Breaking News

ভাড়াটে বউ । পর্ব - ০৭

রিহা রুমে ঢুকে অবাক হয়ে যায়। দরজা খোলা সবকিছু অগোছালো।
রিহার মনে ভয় ঢুকে যায়। হার্টবিট বেড়ে গেছে অনেক আগেই। এখন মনে হচ্ছে হার্টটা বের হয়ে আসবে।
পা চলছে না তার। সানভির কিছু হয়ে যায়নি তো? চিন্তায় হাত টা ঠান্ডা হয়ে গেছে তার।
তারাতারি করে সানভির রুমের দিকে পা বাড়ায় রিহা।

এই রুমে দরজাটাও খোলা। হুট করে রুমে ঢুকে পড়ে রিহা। সানভিকে দেখে ঘুমিয়ে আছে কিন্তু কাপেতেছে।
হাতটা কপালে রাখতেই বুঝতে পারে জ্বরের মাত্রা খুব বেশি।
টেবিলের ওপর থেকে থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মেপে দেখে ১০৩.

রিহার মাথা ঘুরে যায়। এতো জ্বর নিয়ে একা ছিলো সারারাত। মাথায় ঢুকেনা কিছু তার। ডাক্তারকে
ফোন করে বাসায় আসতে বলে রিহা। তারপর ঠান্ডা পানি আর কাপড় নিয়ে
আসে। সানভির কপালে তার ঠান্ডা হাত ছোয়াতেই ঘুম ভেঙে যায় সানভির।হাতটা ধরে ফেলে রিহার।
রিহা হাত ছাড়িয়ে নিয়ে ভেজানো কাপড়টা সানভির কপালে দেয়।সানভি সরিয়ে দিয়ে বলে,
- তোমার ঠান্ডা হাতটা কপালে রাখো। ভেজা কাপড় দিতে হবেনা বারবার। (সানভি)
- স্যার ওটা দিলে ভালো লাগবে।(রিহা) - আর তোমার হাত রাখলে বেশি ভালো লাগবে।(সানভি)
রিহা চুপ হয়ে যায়। বুঝতে পারেনা এই জ্বরের ঘোরেও এতো রোমান্টিকতা আসে
কোথা থেকে। মনে মনে বলে, এতোটা ভালো না বাসলেও হতো। আমিতো
পারবোনা তোমার হতে। কিন্তু ইচ্ছে হয় তোমাকে ভালোবাসতে তোমার বউ হওয়ার
খুব ইচ্ছে হয় এখন। কিন্তু সেটা আর সম্ভব না।

রিহার ঠান্ডা হাতটা সানভির কপালে রাখার কিছুক্ষন পরই আবার গরম হয়ে যায়।
এতোটাই জ্বর শরিরে। রিহা আবার হাতটা পানিতে ডুবিয়ে সানভির কপালে রাখে।
ঠিক তখন, ডাক্তার চলে আসে, - আপনি কি মিসেস সানভি?(ডাক্তার) - ইয়ে মানে.....
- হ্যা উনি মিসেস সানভি।(সানভি) - স্যার আপনি উঠছেন কেনো আপনি শুয়ে
থাকুন।(ডাক্তার) ডাক্তার সবকিছু চেক করে ঔষুধ দেয়,
- উনাকে কোনোমতেই একা রাখবেন না।
জ্বর কিন্তু খুব বেশি।(ডাক্তার)
- আচ্ছা।(রিহা)
ডাক্তার বের হয়ে যেতেই সানভি ডাকে রিহাকে,
- রিহা শোনো।(সানভি)
- হ্যা বলুন।(রিহা)

- তোমার হাতটা আমার কপালে রাখো।আর
বসে থাকো।(সানভি)
- কিন্তু আমাকে তো রান্না করতে হবে। আপনার ঔষুধ খাওয়া লাগবো।(রিহা)
- রান্না একটু পর করো আর তুমি থাকলে ঔষুধ খাওয়া লাগবো না।(সানভি)
- আপনি এতো ঢং করেন কেমনে? আগে তো এমন ছিলেন না।(রিহা)
- ঢং করলাম কোথায়?(সানভি)
- এইভাবে চলতে থাকলে আমি আপনার প্রেমে পড়ে যাবো সিওর।(রিহা)
- কিছু বললা?(সানভি)
- না কিছুনা।(রিহা)
রিহা সানভির কপালে হাত রাখে।
আরামে চোখ বন্ধ হয়ে আসে সানভির।
রিহা কিছুটা লজ্জা পেলেও সামলে নেয় নিজেকে।

সানভি ঘুমিয়ে গেলে রিহা রান্না ঘরে যায়। রান্না করতে করতে ভাবতে থাকে যদি এই
সংসারটা তার নিজেরর হতো তাহলে কতই না ভালো হতো। সানভিকেও একা থাকতে
হতো না। সে তো বলেছিলো তাকে কিন্তু রিহাই মেনে নিতে পারেনি এসব। কেমন
জানি লোভী লোভী লাগে নিজেকে। রিহা মনে করে যখন সানভির টাকা
ছিলোনা তখন ফিরিয়ে দিয়েছি এখন তার সব আছে এখন যদি মেনে নেই তাহলে সানভি কি ভাববে?
.
হ্যা তখন আমি ভাবতাম টাকাই সব। কিন্তু এখন আর তা মনে হয়না। টাকা ছাড়াও
ভালোবাসার দরকার আছে। টাকা দরকার তবে তখন সানভির পাশে থাকতাম তাকে
সাহায্য করতাম তাহলে হয়তো আজ এই সংসারটা আমার নিজেরই হতো।
রিহা ভাবতে ভাবতে একটা দির্ঘশ্বাস ফেলে।

রান্না শেষ করে সানভিকে ঘুম থেকে তুলে। সানভি ফ্রেস হয়ে এসে রিহার হাতে খায়।
রিহা ঔষুধ খাইয়ে দিয়ে সানভির পাশে বসে। - এখন কেমন লাগছে আপনার?(রিহা)
- ভালোই লাগছে আগের চাইতে।তুমি খেয়ে নাও তারপর আসো।(সানভি)
- পরে খাবো ক্ষুদা পায়নি আমার।(রিহা) - আচ্ছা মনে করে খেয়ে নিয়ো।(সানভি)
- আচ্ছা। একটা কথা বলবেন?(রিহা) - কি কথা?(সানভি)

- আপনার তো অনেক কিছুই আছে এখন একটা সুন্দরি মেয়ে দেখে বিয়ে করে ফেললেই
তো পারেন বিয়ে কেনো করছেন না?
(রিহা)
.
- বিয়ে করতে চাইছিলাম তবে এখন ডিসিশন নিয়েছি বিয়ে করবোনা। একা
থাকাই ভালো। বিন্দাস লাইফ।(সানভি) - কখনো একা লাগে না?(রিহা)
- একা লাগার সুযোগ ই দেই না। একাকিত্ব গ্রাস করে নিলে অনেক কিছু হয়ে যেতে
পারে তাই।(সানভি)
- বুঝলাম না?(রিহা)
- কিছুনা। হঠাৎ তুমি এসব কেনো বলতাছো?(সানভি)
- এমনি।(রিহা) সানভি বুঝতে পারেনা রিহার মনে কি চলছে।

তবে এটুকু বুঝতে পারে সানভির জন্য রিহার মনে একটু হলেও জায়গা আছে আর রিহাও
তাকে ভালোবাসে শুধু প্রকাশ করছেনা।

চলবে..

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com