Breaking News

আপু যখন বউ । পর্ব - ০৭



তাকিয়ে দেখি আম্মু কল করেছে! তাই রিসিভ করলাম তাড়াতাড়ি!

আমিঃ হুম আম্মু বলেন!
আম্মুঃ বউমার শরীর ভালো না আর তুই নাকি চলে গেছিস ভার্সিটিতে! ঐ তোর বউয়ের চেয়ে বড় কি ক্লাসটা হয়ে গেছে নাকি?

আমিঃ আম্মু আমিতো…. (ধমক দিয়ে থামিয়ে দিলো)
আম্মুঃ চুপ! আমি কিছু শুনতে চাই না তুই এখনি বাসায় যা! আর বউমার শরীর ভালো হওয়ার আগ পর্যন্ত তুই আর কোনো ক্লাস করবি না।। আর ভার্সিটিতে যাবি না বলে দিলাম!
আমিঃ ওকে?
আম্মুঃ আর এখনই তুই বাসায় যা! আমি বউমাকে ফোন দিবো একটু পড়ে বলে দিলাম।
আমিঃ ওকে! (বলেই ফোন রেখে দিলাম)
তারপর সবার থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম! এসে দেখি জান্নাত খাটে শুয়ে আছে আর টিভি দেখতেছে!

আমিঃ আপনি আম্মুকে ফোন দিয়ে কি বলেছেন?
জান্নাতঃ যা শুনিয়েছি তোকে তাই বলেছে! আসলে বাসায় তো কেউ একজন থাকা লাগে আমাকে সেবা করার জন্য! তাই ভাবলাম সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত তোকেই রেখে দেই!
কোনোকিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে নিজের সবকিছু নিয়ে পাশের রুমে রেখে দিলাম!
জান্নাতঃ ঐ হুসাইন একটু শুনে যা তো?
আমিঃ কেনো?
জান্নাতঃ কাজ আছে তাড়াতাড়ি আয়!
আমিঃ ওকে! (বলেই ওনার রুমে গিয়ে হাজির হলাম)
জান্নাতঃ আমার পাগুলো ব্যাথা করতেছে একটু টিপে দিয়ে যা প্লিজ?
আমিঃ আমি আপনার পা টিপে দিবো?
জান্নাতঃ হুম! নাকি আম্মুকে ফোন দিয়ে বলবো তুই আমাকে সারাদিন কথা শুনিয়েছিস শরীর খারাপ হওয়ায়!
আমি হালকা একটু হেসে গিয়ে ওর পা গুলো টিপে দিতে লাগলাম!
পরেরদিন ভার্সিটিতে গেলাম! অন্যদিনের মতো দিনটা কাটতে লাগলো! দুপুরে জান্নাত হঠ্যাৎ এসে আমার সামনে এসে দাড়ালো!

জান্নাতঃ আমার সাথে আয়!
আমিঃ কেনো?
জান্নাতঃ বেশি বকবক না করে আয়! (রাগি গলায়)
আমিঃ ওকে! (বলেই সবার সামনে থেকে উঠে জান্নাতের সাথে গেলাম)
জান্নাত আমাকে নিয়ে কেন্টিনের টেবিলের উপর উঠে দাড়ালো!
জান্নাতঃ Attention guess!
সবাই জান্নাতের দিকে ঘুড়ে তাকালো!
জান্নাতঃ তোমাদের সবাইকে আজকে একটা কথা বলতে চাই?
পাশ থেকে কয়েকজন বললোঃ “কি!”
জান্নাতঃ আসলে আমি আর হুসাইন স্বামী-স্ত্রী! এই ছুটিতে আমাদের বিয়েটা হয়েছে! সো সবাই এটা মাথায় রাখবে হুসাইন এর স্ত্রী আছে!

