Breaking News

আপু যখন বউ । পর্ব - ১২



তারপর পিছন থেকে গোলাপ ফুলটা বেড় করে হাটু গেড়ে বসে ওনার সামনে তুলে ধরলাম!

আমিঃ আমি আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি! আপনি প্লিজ না করবেন না! আসলে আপনাকে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছি! তাই প্লিজ আমাকে ফিরিয়ে দিবেন না!
জান্নাত শুধু হা হয়ে তাকিয়ে আমাকে দেখতেছে! কোনোকিছু বলতেছে না!
আমিঃ কি হলো কিছু বলেন না কেনো!
ডাক দেওয়াই ঘুড় কাটলো ওনার! তারপর বললো!
জান্নাতঃ ঐ তোর মাথা ঠিক আছে কি বলছিস তুই?
আমিঃ আমার মাথা একদম ঠিক আছে!
জান্নাতঃ তাহলে এসব কি বলছিস! আর ৫ মাস আছি আমি তোর সাথে! এখন এসব বলে আমাকে রাগাস না!
আমিঃ আপনি এভাবে বইলেন না প্লিজ! আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না!
জান্নাতঃ তাহলে গিয়ে মর! আর যদি কখনো এরকম ভালোবাসি কথাটা বলিস তাহলে মেরে তোর হাত-পা ভেঙ্গে দিবো বলে দিলাম!

বলেই পাশ কাটিয়ে চলে গেলো!
আর আমি দাড়িয়ে মনে-মনে হাসতে লাগলাম! যাক প্লেনটা কাজে দিয়েছে! তারপর আবার মন খারাপের ভান ধরে রুমে চলে আসলাম!
রাতে কেউ কারো সাথে কথা বললাম না! খাওয়া-দাওয়া করে যে যার-যার মতো শুয়ে পড়লাম!
পরেরদিন ভার্সিটিতে যাওয়ার পর সবাই মিলে অনুষ্ঠান এর দিন তারিখ ঠিক করলাম! ঠিক ১৫ দিন পর অনুষ্ঠান টা অনুষ্ঠিত হবে!
এভাবে আরো সাতদিন চলে গেলো! জান্নাতের সাথে এখন আর কথা বলি না! ওনি কেমন যেনো চুপচাপ হয়ে থাকেন সারাদিন! তাই আমিও কিছু বলি না!
ভার্সিটিতে গিয়ে বললাম আজ থেকে আমাদের প্লেনটা শুরু করবো! বলেই বাসায় চলে আসলাম!
এসে দেখি জান্নাত আপু ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখতেছেন! তাই আমি ফ্রেশ হয়ে এসে ওনার পাশের সোফায় বসে টিভি দেখতে লাগলাম!

মোবাইল থেকে মারিয়াকে একটা কল দেওয়ার জন্য মেসেজ দিয়ে! মোবাইলটা রেখে আমি ছাদে চলে গেলাম!
গিয়ে মনের আনন্দে গান গাইতে লাগলাম
একটু পরে বাসায় গেলেই শুরু হবে যতসব কাহিনী!
প্রায় ১৫ মিনিট পর ছাদ থেকে বাসায় গেলাম! গিয়ে দেখি জান্নাত আপুর রেগে আগুন হয়ে আছে! আমি গিয়ে কিছু না বুঝার ভান ধরে আবার টিভি দেখতে লাগলাম!
কিছুক্ষণ রাগি চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে জান্নাত আপু বলে উঠলো!
জান্নাতঃ হুসাইন মারিয়া কি আমাদের ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে!
অবাক হওয়ার ভান ধরে ওনার দিকে তাকালাম! তারপর মাথা নেড়ে হ্যা বললাম!
জান্নাতঃ তোর আর মারিয়ার মাঝে কি চলতেছে!

আমিঃ কি আবার চলবে! মারিয়া আর আমার মাঝে আগে যেটা ছিলো এখনো সেটাই চলছে!
জান্নাতঃ মানে? (জান্নাতের রাগটা বাড়তে লাগলো)
আমিঃ মানেটা জানেন না আপনি?
জান্নাতঃ তুই মারিয়ার নাম্বার কি দিয়ে সেইভ করেছিস!
আমিঃ যেটা মন চায় সেটা দিয়ে!” আর আপনি আমার ফোন ধরলেন কেনো!
জান্নাতঃ মোবাইল রেখে হারিয়ে গেছিলি! আর এদিকে তোর মোবাইল বাজতেছিলো তাই রিসিভ করতে হয়েছিলো! আর আমি যদি কলটা না ধরতাম তাহলে তো জানতামই না যে তুই আমার পিছনে কি করছিস!
আমিঃ আপনার পিছনে করতে যাবো কেনো! আর এমনিতেও আপনার পিছনে করতে হবে কেনো? আমার কি কোনো মতামত নেই নাকি!
জান্নাতঃ আমি এতকিছু বুঝি না! আমার সাথে যতদিন আছিস ততদিন অন্য কারো সাথে কথাও বলতে পারবি না!

