Breaking News

ভালোবাসি প্রিয় । পর্ব - ১৫



গত পর্বে ছিলো..... অনেক অত্যাচারের পর পুনরায় আবার মেহেদীর ঘরে আসলো নাফিসা। মেহেদী এখনো রেগে আছে তার সাথে. তারপর....

মেহেদী কোন জবাব না দিয়ে বারান্দার দরজা বন্ধ করে ভেতরে রুমে এসে শুয়ে পড়লো। ঘরেও শান্তি নেই, এখন বাইরে গিয়েও লোকেদের জন্য শান্তি পাবে না। সব ধ্বং-*স করে দিচ্ছে এই মেয়েটা! নাফিসাও রুমে এসে মেহেদীর পাশে দুরত্ব বজায় রেখে শুয়ে পড়লো। এখন শুধু শুধু বিরক্ত করবে না।

সেও ঘুমাক একটু, এই ভেবে কাছে যায়নি মেহেদীর। এমনিতেই তার নিজের শরীরটা দুর্বল লাগছে। হঠাৎ মাথার নিচ থেকে বালিশ সরে গেলো। নাফিসা ঘুরে তাকাতেই মেহেদী ঢিল মেরে বালিশ মেঝেতে ফেলে দিলো।
- ঘুমাতে হলে নিচে যা। আর না হয় ঘর থেকে বেরিয়ে যা।
- এখানে তোমার সমস্যা কি?
হঠাৎ একহাতে নাফিসার দুই গালে ধরে মুখ চেপে ধরে বললো,

- কথার উপর একটা কথা বলবি, জ্বি-*ভ ছি-*ড়ে ফেলবো। নিচে যা, না হয় লা-*থি দিয়ে ফেলবো।
নাফিসার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। মেহেদীর হাত সরিয়ে চুপচাপ নিচে চলে এলো। কাথাটা টানছিলো, মেহেদী পা দিয়ে আটকে রেখেছে। শুধু বালিশটা নিয়েই ঠান্ডা মেঝেতে শুয়ে পড়লো। সুস্থ থাকলে হয়তো এই গরমে এখানে শুতে আরাম লাগতো, কিন্তু এখন খুব ঠান্ডা লাগছে। এই ঠান্ডায়ই ঘুমিয়ে পড়লো নাফিসা।

ঘুম থেকে উঠে দেখলো প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে। তার কাছে মনে হচ্ছে এখন শীতের দিন। এতো শীত লাগছে কেন! বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখলো মেহেদী নেই। কোথায় গেছে কে জানে! নাফিসা বালিশটা খাটে রেখে বাথরুমের দিকে পা বাড়ালো। মেহেদী বাথরুম থেকেই বের হচ্ছে মুখে পানি দিয়ে। চোখমুখ একটু ফোলা ফোলা। সেও মাত্রই ঘুম থেকে উঠেছে হয়তো।

নাফিসা ফ্রেশ হয়ে রুমে এলো। ক্ষুধা লেগেছে খুব। মেহেদী জানালার পাশে দাড়িয়ে ফোনে কিছু করছে। এই ছেলের কি ক্ষুধা লাগে না! ঘরে তো কোনো খাবারও নেই, কি খাবে সে! নাফিসা পেট চেপে ধরে রান্নাঘরের দিকে এলো। খাওয়ার মতো তেমন কিছুই নেই। সবজি রাখার ঝুড়িতে কয়েকটি আলু আছে, আর পেয়াজ পচে গেছে। এমনিতে হলুদ মরিচ লবণ তেল সবই আছে অল্প অল্প।

বারান্দায় চালের ড্রামে এসে দেখলো, ড্রামের তলায় চালও আছে। কিন্তু এখন রান্না করে খাওয়ার শক্তিও যে নেই! ফ্রিজ খুলে দেখলো এক প্যাকেট মুরগির মাংস আছে শুধু। আর কিছুই নেই। আর নিচে একটা বক্সের অর্ধেক আমের আচার রাখা আছে। আচার প্রিয় হলেও এখন ভালো লাগছে না। পেট ভরে শান্ত হবে এমন কিছু দরকার। এটাসেটা ঘাটতে দেখে মেহেদী বললো,

