রাজশাহী শহরের সেরা খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট গুলোর তালিকা

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত রাজশাহী শহর একটি মনোরম, শান্তিপূর্ণ ও পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে দেশজুড়ে পরিচিত। পদ্মা নদীর তীরে গড়ে ওঠা এই শহরটি শুধুমাত্র শিক্ষা ও সংস্কৃতির জন্য নয়, এর অসাধারণ পরিবেশ, ছিমছাম রাস্তা, এবং দৃষ্টিনন্দন পরিকল্পনার জন্যও সকলের মন জয় করে নিয়েছে।

রাজশাহীর পরিবেশ যেন এক প্রশান্তির ছোঁয়া দেয়। এখানে বসবাসকারীরা জানেন কীভাবে শহরের সৌন্দর্যকে অক্ষুণ্ণ রাখতে হয়। রাস্তার ধারে ছায়া ঘেরা গাছপালা, ঝকঝকে পরিচ্ছন্নতা, আর একধরনের শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে যেন প্রতিটি দিন কাটে। রাজশাহীকে বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহরগুলোর একটি হিসেবে ধরা হয়। নগর কর্তৃপক্ষ এবং সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শহরটি আজ অন্য অনেক শহরের জন্য অনুকরণীয়।

এক নজরে রাজশাহী শহরের যে বিষয়টি সবাইকে মুগ্ধ করে, তা হলো এখানকার প্রশস্ত ও পরিকল্পিত রাস্তা। যানজট বলতে গেলে একেবারেই নেই বললেই চলে। রাস্তার ধারে সারি সারি গাছ আর রাতে সড়কবাতির আলোয় ঝলমল করা শহরের রাস্তাগুলো যেন এক আধুনিক নগরীর ছবি আঁকে। শহরের মূল সড়কগুলো যেমন—বড়কুঠি, সাহেববাজার, লক্ষ্মীপুর, বোয়ালিয়া—সবগুলোই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং চলাচলের উপযোগী। এমনকি উপশহর বা আশেপাশের আবাসিক এলাকাগুলোর রাস্তার দিকেও যথেষ্ট যত্ন নেওয়া হয়।

রাজশাহীকে “শিক্ষার নগরী” বলা হলেও এখন এটিকে “পরিচ্ছন্নতার নগরী” বললেও ভুল হবে না। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ডাস্টবিন ও রিসাইক্লিং প্রক্রিয়া শহরের পরিবেশকে করে তুলেছে স্বাস্থ্যসম্মত ও বাসযোগ্য। প্রতিটি মহল্লায় রয়েছে পরিচ্ছন্নতা সচেতনতা মূলক কর্মসূচি, যা শিশু থেকে শুরু করে বড়দের মাঝেও পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করেছে।

এছাড়াও শহরের অন্যতম আকর্ষণ হল পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকা। বিকেলের সময় নদীর পাড়ে হাঁটতে হাঁটতে যে কারোর মন জুড়িয়ে যাবে। নদীর ধার ঘেঁষে তৈরি করা হয়েছে ওয়াকওয়ে, বসার স্থান এবং শিশুদের খেলার জায়গা, যা একে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এখানকার পদ্মার চরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও দর্শনার্থীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা।

শহরের আরও কিছু দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর, শহীদ মিনার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, আম চত্বর ও নানা পুরনো স্থাপত্য। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে আমের রাজ্য হিসেবে পরিচিত রাজশাহীতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে।

রাজশাহী একটি এমন শহর যেখানে আধুনিকতা ও ঐতিহ্যের এক সুন্দর মেলবন্ধন ঘটেছে। এখানে যেমন আছে উন্নত জীবনযাত্রার সুবিধা, তেমনি রয়েছে প্রকৃতির সান্নিধ্য ও শান্তির অনুভব। রাজশাহীতে এসে যে কেউই বলবে—এমন পরিচ্ছন্ন, পরিকল্পিত ও প্রাণবন্ত শহর বাংলাদেশে বিরল।

রাজশাহী বাংলাদেশের একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক শহর, যেখানে বেশ কিছু জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের খাবার উপভোগ করতে পারবেন, যা রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী, স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক খাবারের সমাহার। নিচে রাজশাহীতে সেরা রেস্টুরেন্টের তালিকা এবং তাদের বিশেষ খাবারের বিষয়ে বিস্তারিত দেওয়া হলো:

অতিথী হোটেল ও রেস্টুরেন্ট

অবস্থান: ভদ্রা বাসটার্মিনাল, রাজশাহী।

বিশেষ খাবার: এখানে সকালের খাবারের জন্য তন্দুল রুটি, শেদ্ধ রুটি, তেলছাড়া পরোটা, তেলে ভাজা পরোটা, সবজি, ডাল, গরুর কালাভুনা, খাসির ঝালফ্রাই, মুরগির গোস, ডিম পোছ/ ওমলেট ও দুপুরের খাবারের জন্য পাবেন - বাসমতি চালের ভাত, রুই মাছ, কাতলা মাছ, বোয়াল মাছ, পাবদা মাছ, ইলিশ মাছের ভাজি, সরশে ইলিশ, পিওলি মাছ, ছোট মাছ, তেহারী, কাচ্চি বিড়িয়ানী সহ নানার খবার এবং রাতের রয়েছে গরু - খাসির নিহারী সাথে তন্দুল রুটি, চিকেন গ্রিল, চিকেন চাপ সহ সব মুখোরচক খাবার।

অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য: হোটেলটি নিচতলা ও দিতীয় তলা সম্পূর্ণ শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত, এখানকার ওয়েটারদের ও মালিকের ব্যবহার অতুলনীয়। এখানে বিখ্যাত চা ও কফি পাওয়া যায়। যা আপনি একবার খেলে বার বার খেতে মন চায়।

হোটেল রহমানিয়া

অবস্থান: সাহেব বাজার (গনকপাড়া মোড়)

বিশেষ খাবার: এখানে সকালের খাবারের জন্য তন্দুল রুটি, শেদ্ধ রুটি, চাপাতি রুটি, লুচি, তেলছাড়া পরোটা, তেলে ভাজা পরোটা, সবজি, ডাল, গরুর কালাভুনা, খাসির ঝালফ্রাই, মুরগির গোস, ডিম পোছ/ ওমলেট ও দুপুরের খাবারের জন্য পাবেন - বাসমতি চালের ভাত, রুই মাছ, কাতলা মাছ, বোয়াল মাছ, পাবদা মাছ, ইলিশ মাছের ভাজি, সরশে ইলিশ, পিওলি মাছ, ছোট মাছ, তেহারী, কাচ্চি বিড়িয়ানী সহ নানার খবার এবং রাতের রয়েছে গরু - খাসির নিহারী সাথে তন্দুল রুটি, চিকেন গ্রিল, চিকেন চাপ সহ সব মুখোরচক খাবার।

অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য: হোটেলটি শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত তবে খাবারের মান খুবই ভালো তবে দাম সাধ্যের মধ্য। এখানকার চাপাতি রুটি খুবই বিখ্যাত।

হোটেল মেমরী

অবস্থান: সাহেব বাজার (জিরো পয়েন্ট এর পাশে)

বিশেষ খাবার: এখানে সকালের খাবারের জন্য তন্দুল রুটি, শেদ্ধ রুটি, লুচি, তেলছাড়া পরোটা, তেলে ভাজা পরোটা, সবজি, ডাল, গরুর কালাভুনা, খাসির ঝালফ্রাই, মুরগির গোস, ডিম পোছ/ ওমলেট ও দুপুরের খাবারের জন্য পাবেন - বাসমতি চালের ভাত, রুই মাছ, কাতলা মাছ, বোয়াল মাছ, পাবদা মাছ, ইলিশ মাছের ভাজি, সরশে ইলিশ, পিওলি মাছ, ছোট মাছ, তেহারী, কাচ্চি বিড়িয়ানী সহ নানার খবার এবং রাতের রয়েছে হালিম পাবেন সাথে তন্দুল রুটি, চিকেন গ্রিল, চিকেন চাপ সহ সব মুখোরচক খাবার।

অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য: মেমরী হোটেলে সব সময় গরম ও টাটকা খাবার পবেন। এই হোটেলটির প্রথম তলা এবং দিতীয় তলায় খাবারের ভিআইপি ব্যবস্থা আছে। এখানকার গরুর কালাভূনা খুব সুসাদু।

