Breaking News

গল্পঃ ভাবির অহংকারী বোন । পর্ব - ১২



আমিঃ আমি এখন ওসব নিয়ে আর কথা বলতে চাচ্ছি না।

ভাবিঃ অনেক বদলে গিয়েছিস...
আমিঃ বদলাইনি তবে পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি।
ভাবিঃ তোর কথা বলার ধরন গুলো চেঞ্জ হয়ে গিয়েছে.....
আমিঃ সম্পূর্ণ চেষ্টা করছি নিজে কে নিজের মতো করে গড়তে..
ভাবীঃ অনেক বড় হয়ে গিয়েছিস, আচ্ছা নিচে আয় খাওয়ার জন্য..
ভাবী চলে গেল, আমি চেঞ্জ করে নীচে এলাম। দেখি আব্বু বাদে সবাই বসে আছে সবার সাথে বসে খাবার শেষ করলাম।
ভাবির আব্বু আম্মুর সাথে কথা হয়নি এখনো।
রুমে এসে বসে আছি তখনই দেখি ভাবীর আব্বু আর আম্মু আমার রুমে ঢুকে এলো
আঙ্কেলঃ শাকিব, বাবা তোমার সামনে দাড়ানোর মুখ আমার নেই..
আমিঃ আরে আঙ্কেল ওসব কথা ভুলে গিয়েছি এখন..
আঙ্কেলঃ আমরা জানি সাদিয়া অনেক বড় একটা অন্যায় করে ফেলেছে, কিন্তু যা হবার সেটা তো হয়েই গেছে ওসব মনে ধরে রাখতে হয় না বাবা...
আমিঃ আমিও সেটাই বলছি ভুলে যান ওসব...
আন্টিঃ আমরা তোমার সামনেই আসতে পারছিলাম না এরকম লজ্জা লাগছিল। সাদিয়া এমন একটা কাজ করবে তা কেউই ভাবতে পারিনি।
আমিঃ আন্টি অতীতকে অতীতেই থাকতে দিন, এখন বর্তমানের বোঝার সাথে অতীতের বোঝা মিলালে বোঝাটা বয়ে নিতে কষ্ট হবে। তাই বলছি অতীতকে আর বর্তমানে আনবেন না।
আঙ্কেলঃ তুমি এখন অনেক কিছু বুঝতে শিখে গেছো,, যাইহোক বাবা, আমরা একটু পর বাসায় চলে যাবো।
আমিঃ আজকে থেকে যান..?
আন্টিঃ না বাসায় শুধু সাদিয়া একাই আছে।
আমিঃ ও,,,
আঙ্কেলঃ আমাদের বাসা থেকে ঘুরে এসো...
আমিঃ সময় পেলে যাব আন্কেল...
আঙ্কেল আর কিছু বলল না, কারণটা জানেন,,
বাসায় যাওয়ার কথাটা বলেছে নিজের সম্মানটা রাখার জন্য।
আমার নিজেরও অনেক খারাপ লাগছে শরীরের উপর দিয়ে অনেক ধকল গিয়েছে।
বিছানায় শরীরটাকে এলিয়ে দিতেই রাজ্যের ঘুম দুচোখে হামাগুড়ি দিয়ে পড়ল।
ঘুম ভাঙলো রাত 8 টায়। ঘুম থেকে উঠে দেখি অনেকগুলো কল এসেছে তার মধ্যে মারুফ ভাই আর মিথিলার ফোন..
আমি সাথে সাথেই আগে মারুফ ভাইকে কল ব্যাক করলাম। মারুফ ভাই বাজারে আছে তাই উনার সাথে কথা বলে আবার মিথিলাকে ফোন দেই। একবার ফোনটা বেজে কেটে গেল আমার দিলাম এবার সাথে সাথেই রিসিভ হলো....
আমিঃ কেমন আছিস..?
মিথিলাঃ ভালো..
আমিঃ ফোন দিয়েছিলি..?
মিথিলাঃ কুত্তা তুই বাসায় গিয়েছিস, যাওয়ার আগে আমাকে একটু জানালে কি হতো..?
আমিঃ আমিও জানতাম না যে আজ বাসায় আসতে হবে। আন্টি তোকে কিছু বলেনি..?
মিথিলাঃ বলেছে,, ও ভুলে গেছিলাম আঙ্কেল এখন কেমন আছে..?
আমিঃ এখন সুস্থ, বাসায় নিয়ে এসেছি..
মিথিলাঃ আমার এখানে একদম ভালো লাগছে না..
আমিঃ কেন, মারিয়া কোথায় গিয়েছে..?
মিথিলাঃ আরে ওকে দিয়ে আমি কি করব..?
আমিঃ ওর সাথে করে নিয়ে নাচানাচি করবি, তুই তো ভালই পারিস...
মিথিলাঃ এখন মজা করার মুড নেই, তুই আবার ঢাকায় আসবি কবে..?
আমিঃ আর যাব না..
মিথিলাঃ বলেছি আমার মজা করার মুড নেই...
আমিঃ তোর কি খুব বেশি খারাপ লাগছে...?
মিথিলাঃ হুমম..
আমিঃ আচ্ছা,, তাহলে আমি তোর আব্বুকে বলে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করবো...
মিথিলাঃ তুই কি সত্যিই আর আসবি না..?
আমিঃ আরে আসবো দু'একদিন পরে চলে আসবো...
- কোথাও যাওয়া হচ্ছে না...
( পিছন থেকে কথাটা বলে উঠলো… তাকিয়ে দেখি আব্বু)
