Breaking News

EX গার্লফেন্ড যখন বস | পর্ব-০৩

আমি অফিস থেকে হাসপাতালে চলে গেলাম। যাবার সময় হোটেল থেকে কিছু খাবার কিনে নিলাম দাদুর জন্য।
হাসপাতালে গিয়ে দেখি দাদু বসে আছে।
আমিঃতুমি বসে আছো কেন? তুমি না এখন অসুস্থ?
দাদুভাইঃঅনেকক্ষণ ত শুয়ে ছিলাম। আর শুয়ে থাকতে ভাল লাগছে না।তাই একটু বসেছি।
আমিঃএখন একটু খেয়ে নাও ত।
দাদুভাইঃকত খাব?
আমিঃনা খেলে ত অসুস্থ হয়ে যাবা।
দাদুভাইঃআমি আর বাঁচবই বা কদিন।
আমিঃদাদু সব সময় এরকম কথা বলো না ত। তুমি চলে গেলে আমার কি হবে?
দাদুভাইঃআচ্ছা আচ্ছা আর বলব না।
আমিঃনাও হা করো।
দাদুভাই কে নিজ হাতে খাইয়ে দিচ্ছি।
দাদু ছাড়া ত আর এ পৃখিবীতে আমাকে কেউ ভালবাসে না।
তাকে যদি না ভালবাসি তাহলে কাকে বাসব?
যে আমার টাকার কারনে আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে তাকে?
সিমির কথা মনে পড়লেই হাসি পাচ্ছে।
৪ বছর নিঁখুতভাবে অভিনয় করে গেল আর আমি টেরই পেলাম না।
অস্কার দেওয়া উচিত সিমিকে।
দাদুভাইঃসত্যি করে একটা কথা বলবি দাদুভাই?
আমিঃতোমাকে কোনদিন মিথ্যে বলেছি?
দাদুভাইঃনা।
আমিঃতাহলে?
দাদুভাইঃএমনি জিগ্যেস করলাম আরকি।
আমিঃকরো কি প্রশ্ন?
দাদুভাইঃআমার অপারেশন করতে কত টাকা লেগেছে?
আমিঃ….
দাদুভাইঃকি হলো বল।
আমিঃ২ লক্ষ টাকা।
দাদুভাইঃএত টাকা কোথাই পেলি?
আমিঃএক ফ্রেন্ড দিয়েছে।
দাদুভাইঃদিয়েছে না চেয়েছিস?
আমিঃএত প্রশ্ন কেন? চুপচাপ খাও ত।
দাদুভাইঃকথা ঘুরাতে চেষ্টা করিস না। আমার মাথায় হাত দিয়ে বল এত টাকা কোথাই পেয়েছিস?
আমিঃবন্ধুর কাছ থেকে ধার নিয়েছি বললাম ত। নাও পানি খাও।
দাদুভাইঃআমি তোকে অনেক কষ্ট দিচ্ছি তাই না রে দাদুভাই?
আমিঃতুমি ছাড়া আমার আর কে আছে? তোমার জন্য কষ্ট না করলে কার জন্য করব? আর তোমার চোখে পানি কেন?
দাদুভাইঃএমনি চলে এসেছে।
দাদুর সাথে কথা বলছিলাম আর সে সময় ডাক্তার এলো।
ডঃএখন কেমন লাগছে আপনার?
দাদুঃভাল।
আমিঃড. দাদুকে কবে রিলিজ দিবেন?
ডঃকালকে নিয়ে যেতে পারেন।
আমিঃথ্যাংকস।
ডঃএটা ত আমাদের দায়িত্ব।
আমি দুপুরে বাসায় গিয়ে গোসল করে নামাজ পড়ে হাসপাতালে গেলাম।
দাদুকে খাবার পর খেলাম।
কোনরকমভাবে রাতটা পার করলাম।
সকালে দাদুকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
টিওশনি গুলো ছেড়ে দিয়েছি।
অফিস করলে টিওশনি করাবার টাইম নেই।
টিওশনি করে ১৫০০০ হাজার টাকা পেতাম।
অফিসে ২০০০০ টাকা মাইনে দিবে।
আমার বেতন ৩০০০০।
তবে ধারের টাকা পরিশোধ করার জন্য সিমি ১০০০০ টাকা কেটে রেখে দিবে।
দাদুর জন্য কিছু মেডিসিন লাগবে।
তাই বাজারের দিকে গেলাম।
বাজার করাও হবে আর সাথে দাদুর মেডিসিন কিনা হয়ে যাবে।
বাজার থেকে বাসায় আসছিলাম।
দুর থেকে দেখতে পেলাম একটা মেয়ে রিক্সা থেকে নেমে দাঁড়িয়ে আছে।
সে তার ব্যাগ নাড়াচাড়া করছে।
হয়ত ভাংতি নেয়।