- তোকে নিষেধ করেছি না, আমার মায়ের কোন জিনিসে হাত লাগাতে!
- ক্ষুধা লেগেছে আমার।
- আমাকে খেয়ে ফেল, শান্তি পাবি তুই।
- এসব কি বলো! মানুষ মানুষকে খায় কিভাবে!
- তোর দ্বারা সব সম্ভব।
- ঝ-*গড়া করলে পড়ে করো। আগে খাবার এনে দাও। দোকান থেকে কিছু নিয়ে আসো।
- টাকা নেই আমার কাছে।
- আমি দিচ্ছি।
- আমি কি তোর চা-*কর?
- না, তুমি আমার বর।

নাফিসা পার্স হাতে নিতে নিতে এদিকে মেহেদী ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো। এর মানে কিছুই বুঝলো না নাফিসা! সে কি খাবার আনতে গেছে! নাফিসা পেট চেপে ধরে আরো পাচ মিনিট খাটে বসে রইলো। মেহেদী আসছে না এখনো। নাহ, তার আশায় থাকা যাবে না। নাফিসা আস্তে আস্তে হেটে রান্নাঘরে এলো।

দুইটা আলু নিয়ে সিদ্ধ বসালো। আরও বিশ মিনিট অপেক্ষা করে চুলা বন্ধ করলো। এতো গরমটাও যে খাওয়া যাবে না। গরম আলুতেই কয়েকবার হাত দিয়ে ছেকা খেয়েছে। রুমে এসে ফ্যান ছেড়ে দিলো। দুপুরে ব্যাথার ওষুধ খাওয়ায় পেট এতো বেশি জ্বালাতন করছে। আলু ঠান্ডা হয়ে গেলে একটা আলু লবণ দিয়ে মেখে খেলো। আপাতত পেট শান্তি।

নাফিসা বসে বসে কতোক্ষন ফেসবুকে ঘুরাঘুরি করলো। মাস্টার্স এর এক্সাম সামনের সপ্তাহে! মেহেদী কি এক্সাম দিবে না! বই ও তো কয়েকটা ছিড়ে ফেলেছে। ভার্সিটি থেকে নাকি বহিষ্কার করা হয়েছে! সারাবছর পড়ে এখন লাস্ট পর্যায়ে এক্সাম মিস করবে! ভার্সিটিতে একবার যাওয়া দরকার। কিন্তু যাবে কিভাবে! লগ আউট করে নাফিসা রুমে পায়চারি করে নানান কথা ভাবতে লাগলো। মেহেদী রাত দশটার দিকে খালি হাতে ঘরে ফিরলো। নাফিসা তার আশায় না থেকে ভালোই করেছে। কোনো খাবার আনেনি হাতে করে! রুমে এসেই নাফিসাকে টেনে উঠোনে নিয়ে এলো সাথে নাফিসার লাগেজও।

- ভালোয় ভালোয় চুপচাপ এখান থেকে চলে যা। দ্বিতীয় বার আসার নাম নিবি না। যেতে বলছি!
নাফিসা মেহেদীর কাছে এসে ছলছল চোখে তাকিয়ে খুব শান্ত গলায় বলতে লাগলো,
- মেহেদী, বারবার এক কথা শুনাও কেন! আমি বলেছি তো আমি বিনা স্বার্থে তোমার সঙ্গ দিতে এসেছি। আমি সব ছেড়ে তোমার সাথে থাকতে চলে এসেছি। প্লিজ এমন করো না। তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। এছাড়াও কাল আরো অনেক কিছু হয়েছে। প্লিজ থাকতে দাও একটু তোমার কাছে। তুমি তো আমাকে ভালোবাসো। আমরা সারাজীবন একসাথে কাটিয়ে দিবো। খুব ভালো কাটবে আমাদের দিনগুলো। একটু স্বাভাবিক হও তুমি। এভাবে দূরে ঠেলে দিও না প্লিজ!

