Breaking News

পরিবারের অবহেলা | পর্ব - ১৮ এবং শেষ

আজকে সোমবার। গতকাল রাতেই আমি আর রাকিব রাকিবের বাসায় একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। (রাকিব যে বাসায় থাকতো সেই বাসায়)।

এখন দুপুরের সময়। সবাই খাবার খাওয়ার জন্য টেবিলে বসে আছে। আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
আমি মনে মনে ভাবলাম যে রিমি কে আর একটু কষ্ট দেওয়া যাক। তাই আমিও খাইতে বসলাম।
এমন সময় রিমি আমাকে খাবার দিতে আসল আর আমি ইচ্ছা করেই হাতটা উচু করলাম।
ফল সরুপ রিমির হাতে থাকা খাবারের বাটি টা আমার পোশাকে পরে যায়
আর আমি দিলাম দুইটা,,,ঠাস,,ঠাসস করে।
রিমি কোনো কথা না বলে চুপচাপ আবার অন্য খাবার দিতে শুরু করলাম।
দেখলাম রিমির চোখ থেকে শুধু পানি পরছে।
এইটা দেখে আমারও খুবই খারাপ লাগলো। নীরি বলে উঠল,,,,,,
নীরিঃ বাবাই তুমিত আম্মুতে মাললা তেন।
আমিঃ চুপ করে আছি।
এমন সময় রিমি বলল,,,
রিমিঃ নীরি চুপচাপ খাও।
নীরিঃ আচ্চা আম্মু।

মা তো খাবার টেবিল থেকেই চলে গেল। মনে হয় তিনিও কান্না করছেন।
তারপর আমিও চলে আসলাম খাবার খেয়ে। বাবা,রাকিব,রিয়া,মুনিয়া চুপচাপ খেয়ে চলে গেল।
মনে মনে ভাবলাম যে রিমি মনে হয় দুপুরে খাবে না। ঠিক তাই হলো রিমি দুপুরে কিইছু খাইনি।
রিমি সোজা রুমে এসে নীরি কে নিয়ে খাটে শুইয়ে পারল। আর আমি সোফাতে বসে টিভি দেখছিলাম।

হঠাৎ করে রিমির দিকে তাকাতেই দেখি সে ঘুমিয়ে গেছে।
আর ঘুমের মধ্যে তার চোখ দুটি বেয়ে বেয়ে পানি পরছে।
এটা দেখে আমার যেন মনে হলো আজকে পৃথিবীর সব থেকে খারাপ কাজটি করলাম।
খারাপ কাজটি পৃথিবীর বলার কারন হলো যে সে ঘুমের মধ্যেও কান্না করছে তার চোখে পানি।
আমি আর থাকতে না পেরে রিমির কাছে গিয়ে
তার চোখের পানি মুছে দিলাম।

এখন বিকাল ৫ টা আমি বাড়ির সবাইকে নিয়ে চলে আসলাম রাকিবের বাড়িতে।
কেউ আসতে চাইছিল না। আমার রাগারাগিতে সবাই এল।
রাকিব এর বাসায় আমার কিছু পরিচিত লোকজন সহ বন্ধু,
রিমির পরিবারের সবাই,রাকিবের মা, মুনিয়ার বাড়ির সবাই আসছে।

আজকে রিমি নীল কালারের একটা শাড়ি পরছে। তাকে দেখতে খুই ভালো লাগলে।
তার মুখে হাসি ছিলনা কেন যানি। মনে হয় দুপুরের বিষয় টা নিয়ে।
আমি আর সময় না নিয়ে বলতে শুরু করলাম,,,,,,,
সন্মানিত অথিতি বৃন্দ আপনারা কেউই জানেন না কেন আজকে আমি আপনাদের এইখানে ডেকেছি।
সবার মনে প্রশ্ন কেন আমরা এখানে এসেছি। তাহলে কারন টা বলেই ফেলি।
আমিঃ রাকিব তুই রেডি
রাকিবঃ হুমমম শুরু কর তাহলে।
আমিঃ ওকে।
,,,, অতীতের সব দুঃখজনক
ঘটনাকে ভুলে যাও
বর্তমানের দিকে মন দিয়ে
অনেক অনেক খুশির জোয়ার
আসুক তোমার জীবন জুড়ে
শুভ জন্মদিন রিমি,,,,,

রিমি তো আবাক কারন আজকে যে রিমির জন্ম দিন তা রিমি মনে ছিল না।
আমি রিমিকে বললাম,,,
আমিঃ কেমন দিলাম।
রিমিঃ আপনি আমার জন্মদিন মনে রেখেছেন।
আমিঃ হুমমম। আর রাকিব যা কেকটা নিয়ে আয়।
রাকিবঃহুমমম।
রিমি তো আবাক কারন নীল যে তার সাথে আজকেও খারাপ ব্যবহার করেছে আর অপমানও করেছে।
এমন সময়,,,
আমিঃ কি ভাবছো পরে ভাইবো আগে চলো কেকটা কাটি। সময় নাই তো।
রিমিঃহুমমম।
তারপর সবাই তাকে wish করল। কারন সবাই বুঝতে পারছিল আজকে রিমির জন্ম দিন।
তারপর সবাই মিলে অনেক আনন্দ করে বাসায় আসলাম। তারপর রাতে শুইতে গিয়ে
রিমি শুয়ে পরল সোফায় তা দেখে আমার মন মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেল। আমি বললাম,,,,
আমিঃআমি কাল সকালে চলে যাব।
আমার যাওয়ার কথা শুনে রিমি বলল,,,
রিমিঃ আপনি চলে যাবেন কেন।

আমিঃ তো আমি কেন এখানে থাকব। আর আমার কে আছে এখানে।
রিমিঃ কেন আমরা আছি না।
আমিঃ তুমি থাকলে তো আমার কাছে আসতে সোফায় শুইতে না।
রিমিঃ আপনি যদি রাগ করেন তাই যাইনি।
আমিঃ রাগ আর নাই সব শেষ।
রিমিঃ সত্যি তো। (আমার কাছে আসতে আসতে)।
আমিঃ হুমমম। আসো অনেক দিন পর একটু আদর দেই।
রিমিঃ না না একদম না। আজকে না।
আমিঃ কিছুই শুনতে চাই না। বলে জরিয়ে ধরতেই নীরি খাট থেকে বলে উঠল যে,,
নীরিঃ তি তরছো তোমরা।
আমি আর রিমি লজ্জা পেয়ে বললাম
আমিঃ তোমার আম্মুর নাকি খারাপ লাগছে তাই,,,,,
নীরিঃ থাত আল বলতে হবে না আমিত রিয়া আন্তির কাছে গেলাম।
বলেই নীরি চলে গেল রিয়ার কাছে।
রিমি আর আমি আবার আদর দিতে ও নিতে ব্যাস্ত হয়ে পরলাম।

<>সমাপ্ত<>

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com