জান্নাত মে চলে গেলো! সবাই জান্নাতের কথাটা শুনে হা হয়ে গেলো! বিশেষ করে মেহেদী ভাই! আমার দিকে জিঙ্গেসার দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে রইলো! আমিও নেমে মেহেদী ভাইদের কাছে গেলাম!
মেহেদী ভাইঃ কিরে জান্নাত এটা কি বলে গেলো!
আমিঃ হুম!
মেহেদী ভাইঃ আমি কিছু বুঝতেছি না! তুই জান্নাতকে বিয়ে করতে গেলি কেনো?
আমিঃ ভাইয়া আর আম্মুর কথায়!
মেহেদী ভাইঃ আম্মুর আর ভাইয়ার কথায় বর্তমানে কেউ বিয়ে করে নাকি?
আমিঃ আব্বু মারা যাওয়ার পর আম্মু অনেক কষ্ট করেছে! আমাদেরকে মানুষ করেছে পাশাপাশি কোম্পানির কাজও করতে হয়েছে! তাই আমি চাইনি তাকে কষ্ট দিতে!
আম্মু যা করে আমার জন্য ভালোই করে! আর আম্মু জান্নাত একটু বেশিই পছন্দ করেছে! আর এখানের সবকিছু বলেছি আমি কিন্তু জান্নাত এমন ভাবে সাজিয়ে ছিলো যে আম্মুর মুখের দিকে তাকিয়ে বিয়েটা করতে হয়েছে!

মেহেদী ভাইঃ ওকে! আচ্ছা প্রথম থেকে আমাকে সব খুলে বল তো!
আমিঃ আর বলো না (সবকিছু খুলে বললাম মেহেদী ভাইকে)
সব শুনে ওনি মাথায় হাত দিলো! এখন ওনার মুখেই কোনো কথা নেই!
মেহেদী ভাইঃ তো এখন কি করবি! ওও তো ১ বছরে তোর জীবনটা শেষ করে দিবে! কি করবি এখন?
আমিঃ ভাইয়া ওনি এই ভার্সিটিতে আছে আর ৫ মাস! তাই এই কয়েকটা দিন সাবধানে থাকতে হবে!
মেহেদী ভাইঃ আচ্ছা তুই বিয়েটা নাহয় করেছিস তোর আম্মুর কথায় তাহলে ওর টর্চারগুলো সহ্য করতেছিস কেনো?

আনিঃ দুইটা কারণে সহ্য করতেছি?
মেহেদী ভাইঃ কারণ গুলো কি কি?
আমিঃ প্রথমত আম্মুকে কিছুদিন বুঝতে দেওয়া যাবে না যে জান্নাতের আর আমার মাঝে কি চলতেছে!
মেহেদী ভাইঃ ওহ! দ্বীতীয় কারণ?
আমিঃ জান্নাত কে উড়ার সময় দিতেছি! যখন সে চিল পাখির এর মতো আকাশের কাছাকাছি চলে যাবে তখনই টান দিয়ে মাটিতে ফেলবো! তখনই বুঝবে হুসাইন কি জিনিস!
মেহেদী ভাইঃ মানে?

আমিঃ মানে হলো চড়ুই পাখি থাকে মাথার উপরে তাকে হাজার বার মাটিতে ফেললেও তার কিছুই হবে না! কিন্তু চিল পাখি থাকে আকাশে! তাকে একবার মাটিতে ফেলতে পারলে তার আর উড়ার ক্ষমতা থাকে না! তাই চড়ুই পাখিটা উড়তে-উড়তে চিল পাখির জায়গায় যাক তারপর নাহয় টান দিয়ে মাটিতে ফেলে দিবো!
মেহেদী ভাইঃ তুই VILLAIN সারাজীবনই থাকবি!
আমিঃ হুম! জান্নাত ভাবতেছে আমি ওর দাস হয়ে যাচ্ছি! কিন্তু ওও জানে না নিজের বিপদটাকে টানতেছে!
মেহেদী ভাইঃ আগে কি করতে চাইতেছিস!
আমিঃ জান্নাত কে আপাতত আমার মায়ায় ফেলতে হবে যে ভাবেই হোক তারপর ওর তেল বাহির করবো আমি!
মেহেদী ভাইঃ আমাদের কোনোরকম হেল্প লাগলে বলিস! ওকে শায়েস্তা করতে আমরা আছি তোর পাশে?
আমিঃ হুম সেটা তো জানি!
মেহেদী ভাইঃ আচ্ছা আমার জানা মতে তোর লাইফে তো মারিয়া নামের একটা মেয়ে আছে তার কি হলো!
আমিঃ কি আর হবে মারিয়াকে কিছুদিন ভুলে থাকতে হবে! জান্নাত থেকে ডিভোর্স পাওয়ার পর মারিয়াকে বিয়ে করে ফেলবো!

