Breaking News

ভাড়াটে বউ । পর্ব - ০৮

সানভি বুঝতে পারেনা রিহার মনে কি চলছে।
তবে এটুকু বুঝতে পারে সানভির জন্য রিহার মনে একটু হলেও জায়গা আছে আর রিহাও তাকে ভালোবাসে শুধু প্রকাশ করছেনা।
রিহা মাথা নিচু করে বসে থাকে।

- কফি বানিয়ে আনো দুই কাপ।(সানভি)
- দুই কাপ কেনো?(রিহা)
- একটা তোমার একটা আমার।(সানভি)
- কিন্তু আমিতো কফি খাইনা""(রিহা)
- ওহ তাহলে চা নিয়ে আসো যাও।(সানভি)
- আচ্ছা।(রিহা)

রিহা চা বানিয়ে আনতে গেলে সানভি উঠে বসে।
তারপর টেবিল থেকে সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট ধরিয়ে টানতে থাকে।
সিগারেটের ধোয়ায় কষ্টের মতো জ্বরটাও চলে গেলে খারাপ হতোনা। মনে মনে ভাবে সানভি। একটা সিগারেট শেষ করেই আরেকটা ধরায়। দুই টান দিতেই রিহা ঘরে ঢুকে পড়ে।
হুট করে রিহা চায়ের কাপ রেখেই সানভির হাত থেকে সিগারেট কেড়ে নিয়ে ফেলে দেয়।

ঘটনার আকস্মিকতায় সানভি থ মেরে যায়। হঠাৎ কি হলো রিহার।
- স্যার আপনাকে বলছিনা এসব খাবেন না এগুলা শরিরের জন্য খারাপ?(রিহা)
- ও হ্যা খারাপ তো কিন্তু এটা ছাড়া ভাল্লাগে না।(সানভি)
- ভালো না লাগলেও ছাড়তে হবে। এইসব ভালোনা বুঝছেন।(রিহা)
- এতো সুন্দর করে বুঝালে যে কেউই বুঝবে।(সানভি)
সানভি বুঝতে পারে রিহার কষ্ট হয় সানভি সিগারেট খেলে।
আলাদা একটা টান অনুভব করে সানভির জন্য। ভালো না বাসলে কখনো এসব করতো না। নষ্ট জিনিসের মুল্য ভালো না বাসলে কেও দেয় না।
রিহা মনে মনে ভাবে সানভি এখন কি ভাবছে তারর সম্পর্কে।
যাই ভাবুক তাতে আমার কি? আমিতো ভুল কিছু করিনি।
উনার ভালোর জন্যই করছি।
রিহা লজ্জা পেয়ে চলে যায়।
কিছুক্ষন পর ফিরে এসে দেখে সানভি চা এখনো খায়নি।
- কি হলো চা খান নাই কেনো এখনো? ঠান্ডা হয়ে গেলো তো।(রিহা)

- তুমি কই গেছিলা? একসাথে খাবো বলে দুই কাপ বানাইতে বলছি আর তুমি চলে গেলা?(সানভি)
- আমিতো খেতে গেছিলাম।(রিহা)
- ভালো করছো এইবার ঠান্ডা চা খাও।(সানভি)
- আমি আবার বানিয়ে আনতাছি।(রিহা)
- কখনো ঠান্ডা চা খাইছো?(সানভি)
- ঠান্ডা চা আবার খাওয়া যায় নাকি?(রিহা)
- ছোটবেলা থেকেই আমি ঠান্ডা চা খাই।(সানভি)
- এ্যা?
- এ্যাা না হ্যা আজকে তুমিও খাবা আমার সাথে।(সানভি)
- আমি খেতে পারবোনা কেমন লাগবে আল্লাহই জানে?(রিহা)
- সেই লাগবে একবার খেয়েই দেখো। ওইযে ওইখান থেকে বিস্কুট নিয়ে আসো।(সানভি)

