরুকে খাইয়ে দেই,,শুধু এখন না প্রতিটি পরীক্ষার সময় ই তরু আরুকে খাইয়ে দেই আর এক গাদা এডভাইস দিয়ে দেই আর আরু তা খাবারের সাথে গিলে,,
খাবার শেষে,,

আরুঃ- আচ্ছা, তাহলে আমি এখন আসি,,দিশা রাস্তায় দাড়িয়ে থাকবে,,
তরুঃ-- আমি আসবো?
আরুঃ- আমি কি বাচ্চা নাকি,,!আজব
তরুঃ-- সাবধানে যাবি আর ভালো করে পরীক্ষা শেষ করবি,
আরুঃ- আচ্ছা বাবা আচ্ছা!
আরু মা বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পরে,,
রাস্তার মোরে দিশা আরুর জন্য অপেক্ষা করছিল,,
আরুকে আসতে দেখে দিশাও আরুর দিকে এগোই,,
দিশাঃ- কিরে প্রিপারেশন কেমন?
আরুঃ- আলহামদুলিল্লাহ,, তোর?
দিশাঃ- পাস করার মতো,,
তাদের মাঝে আর কোন কথা হয়নি,,,

খান গ্রুপের অফিসে...
শুভ্র তার কেবিনে বসে কিছু ফাইল চেক করছে,, এমন সময় দরজার বাইরে থেকে কেউ বলে উঠলো,,
---May I come in,, sir?
শুভ্রঃ-- ইয়েস কাম,,
লোকটি ভেতরে ঢুকে সোজা শুভ্রের চেয়ারের সামনে বসে পরলো,,
শুভ্র সামনের দিকে তাকিয়ে হতবাক হয়ে গেলো,,কারন তার সামনে সয়ং অভ্র বসে আছে,
,গত ২ বছর অভ্রের কোন খোজ ছিলো না, শুণ্র কম চেষ্টা করে নি,অভ্রকে খোঁজার,,
কিন্তু কথায় আছে না যে হারিয়ে যায় তাকে খুঁজে পাওয়া যায় যায় কিন্তু যে নিজে থেকে লুকিয়ে থাকে তাকে খুজে পাওয়া যায় না,,

অভ্রের ব্যপার টাও ঠিক তেমন ই,,তাই দিন কে দিন অভ্রর প্রতি শুভ্রের অভিমান আকাশ সম হয়ে গেছে যা অভ্র ক্ষনে ক্ষনে টের পাচ্ছে,,
নিরবতা ভেঙে শুভ্র বলে উঠলো,,
শুভ্র ঃ-- কে আপনি? কি দরকার এখানে?
অভ্রঃ-- শুভি( অনেক টা কাতর কন্ঠে)
শুভ্র ঃ-- Sorry? Who is shovi,,? I am shovro,shovro khan,,
অভ্রঃ- প্লিজ ভাই আমার ক্ষমা করে দে,,
শুভ্র ঃ-- আপনি কে? আর এখানে কেন এসেছেন,,? আর আমি ক্ষমা করার কে?
অভ্রঃ- শুভ্র,, তুই আমাকে মার কাট যা ইচ্ছে কর,,তবুও এভাবে থাকিস না,তোকে ছাড়া আমিও তো ভালো ছিলাম না,,
শুভ্র ঃ-- আমাকে একা রেখে যাবার সময় মনে ছিলো না এসব কথা,,
অভ্রঃ-- শুভ্র মানছি আমার ভুল হয়েছে প্লিজ ক্ষমা করে দে,,কথা দিচ্ছি সব আগের মতো করে দিবো,,
শুভ্র আর কিছু না বলে চেয়ার থেকে উঠে জানালার কাছে গিয়ে দারায়,,অভ্র ও যায় শুভ্রের পিছনে,,
অভ্রঃ- শুভি,,ক্ষমা করা যায় না এই হতভাগা কে?
শুভ্র আর কিছু না বলে অভ্রকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে যেন ছেরে দিলে আবার হারিয়ে যাবে,,
অভ্রের মুখে ফুটে উঠলো প্রাপ্তির হাসি,,সে জানে শুভ্র কখনোই তার সাথে রাগ করে থাকতে পারনে না,,
কিছুক্ষন,,