আমিঃ তুমি..?
আব্বুঃ তুই কোথাও যাবিনা..
আমিঃ মিথিলা আমি তোর সাথে পরে কথা বলছি...
মিথিলাঃ আচ্ছা বাই...
আমিঃ কিন্তু আব্বু আমার সবকিছু তো ওখানেই আছে। আর কলেজে আছে..
আব্বুঃ তোর সবকিছুই নিয়ে আসবি। আর কলেজ থেকে টিসি নিয়ে চলে আসবি..
আমিঃ আর কিছুদিন পরেই পরীক্ষা এখন কি TC দেবে..?
আব্বুঃ ওসব তোকে করতে হবে না আমি তোর কাকুকে বলে সব ব্যবস্থা করে নেব।
আমিঃ আচ্ছা...
আব্বুঃ আচ্ছা চল খাবার খাবি...
আব্বুর সাথে নিচে এসে সবাই একসাথে খাবার খেয়ে নিলাম। খাবার শেষে একসাথে সোফাতে বসে টিভি দেখছি এটা আগে কখনো করিনি। তবে আজ করছি,,
অনেক ভালো লাগছে
তখনই আব্বু জানতে চাইলো আমি এতদিন কোথায় ছিলাম।
তাদেরকে সবকিছু খুলে বললাম মারুফ ভাইয়ের কথাও বললাম..
সেদিনের মত বেশি রাত না জেগে ঘুমিয়ে পড়ি।
পরের দিন সকালে....
ফোনের আওয়াজে ঘুম ভাঙলো।
রাহাত ফোন দিয়েছে, বাসার বাইরে যেতে বলছে।
উঠে দেখি 7 টার বেশি বাজে..। আমি উঠে বাইরে রাস্তার উপরে এসে দাঁড়াতেই রাহাতকে দেখতে পেলাম...
আর তার পাশে দাঁড়িয়েছিল মিথিলার আব্বু
আমিঃ আঙ্কেল আপনি এখানে...?
আঙ্কেলঃ পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম রাহাত দেখতে পেয়ে ডাকদিল তাই দাঁড়ালাম এখানে...
আমিঃ ও...
আঙ্কেলঃ তুমি শাকিব না..?
আমিঃ জি আংকেল...
আংকেলঃ আমি তো চিনতেই পারছিনা, কত পরিবর্তন হয়ে গিয়েছো..
আমিঃ রাহাত এত সকালে ডাকলি কেন..?
রাহাতঃ কিছু কথা বলার জন্য আর আমার কাছে রাতে মিথিলা ফোন দিয়েছিল। কলেজের ব্যাপারে জানার জন্য। ও বলল তোর সাথে কাল রাতে নাকি কথা হয়েছে, তাই আংকেল কে দেখতে পেয়ে এখানে দাঁড় করাই।
আমিঃ ও ভালই হয়েছে, না হলে আমাকে আংকেল দের বাসায় যেতে হতো..
আঙ্কেলঃ কি বলবে...
আমিঃ আংকেল মিথিলা বাসায় আসতে চাচ্ছে।
আঙ্কেলঃ কিন্তু এখন বাসায় আসলে....
আমিঃ কোন চিন্তা করবেন না কিছুই হবে না। আমি এদিকটা দেখব আর তাছাড়া কিছুদিন পর থেকে পরীক্ষা...
আঙ্কেলঃ দেখি তাহলে কি করা যায়..
আমিঃ দেখি না আপনি ওর কে বাসায় আনার ব্যবস্থা করুন।
আংকেলঃ আচ্ছা ঠিকআছে..
রাহাতঃ আঙ্কেল তাহলে এখন আমরা আসি...
আঙ্কেলঃ আচ্ছা...
আঙ্কেল কে বিদায় দিয়ে আমি আর রাহাত রাস্তায় হাঁটছি
আমিঃ কি বলবি..?
রাহাতঃ আমার কিছু টাকা লাগবে...
আমিঃ ও সেটা ফোনে বলতে পারতি..
রাহাতঃ আমার মনে হলো সরাসরি বলাটাই ভালো হবে তাই বললাম। আর সাগরের কাছে বলেছি কিন্তু ওর কাছে এখন টাকা নেই।
আমিঃ কত টাকা...?
রাহাতঃ আপাতত 5000 হলেই হবে আর বাকিটা আমি জোগাড় করে ফেলেছি।
আমিঃ আচ্ছা তাহলে 10 টায় দেখা করিস..
রাহাতঃ আচ্ছা একটু ফোন দিস...
রাহাত কে বিদায় দিয়ে বাসায় এলাম। এখন টাকা দিয়ে কি করবে জানি না, কিন্তু এটুকু জানি কোন খারাপ কাজে খরচ করবে না। তাই আর জিজ্ঞাসা করলাম না টাকা দিয়ে কি করবে।
আম্মুঃ এত সকালে উঠে কোথায় গিয়েছিলি..?
আমিঃ রাহাত ফোন দিয়েছিল তাই গিয়েছিলাম।
আম্মুঃ এত সকালে কিছু হয়েছে নাকি..?
আমিঃ আরে না এমনি সকালে হাঁটার জন্য বলল।
আম্মুঃ ও আচ্ছা যা ফ্রেশ হয়ে আয় নাস্তা দিচ্ছি..
আমি রুমে এসে দেখি আব্বু বসে আছি..
আমিঃ তুমি..?
আব্বুঃ হ্যাঁ আসলাম। একটু আগেইএসেছি কিন্তু দেখলাম তুই রুমে নাই..
আমিঃ ও কিছু বলবে..
আব্বুঃ হ্যাঁ...
.
চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com