- রাস্তার একটা কু-*কুরের সাথেও থাকা যায় কিন্তু তোর সাথে থাকা যায় না। আর কি বললি! ভালোবাসি! তাও তোকে!
মেহেদী সজোরে একটা থা-*প্পড় দিয়ে আবার বললো,
- তো-*র ম-*তো মেয়েকে ভালোবাসা যায় কখনো! বে-*রিয়ে যা এখান থেকে। আশেপাশের লোকজনকে জানানোর চেষ্টা করেছিস তো তো-*কে শে-*ষ করে দিবো আর না হয় আমি নিজে শে-*ষ হয়ে যাবো। যা তুই, তোর রিসাদের কাছে। খুব ভালো রাখবে তোকে।

মেহেদী হনহন করে ঘরে এসে দরজা লাগিয়ে দিলো। এই অন্ধকারে নাফিসা এখন কি করবে! এতো জোরে কেউ থা-*প্পড় দেয়! মাথা ঘুরছে তার। গা-*ধা একটা! লাগেজটা যে খালি সেটাও কি বুঝতে পারেনি! কাপড়চোপড় তো সব ওয়ারড্রব এ তুলে রেখেছিলো! কতো চেষ্টা করে যাচ্ছে, পা-*ষা-নের মন গলাতে পারেনি। থাকবে না এখানে, তার নিজের রাজপ্রাসাদ ছেড়ে কি জন্য পড়ে আছে এখানে শুধু শুধু। মা-*র তো খাচ্ছেই! ঘরেও জায়গা পাচ্ছে না!
নাফিসা জেদ করে উঠুন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে নিলে আবার থমকে দাড়ালো। মেহেদী তো কষ্ট পেয়েই তার সাথে এমন ব্যবহার করছে। এমন তো নয়, সে এখান থেকে গেলে মেহেদী শান্তি পাবে! না যাবে না সে, মেহেদীর কাউকে প্রয়োজন। না হয় আস্তে আস্তে সে নিজের জীবনটা ধং-*স করে দিবে! শুধু শুধু নিষ্পাপ জীবনটা এভাবে ধং-*স হয়ে যাবে কেন! মেহেদীর ইচ্ছায় আর অনিচ্ছায় নাফিসা এখন সম্পূর্ণই তার।
নাফিসা আবার ঘরের কাছে ফিরে এলো।

রাতটা কি বাইরেই কাটাতে হবে! বারান্দায় জায়গা দিলেও তো হতো! ঘরের কাছে মেহগনি গাছের নিচে হাত পা গুটিয়ে বসে রইলো। ভয় লাগছে এই অন্ধকারে এখানে বসে থাকতে। এই মনে হচ্ছে ভুত নেমে আসছে। আবার এই মনে হচ্ছে শে-*য়াল কু-*কু*র এসে টেনে নিয়ে যাবে। রাস্তার দিকে কু-*কু*রগুলো কেমন যেন শব্দ করে যাচ্ছে। প্রায় এক ঘন্টার মতো বসে আছে এখানে।

ভয়ে কলিজা কাপছে! হঠাৎ মেহেদী বারান্দার দরজা খুললো। উঁকি দিয়ে নাফিসাকে উঠুনে না দেখতে পেয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো। সে কি চলে গেছে তাহলে! আশেপাশে তাকিয়ে গাছের নিচে গুটিসুটি মেরে বসে থাকতে দেখলো। নাফিসা গাছে হেলান দিয়ে তাকিয়েই আছে তার দিকে। মেহেদী কিছু না বলে ঘরে চলে গেলো। কিন্তু দরজা বন্ধ করেনি। নাফিসা মলিন হাসলো আর বললো,

- যতই না বলো, তুমি যদি আমাকে কখনো ভালোবেসে থাকো তাহলে এখনো ভালোবাসো। সেটা আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছি মেহেদী। এটা ঠিক আমাকে অনেক ঘৃ-*ণাও করো। কিন্তু ভালোবাসাটা ঠিকই রয়ে গেছে।
নাফিসা আস্তে আস্তে হেটে ঘরে এসে দরজা লাগিয়ে ভেতরে এলো। মেহেদী জানালার পাশে দাড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে। এটা একদমই ভালো লাগছে না নাফিসার। পাশে এসে দাড়িয়ে বললো,
- সিগারেট খাও কেন তুমি?
মেহেদী তার দিকে ধুয়ো ছেড়ে বললো,
- তাতে তোর কি?