আমিঃ আপনার সাথে আছি মানে?
জান্নাতঃএই যে আমরা একসাথে থাকতেছি।
আমিঃ আপনি এটাকে একসাথে থাকা বলেন! আরে এর চেয়ে তো ভালো গরুর সাথে থাকলেও! কমপক্ষে এতটুকুও হলেও ভালোবাসতো আমাকে!
জান্নাতঃ দেখ তুই কিন্তু তোর সীমা অতিক্রম করতেছিস!
আমিঃ সীমা আমি না আপনি অতিক্রম করতেছেন! কারণ এই কয়েকটা মাসে কম জ্বালান নি আমাকে! অনেক সহ্য করেছি আর না! এখন আপনি আপনার মতো থাকেন আমি আমার মতো থাকি!
জান্নাতঃ তুই কি বলতে চাইছিস!
আমিঃ মানে আপনিও আপনার একটা কাউকে খুজে নেন যে আপনার এসব জ্বালা সহ্য করবে! আমি আমার ভালোবাসার মানুষ খুজে নিয়েছি!

জান্নাতঃ তোর ভালোবাসার মানুষ মানে? তুই না আামকে ভালোবাসতি! (জান্নাত অবাক হয়ে বললো)
আমিঃ হুম বাসতাম! কিন্তু আপনি তো মুখের উপর না করে দিয়েছেন! তাই আপনাকে আর জুড় করি নি! মারিয়া এখনো আমাকে ভালোবাসে তাই আর তাকে ফিরিয়ে দেই নি!
জান্নাতঃ ওহহ তুই কি চাস আমি আম্মুকে উল্টা-পাল্টা বানিয়ে বলি! তারপর ওনি এসে তোকে সোজা করুক!
আমিঃ আম্মুর ভয়টা দেখানো বন্ধ করুন প্লিজ!” কারণ এই কয়েকমাসে আপনি আমার সাথে কি আচরণ করেছেন! বা কি রকম আমাদের সম্পর্ক তার কয়েকটা ভিডিও আছে আমার কাছে! তাই এসব ফালতু ভয় দেখাবেন না! কারণ আমি যদি ভিডিওগুলো আম্মুকে দেখাই তখন আপনার অবস্থা কি হবে বুঝতে পারছেন!
জান্নাত আর কোনোকিছু না বলে একদম চুপ হয়ে গেলো! আর কিছু বলার নেই ওনার এটা ভালো করে বুঝতে পেরেছি!

আমিঃ দেখুন আপনি এখন আপনার মতো থাকুন আর আমাকে আমার মতো থাকতে দিন!
জান্নাত আর কিছু না বলে সোজা নিজের রুমে চলে গেলো! আমিও আর কিছু না বলে নিজের মতো চলে আসলাম আমার রুমে!
রাতে আমি খাওয়া-দাওয়া করে রুমে চলে গেলাম! তারপর হয়তো জান্নাত খেয়েছে!
সকালে ঘুম ভেঙ্গে তাকিয়ে দেখি ৯:০০ টা বেজে গেছে! তাই উঠে ফ্রেশ হয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে দেখি জান্নাত সোফায় বসে টিভি দেখতেছে!

আমি কিছু না বলে না খেয়েই ভার্সিটিতে চলে গেলাম!
আরো দুদিন চলে গেলো আমাদের কথা না বলে! জান্নাত কি জেনো সারাদিন ভাবে তাই আমিও আর কথা বলি না ওনার সাথে তবে এভাবে যে বেশিদিন যাবে না এটা ভালোভাবে বুঝতেছি!
বিকেলে ভার্সিটি থেকে এসে হালকা ঘুমাবো বলে ঠিক করলাম! যা ভাবা তাই কাজ! তবে ঘুমটা বেশিক্ষণের জন্য হয় নি কারো ডাকে ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো!
তাকিয়ে দেখি জান্নাত দাড়িয়ে আছে চোখে হালকা পানি নিয়ে! তাই উঠে বসলাম শুয়া থেকে!
জান্নাতঃ এখনি ছাদে আয় তোর সাথে কথা আছে আমার!
বলেই সোজা চলে গেলো! আমি কিছু বলার অপেক্ষাও করলো না!
উঠে ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম ছাদে! গিয়ে দেখি জান্নাত এক কোণায় দাড়িয়ে আছে! তাই ওর কাছে গেলাম!
আমিঃ কি বলবেন বলেন! (একটু রাগ দেখিয়েই বললাম)
জান্নাতঃ তুই এভাবে কথা বলতেছিস কেন? (জান্নাত মায়া ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো)
আমিঃ সরি,ঘুম থেকে উঠে এসেছি তো তাই! বলেন কি বলবেন!
জান্নাতঃ তুই আমাকে কয়েকদিন আগে বলেছিলি না আমাকে ভালোবাসিস!
আমিঃ হুম!