মেয়েটা রিক্সাুওয়ালাকে টাকা দিল ঠিকই।
তবে তার ব্যাগ থেকে কি যেন পড়ে গেল।
মেয়েটা হয়ত বুঝতে পারেনি।
মেয়েটা হেঁটে চলে যেতে থাকলো ।
আমি সেখানে গিয়ে দেখি একটা পার্স।
মেয়েরা যেটাতে টাকা রাখে।
আমি পার্সটা না খুলে মেয়েটা যেদিকে গেছে সেদিক গেলাম ।
মেয়েটার সামনে দৌঁড়ে গেলাম।
আমিঃএই যে আপু।
মেয়েটাঃজ্বি বলেন।
আমিঃএটা আপনার ব্যাগ থেকে পড়ে গিয়েছিল গলির সামনে।
মেয়েটাঃথ্যাংকইউ সো মাচ ।এটাতে আমার অনেক ইমপরটেন্ট ডকুমেন্টস আর টাকা ছিল।
আমিঃওয়েলকাম। বাই।
মেয়েটাঃএই দাঁড়ান।
আমিঃজ্বি বলেন।
মেয়েটাঃআপনার নাম কি?
আমিঃরিফাত।
মেয়েটাঃআমি বৃষ্টি।
আমিঃবাই।
বৃষ্টিঃ আরে আপনি ত আজব মানুষ!
আমিঃকেন?
বৃষ্টিঃ আমার নাম জিগ্যেস করলেন না! আর এত তাড়া কিসের?
আমিঃমেয়েদের থেকে দুরে থাকাই ভাল। আর বাসায় অসুস্থ দাদু রয়েছে।
বৃষ্টিঃ নাম্বার অথবা ফেসবুক আইডি টা ত দিয়ে যান। পরে দেখা করতে পারব তাহলে।
আমিঃভাগ্যে থাকলে দেখা হবে।
এসব বলে বাসায় চলে এলাম।
মেয়েদের ওপর থেকে বিশ্বাস উঠে গেছে।
বাসায় এসে রান্না করে দাদুকে খাবার দিলাম।
এভাবে ১ তারিখ চলে এলো।
আজ সকাল সকাল উঠে ফ্রেশ হয়ে রান্না করে দাদুর জন্য সবকিছু রেডি করে রাখলাম।
কিছু মুখে দিয়ে অফিসে যাবার জন্য বের হলাম।
বাসে যাব সে টাকাও নেই।
পকেটে মাএ ৫ টাকা আছে।
সব টাকা বাজার করাতে আর ঔষুধ কিনতে গিয়ে শেষ।
এখন ২ কি.মি. হেঁটে যেতে হবে।
হাটতে লাগলাম।
গরমে ঘেমে গোসল হয়ে গেছে প্রায়।
পিছন থেকে কে যেন আমার নাম ধরে ডাক দিচ্ছে।
ঘুরে দেখি বৃষ্টি রিক্সাথেকে ডাকছে।
বৃষ্টিঃকেমন আছেন?
আমিঃভাল।আপনি?
বৃষ্টিঃভাল।কোথাই যাচ্ছেন?
আমিঃঅফিসে।
বৃষ্টি ঃকোন অফিসে চাকরি করেন আপনি?
আমিঃ….অফিসে।
বৃষ্টিঃ আমিও ত এই অফিসে চাকরি করি।
আমিঃভাল।এখন যাই তাহলে আমার দেরি হয়ে যাবে।
বৃষ্টিঃ একই জায়গায় যেহেতু যাচ্ছি তাহলে একসাথে যায়।আসুন রিক্স্াতে।
অনেক করে বললো তাই যেতে রাজি হলাম।
রিক্সাতে বৃষ্টি অনেক কিছু জিগ্যেস করলো।
অফিসের সামনে রিক্সা দাঁড় করাল।
কিন্তু আমার মনটা খারাপ হয়ে গেল।
বৃষ্টিঃ মুখ এত কাল কেন করে আছেন?
আমিঃআমার কাছে ভাড়া নেই।মাএ ৫ টাকা আছে। তাই হেঁটে আসছিলাম। নিন এই ৫ টাকাটা রাখুন। বাকি টাকা পরে সোজ করে দিব।
বৃষ্টিঃ আমাকে বন্ধু ভাবেন?
আমিঃজানিনা।
বৃষ্টিঃ আজ থেকে ভাববেন।
বৃষ্টি ভাড়া দিয়ে দিল।
বৃষ্টিঃ একটু দাঁড়ান।
আমিঃবলেন।
বৃষ্টিঃ পুরো ত ঘেমে গেছেন।
আমিঃহুম।
বৃষ্টিঃ কাছে আসেন দেখি।
বৃষ্টি আমার মুখটা তার রুমাল দিয়ে মুছে দিল।
বৃষ্টিঃ এবার চলুন।
অফিসে ঢুকতে যাব তখন কি মনে করে যেন উপরে তাকালাম।
তাকিয়ে দেখি সিমি আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তবে সিমির পাশে তাকিয়ে আমি দেখলাম যে
চলবে…

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com