ধোঁয়া তার নাকে লাগায় নাফিসা আঁচল টেনে নাক চেপে ধরে বললো,
- রাগ ঘৃণা তো সব আমার উপর। এভাবে শুধু শুধু নিজের জীবনটাকে ধং-*স করছো কেন!
নাফিসাকে নাক চেপে ধরতে দেখে সিগারেট জানালায় রেখে এক টানে নাফিসাকে খুব কাছে নিয়ে এলো।
মুখ থেকে আঁচলটা সরিয়ে নাফিসার মুখে মুখ লাগিয়ে ধোঁয়া ছাড়লো।
এদিকে নাফিসার দম বন্ধ হয়ে আসছে!
শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে মেহেদীকে ছাড়িয়ে কাশতে কাশতে খাটে বসে পড়লো।
মাথা যেন ভনভন করে ঘুরছে! শ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে!
কোনোমতো উঠে বাথরুমে এসে চোখেমুখে, মাথায় পানি দিলো।
কুলি করে বড় বড় নিশ্বাস ছাড়লো। কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে ফ্যান ছেড়ে খাটে এসে শুয়ে পড়লো।
শীতও লাগছে তাই কাথাটা টেনে গায়ে দিলো।
মেহেদী সিগারেট শেষ করে নাফিসার খুব কাছে চলে এলো।
এমনিতে কাছে এলে হয়তো একটু হলেও ভালো লাগতো, কিন্তু এখন খুব অসহ্য লাগছে।
মুখে শরীরে লেগে থাকা সিগারেটের গন্ধে নাফিসার দম বন্ধ হয়ে যাবার পালা হয়েছে !
তবুও বাধা দিতে পারছে না মেহেদীকে।

সেই শক্তিও যে তার শরীরে নেই!
সকালে ঘুম ভাঙলে দেখলো মেহেদী তাকে ঝাপটে ধরে এক কাথার নিচে এক বালিশে মাথা রেখে শুয়ে আছে। একটা পা ও নাফিসার উপর তুলে দিয়েছে।
জানালা কাল রাতে খোলাই রেখেছে। পুরো রুমে সূর্যের আলোতে ভরে গেছে।
বেলা হয়ে গেছে অনেক। কিন্তু এখান থেকে উঠা তো দূরে থাক, একটু নড়াচড়া করারও সুযোগ নেই!
ধাক্কা দিয়ে সরাতে গেলেও মেহেদীর ঘুম ভেঙে যাবে।
নাফিসা ঘাড় একটু কাত করে মেহেদীর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
খুব কাছ থেকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে তাকে। চুল কাটে না, সেভ করে না।
কেমন এলোমেলো হয়ে আছে। ইচ্ছে করছে তার নিজেই সব করে দিতে।

কিন্তু তাও তো সম্ভব না! ঘুমিয়ে থাকলে মনে হয় খুব শান্ত ছেলেটা! আর জেগে থাকলে আ-*গুন। হবেই না কেন! ভেতরে যে হাজারো কষ্ট চেপে আছে। নাফিসা কিভাবে তাকে স্বাভাবিক করবে! ওর নিজের ভেতরে যে একটুও চেষ্টা নেই স্বাভাবিক হওয়ার! নাফিসা আর একটু কাছে এসে মেহেদীর থুতনিতে আলতো করে ঠোঁটের ছোয়া দিলো। একটু পর মেহেদী মোচড় দিতেই নাফিসা চোখ বন্ধ করে রইলো। মেহেদীর হাত পা সব সরে গেছে তার উপর থেকে। উঠে গেছে কিনা দেখার জন্য চোখ একটু ফাক করলো। না উঠেনি। অপরদিকে ঘুরে বুকে ভর দিয়ে উল্টো হয়ে শুয়ে আছে। নাফিসা কাপড়চোপড় ঠিক করে খুব সাবধানে উঠে পড়লো।

