ম্যাডাম বউ | Writer:- Rabiul islam Rabi | ২য় পর্ব

প্রিন্সিপাল স্যার মিম ম্যাডাম কে পরিচয় করাইয়া দিয়ে চলে গেলেন।রবি থ
মেরে বসে আছে।ভাবতেছে,সে শেষ পর্যন্ত ম্যাডাম এর প্রেমে পড়ল।মিম ম্যাডাম
কে মোটেও ম্যাডাম এর মত লাগে না।দেখলে মন হয় কলেজে পড়ে।চেহারায় মায়াবী
ভাব আছে।দেখলে যে কেউ প্রেমে পড়ে যাবে।রবি ও পড়ছে।ম্যাডাম হোক আর যাই হোক
প্রেম রবি এর সাথেই করবে।
ম্যাডাম একে একে সবার পরিচয় নিচ্ছেন।সবার শেষে রবির পরিচয় দেওয়ার পালা।কিন্তু রবি বসেই আছে।
-এই ছেলে তুমি পরিচয় দিচ্ছ না কেনো??
-আমিতো তখন পরিচয় দিলাম।
-আচ্ছা বেয়াদব ছেলে তে তুমি।তখনও বেয়াদবি করছো,এখনও করতেছো।
-জ্বী
-আবার স্বীকার করতেছো???
-যা সত্য তা স্বীকার করতে রবির লজ্জাবোধ করে না।আর লজ্জা মেয়েদের ভুষন,ছেলেরা,কেন লজ্জা পাবে???
-বসো।নেক্সট টাইম বেয়াদবি করলে প্রিন্সিপাল এর কাছে নালিশ করব।
রবির বেয়াদবি দেখে মিমের রাগ হলো।প্রথম ক্লাস তাই কিছু বলল না।রবি পুরাটা
ক্লাস ম্যাডামের দিকে তাকাইয়া ছিল।একটা মানুষ ক্যামনে এত সুন্দর হয়।
ক্লাশ শেষে রবি কাম্পাসে একা একা বসে আছে।এমন সময় সাব্বির আসল।
-মাম্মা,শেষ পর্যন্ত ম্যাডাম এর প্রেমে পড়লি।হি হি হি হি
-শালা,হাসিস না।দাত ভাইংঙা দিমু।ম্যাডাম হোক আর যাই হোক,প্রেম আমি করমুই।
-মাম্মা,যদি বিবাহিত হয়??
-শালা,এইদিকে আয়
-নাহ,গেলেই তুমি থাপ্রাইবা।
-ওই ম্যাডাম রে দেখলে কি বিবাহিত মনে হয়??
-না,তা মনে হইবো ক্যান??বুঝোস না ম্যাডাম বয়স ওতো বেশি।
-তোরে কইছে বয়স বেশি??
-আচ্ছা,মানলাম,ম্যাডাম অবিবাহিত।কিন্তু কারো সাথে যদি রিলেশন এ থাকে??
-ওর পা ভাইংগা হাতে ধরাইয়া দিমু??
-কার??ম্যাডামের??
-ম্যাডামের হইবো ক্যান??যার সাথে রিলেশন করবো তার।
-হুমমম,বুঝলাম।
-বাসায় যাব,যাবি তুই??
-নাহ,জুনাইদ আসুক,ওর সাথে যাব।
-আচ্ছা আমি গেলাম।
বাসায় এসে রবির কিছু ভাললাগতে ছিলো না।সারারত ঘুমাইতে পারল না।ভোরে
ঘুমাইয়া পড়ল।উঠতে উঠতে সকাল ৯ টা বেজে গেল।এই রে ১০ টা থেকে বাংলা ক্লাস
শুরু।রবি তারাতারি রেডি হয়ে কলেজের দিকে রওনা হল।ক্লাসে আসতে আসতে ১০ টা
০৫ বেজে গেল।
ক্লাসে ঢুকতেই রবি অবাক।ম্যাডাম আজকে শাড়ি পড়ে
এসেছে।খুব মানিয়েছে শাড়িটাতে।সিটে বসে রবি একদৃষ্টিতে ম্যাডামের দিকে
তাকাইয়া আছে।
-এই ছেলে,এই
ম্যাডাম কতক্ষণ ধরে রবি কে ডাকতে ছিল রবি খেয়াল ই করে নি।শেষে রবির কাছে এসে যখন ডাক দিল তখন টের পেল।
-জ্বী
-কি সমস্যা??