মেহেদী ভাইঃ মারিয়া তখন বিয়ে করতে রাজি হবে তো! তুই বিবাহিতা জেনেও!
আমিঃ মারিয়া আমার আর জান্নাতের ব্যাপারে সব জানে! সো এসব নিয়ে টেনশান করো না! আর জান্নাত ছাড়া কি দুনিয়াতে মেয়ের অভাব আছে নাকি যে বিয়ে করতে পারবো না!
মেহেদী ভাইঃ তাও ঠিক! তুই তো চাইলে কয়েকটা বিয়ে করতে পারবি! কারণ তোর সেই টেলেন্টা আছে!
আমিঃ থুর বাদ দাও এসব কথা!
মেহেদী ভাইঃ ওকে! তা কি করবি এখন!
আমিঃ এখন বাসায় চলে যাবো ভালো লাগতেছে না! থাকো আমি গেলাম! কালকে কাজ আছে! (বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম)
বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে দিলাম এক ঘুম! সন্ধ্যায় ঘুম ভাঙ্গলো! তাকিয়ে দেখি জান্নাত আমার দিকে তাকিয়ে আছে!
জান্নাতঃ দুপুরে আমাকে না বলে ভার্সিটি থেকে চলে আসলি কেনো?
আমিঃ এমনি! আর আপনাকে কারণ বলতে হবে নাকি?
জান্নাতঃ বলতে হবে! নাকি কোনো মেয়ের সাথে লুচ্চামি করতে এসেছিলি?
আমিঃ হুম ঠিকই বলছেন!
জান্নাতঃ চুপপ! বেশি বকবক করবি না কারণ এই বাসাতে শুধু আমার রাজত্ব চলবে!
যা বলবো তার উত্তর দিবি শুধু!

আমিঃ তাহলে আপনার বাসায় আপনিই থাকেন আমি চলে যাই ম্যাচে!
জান্নাতঃ যা আমি বেশি না আম্মুকে বলবো শুধু!
আমিঃ আম্মুকে কষ্ট দিতে চায় না বলে আপনাকে সহ্য করতেছি! নাহলে আপনার অবস্থা আগের মতো করতাম!
জান্নাতঃ কিভাবে করবি এটাতো ভার্সিটি না যে আমাকে হারিয়ে দিবি! এটা সংসার আর সংসারে বড়-বড় ভিলেনরাও রাজত্ব করতে পারে না! কারণ সংসারের রাজত্ব চলে মেয়েদের ।। সো একবছর যা বলি তাই কর নাহলে সারাজীবনের জন্য জ্বালাতে থাকবো বলে দিলাম!
আমিঃ হুম এই জন্যই তো ছাড় পাচ্ছেন! নাহলে এমনিতে তো আমার একটা চুলও ছিড়তে পারবেন না!
জান্নাতঃ কেনো মারিয়ার কাছ থেকে তোকে কেড়ে নিলাম না! এটাতে শিক্ষা হয়নি তোর!
আমিঃ মারিয়া – মারিয়া -মারিয়া! (বলেই হু হু হেসে দিলাম কারণ মারিয়ার কথা বলতেই মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো!)