এভাবে জরিয়ে ধরে রাখার পর,,
অভ্রঃ- কিরে বেটা এভাবে ধরে রাখলে যে কেউ হঠাৎ ঢুকলে অন্য কিছু মনে করতে পারে,,ছার,,
শুভ্র ঃ-- এতদিনে ও তোর বাদরামি গেলো না,,শা*লা
অভ্রঃ- যাবে কিভাবে,,বানর বুড়া হলেও গাছে উঠা ভুলে না,,হা হা হা,
শুভ্র, ঃ- এই বান্দর কে তরুই ঠিক করতে পারে,,বলেই শুভ্র মুচকি হাসে,,
তরুর কথা শুনে অভ্রের মুখ কালো মেঘে ঢেকে গেলো,,
সেটা খেয়াল করে শুভ্র বলে উঠলো,,

শুভ্রঃ-- দুর শালা,,মন খারাপ করিস কেন,,সময় দে সব ঠিক হয়ে যাবে,,
অভ্রঃ- তাই যেন হয়য়,,কিছু ভেবেছিস কি করবি?
শুভ্র ঃ-- ভেবেছি তো অনেক কিছু বাট এখন কিছু ই করবো না,,সময় হলে দেখতেই পাবি,,
অভ্রঃ- ওকে,,
শুভ্র ঃ-- চল আজ সারা দিন আড্ডা দিবো,,
অভ্রঃ- শুধু তুই আর আমি নাকি,,বাকি ব্যান্ড পার্টিকেও ডাক,,
তখন ই দরজায় দাড়িয়ে কেউ বলে উঠলো,,
-- আর ডাকতে হবে না আমরা এসে গেছি,,
কারো কন্ঠ শুনতে পেয়ে শুভ্র আর অভ্র দরজার দিকে তাকালো,,
একে একে আকাশ,,আশিক,,তানভীর, দিহান প্রবেশ করলো ভেতরে,,
সব গুলা দোস্ত বলে লাফ দিয়ে অভ্রের গায়ের উপর পরলো,,
টাল সামলাতে না পেয়ে অভ্র সবগুলো কে নিয়ে সোফায় পরে গেলো,,
একেক টার ওজন তো মাশাআল্লাহ,,

অভ্রের মনে হলো কয়েকরা হাতি ওর উপর পরছে,,
তা দেখে শুভ্র তো পারে না মাটিতে গড়াগড়ি করে হাসে,,
অভ্রঃ- শা*লার শা*লা উঠ উপ্রেত্তে,, আমারে ভর্তা বানাইলাইছে,,
আকাশ ঃ-- দোস্ত তোরে কতদিন পরে দেখছি,,কতদিন তোরে চুমা দেই না,,
অভ্রঃ- ইয়াক থু,,যা সর,, চুমা লাগবো না আমার,,
অবশেষে সবগুলো অভ্রের উপর থেকে উঠে,,
অভ্রের মুখের দিকে তাকিয়ে শুভ্র সহ সবাই খিলখিল করে হেসে উঠে,,
আজ যেন মনে হচ্ছে আবার সেই বন্ধুত্ব নতুন করে জীবিত হয়েছে,,
আজ জোরছে পার্টি হবে,,,
বন্ধুদের দেখে অভ্রের উপর থেকে মনে হচ্ছে অর্ধেক ভার কমে গেলো,,
বাকি অর্ধেক কমবে যখন সে তার প্রিয়সীকে নিজের করে পাবে তখন,,
এটা আদও সম্ভব কি না তাতে অভ্র দ্বিধায় আছে তবে তাকে চেষ্টা তো করতেই হবে,,
তরু যে তার প্রান ভোমরা,,
এখন এসব চিন্তা না করে বন্ধু দের আড্ডায় সে মন দেই,,

এভাবে প্রায় অনেক দিন চলে গেলো,,,
দেখতে দেখতে আরুর পরীক্ষা শেষ,,
রেজাল্ট ও দিয়ে দেবে,,পুরা বন্ধে আরু মেডিকেল এর প্রিপারেশন নেই,,
রেজাল্টের দিন.

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com