ওয়ারড্রব থেকে শাড়ি নিয়ে বাথরুমে চলে গেলো। গোসল করে এসে দেখলো মেহেদী এখনো ঘুমাচ্ছে। সূর্যের আলো এসে পিঠের একপাশে পড়ছে। জানালাটা একটু চাপিয়ে রান্নাঘরে এসে রাতে সিদ্ধ করা আলুটা খেয়ে পানি খেয়ে নিলো। খুব কষ্ট করে ড্রামের তলা থেকে চাল উঠিয়ে ভাত বসালো। সবজি বলতে শুধু আলু আছে। মরিচও নেই ভর্তা বানাবে। ফ্রিজে মুরগির মাংস আছে, কিন্তু রান্না তেমন ভালো পারে না। তাই ওটা রান্নার চিন্তা বাদ দিয়ে দিলো। কখনো রান্না করে খায়নি, পারবে কিভাবে! মামিকে রাধতে দেখে টুকটাক জানে। নাফিসা আলু কুচি করে তেল আর লবণ দিয়ে ভাজি করলো।

যেমনই হোক পেটে গেলেই হলো! ভাতের মা-র গালতে গিয়ে হাতে গরম মা*র পরেছে। "ও মা" বলে একটা ছোটখাটো চিৎকার দিলো। পাতিল সোজা করে কতোক্ষন ঠান্ডা পানিতে হাত চুবিয়ে রাখলো। চিৎকার শুনে মেহেদীর ঘুম ভেঙে গেছে। রুমে তাকিয়ে নাফিসাকে দেখতে না পেয়ে বিছানা ছেড়ে বেরিয়ে এলো। রান্নাঘরে নাফিসাকে দেখলো পানিতে হাত ডুবিয়ে রেখেছে। হাত কে-*টে ফেলেছে না হয় পু*ড়ে গেছে! রান্না করে খা বেশি বেশি। মেহেদী গোসল করতে বাথরুমে চলে গেলো। নাফিসার ভাত রান্না আর আলু ভাজি হয়ে গেছে। রুমে এসে দেখলো মেহেদী ওয়ারড্রব খুলে শার্ট বের করছে। নাফিসা দ্রুত রান্নাঘরে এসে মেহেদীর জন্য এক প্লেট ভাত নিয়ে ভয়ে ভয়ে রুমে এলো। না জানি ফেলে দেয়!
- কোথায় যাও? ভাত খেয়ে তারপর যাও।

মেহেদী অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে ভাত নিতে গেলে নাফিসা দ্রুত প্লেট সরিয়ে নিলো।
- না খেলেও ফেলো না প্লিজ। অনেক কষ্ট করে হাত পুড়িয়ে রান্না করেছি। তাছাড়া খাবার নষ্ট করতে নেই। আল্লাহ রাগ হবেন।
মেহেদী হনহন করে বেরিয়ে গেলো। পেছন থেকে নাফিসা একটু জোর গলায় বললো, আসার সময় বাজার করে নিয়ে এসো।

সেই প্লেটে নাফিসা নিজেই খেয়ে নিলো। আহ! শান্তি লাগছে আজ। দুদিন পর ভাত খেলো। ভাত খেয়ে ব্যাথার ওষুধ খেয়ে নিলো। জ্বর নেই শরীরে কিন্তু ব্যাথা কমার জায়গায় মেহেদী আরো বাড়িয়ে দিয়েছে! পো*ড়া জায়গায় কালকের আনা সেই মলমটা লাগিয়ে দিলো। জ্বা*লা করছে খুব।

সব কিছু গুছিয়ে বাথরুমে গিয়ে দেখলো মেহেদী কাপড়চোপড় এখানেই রেখে চলে গেছে। বউয়ের উপর কাজ দিয়ে গেছে বুঝি! নাফিসা সেগুলো ধুয়ে বাইরে শুকাতে দিলো। হঠাৎ দূর থেকে দেখলো সেই আংকেল রাস্তার দিকে যাচ্ছে। মাথায় একটা বুদ্ধি এলো। নাফিসা এক প্রকার দৌড় দিয়ে উঠুনটা পাড় হয়ে আংকেল কে ডেকে বললো, মেহেদীর সাথে দেখা হলে যেন একটু বলে দেয় বাসায় বাজার নেই। তাই বাজার করে নিয়ে বাসায় ফিরতে। আংকেল ঠিক আছে বলে চলে গেলো। নাফিসা মনে মনে খুশি হয়ে বললো, আন্টিটা কাল আমার কত্তবড় উপকার করে দিয়ে গেছে! ভালো একটা আইডিয়া দিয়ে গেছে। আমার কথা তো শুনবেই না। বাইরের লোক দিয়ে বলবো।

চলবে....

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com