জান্নাতঃ আমি তো তোকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম তাই না!
আমিঃ হুম! কিন্তু এখন এসব বলতেছেন কেনো!
জান্নাতঃ আজকে যদি বলি আমি তোকে স্ত্রীর অধিকার দিতে চাই!
জান্নাতের কথা শুনে হা হয়ে গেলাম! তবে এটা যে হবার তা আগেই আন্তাজ করতে পেরেছিলাম! কিন্তু কি বলবো বুঝতে পারতেছি না!
জান্নাতঃ কিরে কিছু বলছিস না কেনো?
.আমিঃ সরি! আসলে আমি এখন আর আপনাকে ভালোবাসি না! আর মারিয়াকে আমি কথা দিয়েছি যে ওকে আমি বিয়ে করবো! তাই প্লিজ মারিয়া থাকতে আমি আর কাউকে নিয়ে ভাবতে চাই না!
জান্নাতঃ কেনো আমি কি মারিয়ার চেয়ে সুন্দর না!
আমিঃ আমি তা বলি নি! আসলে মারিয়া আমাকে অনেক ভালোবাসে! আর এমনিতেও আমি ওর মন একবার ভেঙ্গেছি! আর মন ভাঙ্গতে চাই না!

জান্নাতঃ আমি মারিয়াকে বুঝিয়ে বলবো! তাও তুই আমাকে ফিরিয়ে দিস না প্লিজ!
আমিঃ সরি আমি পারবো না! (বলেই ওনার দিকে তাকালাম)
জান্নাতঃ দেখ বাড়েবাড়ে একটা কথা বলতে ভালো লাগতেছে না! তাই যা বলছি তা মেনে নে নাহলে আমিই কিছু একটা করবো বলে দিলাম! (জান্নাত হালকা রাগ দেখিয়ে বললো)
আমিঃ আপনি যা পারেন করেন! (বলেই ওনাকে পাশ কাটিয়ে চলে আসলাম)
নিচে এসে পড়তে বসে গেলাম! তারপর খাওয়া-দাওয়া করে শুয়ে পড়লাম! মনে মনে ভাবতে লাগলাম যে এবার থেকে বুঝবে জান্নাত আমাকে জ্বালানোর মাশুলটা কিভাবে নেই আমি! এসব ভাবতে-ভাবতে কখন যে গুমিয়ে গেলাম তা বলতে পারি না!

ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে গিয়ে দেখি জান্নাত বসে আছে! চোখগুলো লাল হয়ে আছে আর চোখের নিচে হালকা কালো হয়ে আছে! বুঝতে বাকি রইলো না সারা রাত সজাক হয়ে কান্না করেছে হয়তো!
জান্নাতের দিকে খেয়াল না করে আমি চলে গেলাম ভার্সিটিতে! তারপর সবাইকে কালকের ঘটনাটা বললাম! তারপর ক্লাস শেষ করে সবার সাথে আড্ডা দিতে-দিতে লেইট হয়ে গেলো! তাই লেইট করেই বাসায় চলে আসলাম!

ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি জান্নাত গল্পের বই পড়তেছে! আমি এসে ওনার পাশের সোফায় বসে গেলাম!
এখনো চোখগুলো ফোলে আছে! আর কালো দাগগুলো স্পষ্ট হচ্ছে! হঠ্যাৎ জান্নাত বলে উঠলো!
জান্নাতঃ কিরে এত দেরি হলো যে সারাদিন কোথায় ছিলি!
আমিঃ ক্লাস শেষ করে! মারিুাকে নিয়ে একটু ঘুরতে গিয়েছিলাম! তাই আসতে দেরি হয়ে গিয়েছিলো! (জান্নাত রাগাতে বললাম)

জান্নাত শান্ত মুখটা নিমিষেই লাল হয়ে গেলো!
জান্নাতঃ ঘরে বউ থাকতে তুই বাহিরের মেয়ে নিয়ে ঘুড়তে যাস লজ্জা করে না!
আমিঃ সরি আপনি আমার বউ না! আমাদের কন্ট্রাক্ট এ বিয়ে হয়েছে! তাই এসব ফাউল কথা বলবেন না!
জান্নাতঃ দেখ আমাকে রাগাবি না তাহলে যে আমি কি করবো তা নিজেও জানি না!
আমিঃ আপনি কি করবেন সেটা আমার দেখার ব্যাপার না! যা করার করেন গিয়ে!
জান্নাতঃ আমি তোকে সোজা করে ফেলবো বলে দিলাম!
আমিঃ আপনি আমার কিছুই করতে পারবেন না
তাই ভয় দেখানো বন্ধ করুন! এক ছিলো আম্মুর কাছে নালিশ দেওয়া তাও বন্ধ করে দিলাম আমি!
জান্নাতঃ ঠিক বলেছিস তোর ক্ষতি না করবো না! করার পর বুঝবি কার ক্ষতি করেছি!
আমিঃ মানে?
জান্নাতঃ মানেটা তোকে বলতে যাবো কেনো!
আমিঃ বলতে হবে না! আপনি……….

চলবে.....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com