হোটেল বিদ্যুৎ

হোটেল বিন্দু

অবস্থান: রেলগেট রাজশাহী

বিশেষ খাবার: এখানে সকালের খাবারের জন্য তন্দুল রুটি, শেদ্ধ রুটি, তেলছাড়া পরোটা, তেলে ভাজা পরোটা, সবজি, ডাল, খাসির ঝালফ্রাই, গরুর কালা ভুনা / ঝালফ্রািই, মুরগির গোস, ডিম পোছ/ ওমলেট ও দুপুরের খাবারের জন্য পাবেন - বাসমতি চালের ভাত, রুই মাছ, কাতলা মাছ, পাঙ্গাস মাছ, ইলিশ মাছের ভাজি, সরশে ইলিশ, পিওলি মাছ, ছোট মাছ, তেহারী, কাচ্চি বিড়িয়ানী সহ নানার খবার এবং রাতের রয়েছে গরুর কালাভুনা, তন্দুল রুটি, চিকেন গ্রিল, চিকেন চাপ সহ সব মুখোরচক খাবার।

অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য: হোটেলের পরিবেশ ও  ওয়েটারদের ব্যবহার এতটাই সুন্দর আপনাকে আকৃষ্ঠ করবে।

কাবাব হাউস চাইনিজ রেস্টুরেন্ট

অবস্থান: ইউনাইটেড টাওয়ার, রানীবাজার মোড়, রাজশাহী (সারা ফ্যাশন এর উপরে)

বিশেষ খাবার:

অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য: কাবাব হাউস পুরোটাই শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত। কাবাব হাউস রেস্তোরায় বাচ্চাদের খেলা করার আলাদা জায়গা আছে। পার্টিকরার মত মাঝারি একটি হলরুম রয়েছে। অর্ডার দিলে বাংলা খাবার তৈরি করে দিয়ে থাকে মাইড্যাস রেস্টুরেন্ট।

মাই ড্যাস চাইনিজ রেস্টুরেন্ট

মাইডাস রেস্তোরাঁর মেনুতে বিভিন্ন চাইনিজ ও থাই খাবার পাওয়া যায়। কিছু জনপ্রিয় আইটেমের মধ্যে রয়েছে:​

অবস্থান: অলকার মোড়, রাজশাহী

• সুপ: হট অ্যান্ড সাওয়ার, চিকেন কর্ন, সেজওয়ান, থাই ক্লিয়ার, স্পেশাল থিক থাই, চিকেন ও প্রন ওয়ানটন নুডলস।
• পাস্তা: চিকেন, বিফ ও ভেজিটেবল ওভেন বেকড পাস্তা
• চাওমিন ও চপসুয়ি: ভেজিটেবল, চিকেন, বিফ, প্রন চাওমিন; আমেরিকান ও চাইনিজ চপসুয়ি
• চিকেন আইটেম: চিলি অনিয়ন, সেজওয়ান ফ্রাইড, থাই ফ্রাইড, স্প্রিং ফ্রাইড, ক্যাশনাটসহ চিকেন, লেমন চিকেন উইথ মাশরুম
• বিফ ও প্রন আইটেম: বিফ মাশালা, বিফ চিলি অনিয়ন, প্রন উইথ গার্লিক সস, সুইট অ্যান্ড সাওয়ার প্রন
• সিজলিং: চিকেন, বিফ, প্রন, মাটন সিজলিং
• বিরিয়ানি: চিকেন, বিফ, মাটন, হায়দ্রাবাদি বিরিয়ানি
• ফ্রাইড রাইস: ভেজিটেবল, চিকেন, বিফ, প্রন, থাই, সেজওয়ান, ইন্দোনেশিয়ান ফ্রাইড রাইস
• সেট মেনু: সুপ, ফ্রাইড রাইস, ফ্রাইড চিকেন, মেইন ডিশ ও সফট ড্রিংকসসহ বিভিন্ন সেট মেনু​

অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য: মাইড্যাস রেস্টুরেন্ট পুরোটাই শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মাইড্যার রেস্তোরায় বাচ্চাদের খেলা করার আলাদা জায়গা আছে। পার্টিকরার মত ছোট -বড় দুটি হলরুম রয়েছে। অর্ডার দিলে বাংলা খাবার তৈরি করে দিয়ে থাকে মাইড্যাস রেস্টুরেন্ট।