জান্নাতঃ কি হলো হাসছিস কেনো?
আমিঃ না এমনি!
বলেই মনে মনে ভাবতে লাগলাম! কোথায় থেকে আর কেড়ে নিতে পাড়লেন! আপনি আমাকে ছেড়ে দিলে আমি মারিয়াকে বিয়ে করে ফেলবো! আর মারিয়স এমনিতেও জানে আপনি কেনো আমাকে বিয়ে করেছেন!
“তাই মারিয়াকে বিয়ে করতে আমার কোনো অসুবিধা হবে না! আরেকটা কথা কি জানেন মারিয়া নেক্সট বেইসে ভার্সিটিতে উঠবে! আর আপনি ভার্সিটি থেকে চলে গেলে আমার রাস্তাও ক্লিয়ার হয়ে যাবে! সো যা করার এই কয়েকদিন করে নিন! নাহলে পড়ে আর পাবেন না আমাকে.. মনে মনে ভাবছি
এসব ভাবছিলাম তখন জান্নাত ডাক দিলো!

জান্নাতঃ কিরে ভাবনার সাগরে ডুব দিলি নাকি! যা করবি আজ থেকে সব বলবি! নাহলে তোর খবর করে ছাড়বো বলে দিলাম!
আমিঃ ওকে, তা এখন একটু প্রাস্রাব করতে যেতে পারি!
জান্নাতঃ কিহহ! যা ছ্যাচড়া। (বলেই রুম থেকে চলে গেলো)
বাসায় রান্না করার মতো কেউ নেই। তাই রাতে খাবার অর্ডার করে খাওয়া-দাওয়া করে আরামে একটা ঘুম দিলাম!
আজকে একটু তাড়াতাড়ি ভার্সিটিতে চলে আসলাম। এসে কেন্টিনে বসে ছিলাম। তখনই আমার ক্লাসমেট একটা মেয়ে আসলো। মেয়েটা কিছুদিন ধরে আমাকে ফলো করতেছিলো। মেয়েটা দেখতে একদম পরির মতো। আজকে কি বলতে এসেছে কে জানে?
মেয়েটাঃ আপনাকে একটা কথা বলার ছিলো।
আমিঃ হুম বলেন?
মেয়েটাঃ তোমাকে আমার খুব ভালো লাগে?
আমিঃ কিহহহ!

মেয়েটাঃ হুম! তোমাকে বলবো-বলবো ভাবছিলাম! আজকে কেউ নেই তাই ভাবলাম আজকে বলে দেই!
আমিঃ আমি যে বিবাহিত সেটা আপনি জানেন না!
মেয়েটাঃ জানি কিন্তু ঐ আপুটা যে আপনার উপর প্রতিশোধ নিতে বিয়ে করেছে সেটাও আমি বুঝি!
ওর কথা শুনে আমি হা হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম!
মেয়েটাঃ দেখো আমি তোমাকে ভালোবাসি! তুমি চাইলে আমার সাথে রিলেশানে থাকতে পারেন!
মনে মনে ভাবলাম জান্নাত কে একটু শায়েস্তা করা দরকার তাই আমিও বললাম!
আমিঃ হুম। এমনিতেও জান্নাতের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে গেছি!
মেয়েটাঃ তাহলে চলো বিকেলে কোথাও কফি খেয়ে আসি!
আমিঃ হুম অবশ্যই! বলো কোথায় খেতে যাবে!
মেয়েটাঃ “”কফি হাউজে “”” খেলে কেমন হয়!
আমিঃ ওকে, সময় মতো চলে আইসেন! (বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম)
কিছুক্ষণ পর মেহেদী ভাই সহ সবাই চলে আসলো! জান্নাতকেও দেখলাম ভিতরে যেতে! দেখে হালকা একটু হাসলাম!
সবাইকে নিয়ে আড্ডা দিতেছিলাম……….

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com