কোন সমস্যা নাই তো।
-তাহলে এভাবে তাকাইয়া আছো কেনো??
-না মানে,আপনাকে সুন্দর লাগতেছে তাই।
-এই যে,কি বলতেছো এইসব??বইয়ের দিকে মনযোগ দাও।
-একটা কথা
-হুমম,বলো
-আমি আপনাকে ভালবাসি।
রবির এর কথা শুনে পুরা ক্লাস রবি আর ম্যাডামের দিকে তাকাইয়া আছে।রবি ভুলেই গিয়েছিল সে ক্লাসে আছে।
-খুব বাড় বেড়েছো দেখছি।কালকের বিহেভ কিছু বলিনি দেখে আজ এতো সাহস পেয়েছো।দাড়াও,তোমাকে কলেজ থেকে বের করার ব্যাবস্হা করতেছি।
ম্যাডাম কথা গুলো বলে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে গেলেন।এইসব বেয়াদব ছেলেদের
কলেজে রাখার মানেই হয় না।প্রিন্সিপাল স্যার কে বলে কলেজ থেকে বের করে দিতে
হবে।প্রিন্সিপাল স্যারকে সব কথা বলল মিম স্যার সব শুনে বললেন।
– তুমি চাচ্ছো আমি এখন রবিকে কলেজ থেকে বের করে দেই???
-জ্বী স্যার,এইসব ছেলেকে কলেজে রাখলে কলেজের মান সন্মান নষ্ট হবে।আপনি আজই বের করে দিন।
-কিন্তু তাতো সম্ভব না।
-কেনো স্যার??
-রবির বাবা এই কলেজের ম্যানেজিং কমিটির প্রেসিডেন্ট।
-এর জন্যই ছেলেটা এত্ত বেয়াদব।তাই বলে স্যার আমি ওর বেয়াদবি সয়ে যাব??
-আচ্ছা,তুমি এখন যাও।আমি ওর বাবার সাথে কথা বলব।
প্রিন্সিপাল স্যারের রুম থেকে বের হতেই রবির সাথে ম্যাডামের দেখা।ম্যাডাম
কে দেখে রবি মুচকি হাসি দিল।তা দেখে ম্যাডামের খুব রাগ হলো।
প্রতিদিন
রবি ম্যাডামকে জ্বালায়।নানান ভাবে তাকে বিরক্ত করতে থাকে।এভাবেই কেটে গেল
বেশ কিছুদিন।ইদানিং রবি মিম কে বেশিই বিরক্ত করতেছে।কলেজের বাইরেও মিম কে
ফলো করে।কলেজের ছাত্রছাত্রীরা বাইরে দেখা হলে ভাবি ডাকে।মিম সহ্য করতে পারে
না।ছোটবেলা থেকে তার শিক্ষকতা করার সপ্ন ছিলো মিমের।সপ্ন টা পুরন ও
হইছে।কিন্তু রবিরএর কারনে সেই স্বপ্ন টা ভেংগে যাবে।মিমকলেজ ছেড়ে দেয়ার
প্লান করল।
একদিন কলেজ ছুটির সময় মিমকে একটা লেটার দিল রবি
-এটা কি??
-লেটার।
-কিসের লেটার??
-লাভ লেটার।
-কেনো??
-কারন,আমি আপনাকে ভালবাসি।
মিম এবার আর রাগ কন্ট্রোল করতে পারল না।কষিয়ে একটা থাপ্পর মারল রবি কে।
-আর কত জ্বালাবে আমাকে??তোমার কারনে আমার সপ্ন ভেংগে যাচ্ছে।ছোটবেলায়
বাবাকে হারিয়েছি।মা অনেক কষ্ট পড়াশোনা করিয়েছে।মা কে আর কষ্ট দিতে চাই
না তাই চাকরী টা নিয়েছিলাম।কিন্তু তোমার কারনে চাকরী টা ছেড়ে দিতে হচ্ছে।
আমি কলেজ ছেড়ে দিচ্ছি।
কথাগুলো বলে মিম চলে গেল।রবি সেখানেই মাথা
নিচু করে দাড়িয়ে আছি।।তার চোখ দিয়ে পানি পরতেছে।নাহ,ম্যাম কে আর
ডিস্টার্ব করবে না ম্যাডাম যখন তাকে পছন্দ করে না তখন আর কখনো তার সামনে
আসবে না।বাবাকে বল কলেজ টা ট্রান্সফার করে দুরে কোথাও চলে যাবে।