Breaking News

ভালোবাসা রাঙানোর ১১ রং

 
আমাদের প্রেম আর আগের মতো নেই’, ‘ও বিয়ের পরে বদলে গেছে’—এমন আক্ষেপ আমরা অনেকেই করি। বিয়ের আগের প্রেম, বিয়ের পরের সম্পর্ক নিয়ে বেশ দ্বিধা আমাদের মধ্যে ভর করে। হাজার বছরের চেনা ভালোবাসার মানুষ কখন যে দূরে চলে যায়, তা আমরা টেরই পাই না।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ও সাইকোলজিক্যাল কাউন্সিলর কাজী রুমানা হক বলেন, ‘যেকোনো সম্পর্ককে সব সময় সতেজ রাখার দিকে খেয়াল রাখতে হয়। প্রেম কিংবা ভালোবাসাকে প্রতিদিনই রাঙানো শেখা উচিত আমাদের। সম্পর্ক বিষয়টা আসলে সবুজ গাছের মতো। আপনি গাছের যত্ন করলে যেমন সজীব-সতেজ-প্রফুল্ল গাছ পাবেন, তেমন ভালোবাসাকেও যত্ন করতে হয়। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কাজী রুমানা হক জানালেন জীবনে ভালোবাসাকে রাঙানোর ১১টি রং বা উপায়।
আত্মবিশ্বাসী ও ধীরস্থির হোন
আপনার ভালোবাসার সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হোন। হুট করে সম্পর্ক নিয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেবেন না। আপনার ইতিবাচক মনোভাব আত্মবিশ্বাসকে প্রকাশ করে। নিজের ভালোবাসার মানুষের কাছে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে তুলে ধরুন। আত্মবিশ্বাসী মানুষ কখনোই হুজুগে সিদ্ধান্ত নেয় না।
আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন
ভালোবাসাতেও আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন। সাধারণ মানুষ হিসেবে রাগ, ক্রোধ কিংবা হিংসা আমাদের মধ্যে থাকবেই, যতটা সম্ভব নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে ইতিবাচক উপায়ে পারিপার্শ্বিকতার ওপর নিজের প্রভাব তৈরি করুন। ভালোবাসার মানুষটির ওপর রাগ দেখানো কিংবা মানসিক নিপীড়ন আসলে আমাদের ভালোবাসার দুর্বলতা প্রকাশ করে।
ভালোবাসার দৈনন্দিন বহিঃপ্রকাশ
বিশেষ কোনো দিনকেন্দ্রিক ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনই ভালোবাসা প্রকাশ করার দিকে গুরুত্ব দিন। ভালোবাসার মানুষকে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছে দেওয়া কিংবা অফিস শেষে একসঙ্গে বাড়ি ফেরার মতো অভ্যাস করুন।
পরিবার ও সামাজিকতাকে সম্মান দিন
ে। তাঁর মা-বাবা, আত্মীয়স্বজন আর সামাজিক অবস্থানকে সম্মান দিতে শিখুন। ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ভালোবাসার মানুষটিকেও আপনার পরিবার ও সামাজিক অবস্থানকে সম্মান করতে উৎসাহিত করবে।
মূল্যবোধের গুরুত্ব
ভালোবাসার মানুষের ব্যক্তিগত মূল্যবোধগুলো সম্পর্কে জানুন, সেই মূল্যবোধকে সম্মান দিন। রূপক অর্থে বলা যায়, অর্ধেক পানিভর্তি গ্লাসকে তিনি যেভাবে দেখেন, আপনি সেভাবে না–ও দেখতে পারেন। তিনি যেভাবে দেখেন তা জানুন, সেই মতামতকে সম্মান দিন।
অবসর উপভোগ করুন
অফিস শেষে বাড়ি ফিরেই টেলিভিশনের সামনে কিংবা বন্ধুবান্ধবের আড্ডায় নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন না। প্রতিদিনই নিজের কাজের পরের সময়টুকু ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে কাটানো শুরু করুন। একসঙ্গে বাগান করা কিংবা ঘরের কোনো কাজে দুজন দুজনকে সময় দিন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলো শুয়ে-বসে-ঘুমিয়ে কাটানোর অভ্যাস থেকে নিজেকে বের করে আনুন। একসঙ্গে দুজনে সকালে কিংবা বিকেলে পার্কে হাঁটার অভ্যাস করতে পারেন।
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে জোর দিন
অসুখ হলেই যে ওষুধ আর হাসপাতালে ছুটতে হবে, এমন মানসিকতা দূর করুন। দৈনন্দিন সুস্থতা নিশ্চিত করুন। ভালোবাসার মানুষ ও নিজের জন্য প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবার ও ব্যায়ামের দিকে গুরুত্ব দিন। বাড়িতে বসেই ব্যায়াম বা ইয়োগার চর্চা করুন। আপনার অগোচরেই হয়তো তাঁর মনের অসুখটি তীব্র হচ্ছে, তা হয়তো আপনি জানেনই না। ভালোবাসার মানুষটির মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখুন প্রতিনিয়ত।
সহযোগী হোন
বাড়ির কাজে সহযোগী হোন। সপ্তাহে এক দিন বাজার করা কিংবা মাসের প্রথমে হাতে বেতনের টাকা তুলে দেওয়ার সেকেলে অভ্যাস পরিহার করুন। ভালোবাসার মানুষটির সহযোগী হওয়ার চেষ্টা করুন।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা ভালোবাসার মানুষটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভুলে যাই। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কী আছে ভেবে তাঁকে খাটো করি আমরা। এ ধরনের নেতিবাচক অভ্যাস এড়িয়ে চলুন। প্রতিদিন তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। ধন্যবাদ মুখে প্রকাশ করতে শিখুন।
শুনুন
আপনার ভালোবাসার মানুষটি কী বলতে চায়, আর কী বলতে চায় না তা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তাঁর নীরবতার মধ্যেও হয়তো কোনো কিছুর আভাস আছে, তা বোঝার চেষ্টা করুন। প্রকাশিত কথা আর অপ্রকাশিত আবেগ উপলব্ধি করা শিখুন।
ইতিবাচক মতামত ও সমালোচনা
ভালোবাসার মানুষটির যেকোনো কাজেই ইতিবাচক মতামত দেওয়ার চর্চা করুন। সমালোচনা করার ক্ষেত্রে ইতিবাচকভাবে ভুলত্রুটি-সংকটগুলো বুঝিয়ে বলুন। ভালোবাসার মানুষটির ভুল-ত্রুটি নিয়ে কখনোই হাসি–তামাশা বা অন্য কারও সঙ্গে হাসাহাসি করবেন না।
গ্রন্থনা: জাহিদ হোসাইন খান

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com