রিহা বিস্কুট নিয়ে আসে।
- এবার কি করবো?(রিহা)
- বিস্কু্ট পিষে ফেলো হাতের মধ্যে একদম গুড়া করে ফেলো।(সানভি)
- তারপর?(রিহা)
- এবার চায়ের মধ্যে দিয়ে দাও আর চিনি দাও।(সানভি)
- তারপর?(রিহা)
- এইবার চামচ দিয়ে মিশিয়ে ফেলো।(সানভি)
- স্যার এইটা কি চা নাকি স্যুপ কোনটা? (রিহা)
- যেটা ইচ্ছা মনে করে খেতে পারো। তবে ভালো লাগবে।(সানভি)
- স্যার আমি খাবোনা।(রিহা)
- আমি বলছি একবার খেয়ে দেখো?(সানভি)
রিহা ভয়ে ভয়ে চায়ের কাপে চুমুক দেয়।
আল্লাহ জানে কেমন লাগবো খেতে।
রিহা একটু খেয়ে বুঝতে পারে সে যেমন ভেবেছিলো ঠিক তার উল্টোটা হয়েছে।
হালকা গরম চায়ের মধ্যে এইসব দিয়ে চা টা পুরাই অস্থির লাগতাছে।
রিহা হাসতে হাসতে নিজেও অস্থির হয়ে যায়।
সানভি আনমনে দেখতে থাকে রিহার হাসিমাখা মুখটা।
এই হাসিটা দেখার জন্যই তো এতোকিছু।
মেয়েটার বাচ্চা বাচ্চা হাসি দেখে সানভি নিজেও হেসে ফেলে।
.
- স্যার আপনি এই সুত্র পাইছেন কোথায় বলেন তো?
আমি এতো চা খাই কোনোদিন এভাবে ট্রাই করিনাই।(রিহা)

বলছিলাম না ভালো লাগবো।
আমি গরম চা খেতে পারিনা জ্বিব পুড়ে যায় তাই ছোটবেলা থেকেই এভাবেই চা খাই।
আম্মু শিখাইছিলো খাওয়া।(সানভি)

মায়ের কথা মনে হতেই মনটা খারাপ হয়ে যায় সানভির।
আজ আম্মু থাকলে কত খুশিই না হতো। নিজের হাতে খাইয়ে দিতো। অনেক মিস করি আম্মুকে।
- স্যার কি হইছে চুপ হয়ে গেলেন কেনো?(রিহা)
- আম্মুর কথা মনে পড়ে গেলো।(সানভি)
- স্যার আপনার জ্বর আছে এখন? নাকি নাই?(রিহা)
- আছে কিন্তু কম।(সানভি)
- বিশ্রাম নেন চলে যাবে আর মন খারাপ কইরেন না।(রিহা)
- হুমম চলে গেলেই ভালো।(সানভি)

সারাদিন দুজনে আড্ডা দেয়। রিহার সাথে কথা বলে এক অন্যরকম আনন্দ পায় সানভি। যেটা অন্যকারো সাথে পায়না
রিহাও ভাবে প্রেমে বুঝি পড়েই গেলাম।
সানভি ছেলেটা এমন কেনো?
বুঝতে পারেনি রিহা।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধা নামে জ্বর আবার বেড়েছে সানভির।
এই নিয়ে চিন্তা বেড়েছে রিহার। থাকবে নাকি চলে যাবে?
একটা অবিবাহিত মেয়ে আরেকটা অবিবাহিত ছেলের সাথে এক বাড়িতে রাত কাটালে নিশ্চই মানুষ এটাকে ভালোভাবে নিবেনা। আর মাকেই বা কি উত্তর দিবো
মনে হয় চলে যাওয়াই ভালো হবে।
সানভি বুঝতে পারে রিহার মনে কি চলছে।
- রিহা শোনো।(সানভি)
- হ্যা বলুন।(রিহা)
- খাবার এখানে রেখে যাও আর ঔষুধ ও।।তারপর তুমি যেতে পারো"(সানভি)
- কিন্তু স্যার আপনার এই অবস্থায় রেখে চলে যাবো আমি?(রিহা)
- কিছু হবেনা তুমি যেতে পারো।(সানভি)
রিহা খাবার আর ঔষুধ সবকিছু হাতের কাছে রেখে দিয়ে চলে যায়।

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com