Breaking News

আপু যখন বউ । পর্ব - ০২



আমি চুপ হয়ে গেলাম! তারপর আপুর দিকে রাগি চোখে তাকালাম!

আমিঃ আপু অনেক তো ভার্সিটিতে রাজত্ব করেছো! এবার থেকে আর পারবে না! সো ভালো হয়ে যাও! বাই?
(বলেই সবাইকে নিয়ে সেখান থেকে চলে আসলাম)
ঐদিন ক্লাস করে বাসায় চলে আসলাম! ” তারপরের দিন ভার্সিটিতে গিয়ে সবাইকে খুজতে লাগলাম!
হঠ্যাৎ কেউ একজন আমাকে টান দিয়ে একটা ক্লাস রুমে ডুকিয়ে ফেলে তারপর দরজা লাগিয়ে দেয়!
টান সামলে চারদিকে তাকিয়ে হালকা অবাক হয়ে গেলাম! ক্লাসটায় পুরোটায় মেয়ে ভর্তি!
আমিঃ আমাকে এখানে আনা হয়েছে কেনো?
জান্নাতঃ তুই কালকে কি বলেছিলি?
আমিঃ কখন? (ভাব নিয়ে)
জান্নাতঃ যে আমাদের রাজত্ব তুই শেষ করে দিবি! তোর বাসা কোথায় রে?
আমিঃ গ্রামে?

সবাই আমার কথা শুনে হেসে দিলো! আমি কিছু না বলে শুধু সবাইকে দেখতে লাগলাম!
জান্নাতঃ গ্রামের ছেলে হয়ে আমাদের রাজত্ব কেড়ে নিবি?
আমিঃ কিছুদিন যেতে দিন সব টের পেয়ে যাবেন?
জান্নাতঃ গ্রামে থাকতে তো মনে হয় ভদ্র ছিলি এতো কিউট দেখতে! তা শহরে এসে কি রক্ত গরম হয়ে গেছে নাকি?
আমিঃ সিংহ সব জায়গায় সিংহ থাকে! বিড়াল সে কখনোই হয় না!
জান্নাতঃ রাখ আমি তোর গ্রামে খোজ নিয়ে দেখতেছি তুই কেমন সিংহ ছিলি?
আমিঃ গ্রামে খোজ নিতে যাইয়েন না!
জান্নাতঁঃ কেনো? তোর সব কিছু ফাস হয়ে যাবে তাই?
আমিঃ নাহ! খোজ নেওয়ার পর থেকে আমাকে ভয় পাবেন তাই? (ভিলেনের লুক দিয়ে বললাম)
জান্নাতঃ ওহহ তাই নাকি! !
আমিঃ হুম! আরে আপনাদের এতটুকু আক্কেল থাকা তো দরকার যে! ছেলেটা একদিনে যেহেতু ফাষ্ট ইয়ারের হয়ে লাষ্ট ইয়ারের ছেলেদের বস হয়ে গেছে মানে? / কিছু তো আছে আমার ওর মাঝে! বেআক্কেল এর দল সব! সরেন আমি বাহি যাবো!

কথাটা বলার পর সবার মুখে ভয় দেখতে পেলাম আমি! তখন একটু ভাব নিয়ে আমি দরজার কাছে চলে আসলাম! দরজাটা খুলার আগে আবার পিছনে ফিরে বললাম!
আমিঃ বাহিরে এই ঝুলে থাকা মুখ নিয়ে যাবেন না! তাহলে সবাই বুঝে যাবে যে ফাষ্ট ইয়ারের ছেলে আপনাদের গেম বাজিয়ে দিয়েছে সো স্মাইল! (বলেই বাহিরে বেড়িয়ে আসলাম)
বাহিরে বেড়িয়ে দেখি মেহেদী ভাই সহ সবাই দাড়িয়ে আছে! আর আমি বেড়ুতেই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো!
আমিঃ কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?
মেহেদী ভাইঃ তোকে কি মেরেছে ওরা?
আমিঃ মারবে তাও আমাকে? বেড় হইলে ওদের মুখটা দেইখো শুকাইয়া কাঠ হয়ে থাকবে?
মেহেদী ভাইঃ তুই প্রথম যে কি না টর্চার রুম থেকে মার না খেয়ে বেড়িয়েছিস!
আমিঃ ওহহ! ঐটা টর্চার রুম নাকি? ওদের যা ভয় দেখিয়েছি ওরা সবাই এখন আমার সাথে কথা বললেও হিসাব করে বলবে?
মেহেদী ভাইঃ তাই নাকি?
আমিঃ হুম!
তারপর জান্নাত আপুরা বেড় হলেন! ওনাদের শুকনো মুখটা দেখে মেহেদী ভাই সহ বাকি সবাই হাসতে লাগলো!

মেহেদী ভাইঃ ঐ জান্নাত শুন! এবার সিংহ এনেছি আমাদের দলে দেখবো কিভাবে তুই আর পাওয়ার ঝাড়িস আমাদের সামনে? (মেহেদী ভাইয়া জুড়ে ডাক দিয়ে বললো)
জান্নাত আপু কিছু না বলে চলে গেলো! তারপর ওনাদের নিয়ে বসলাম একটা জায়গায়!
আমিঃ আচ্ছা সারা ভার্সিটির মেয়েদের লিডার কয়জন?
মেহেদী ভাইঃ ৫ জন?
আমিঃ এই পাচজনের লিডার কি জান্নাত নাকি?
মেহেদী ভাইঃ হুম!
আমিঃ ওকে! প্রথমে এটা বলো জান্নাতের কোনো ক্রাশ আছে ভার্সিটিতে বা কাউকে ভালোবাসেও?
মেহেদী ভাইঃ না কেনো?
আমিঃ আর বাকি চারজনের কোনো ক্রাশ বা ভালোবাসার মানুষ বা বয়ফ্রেন্ড আছে?
মেহেদী ভাইঃ হুম আছে! কিন্তু কেনো বলতো?
আমিঃ শুনো মেয়েরা পৃথিবীতে কারো কথা না শুনলেও তার ক্রাশ এর কথায় উঠ বস করে! কারণ মেয়েরা যাকে পছন্দ করে তাকে সবসময় মন থেকে পছন্দ করে! আর তাই তাদের সেই কমজুড়ি জায়গাটার ফায়দা তুলতে হবে?

আমার কথা শুনে মেহেদী ভাই সহ সবাই হা করে তাকিয়ে আছে? আমি ওনাদের বললাম!
আমিঃ কি হলো?
মেহেদী ভাইঃ তুই সত্যিই হারামী?
আমিঃ ধন্যবাদ! এখন ওদের ক্রাশগুলোকে আমাদের টিমের একটা ভালো পদ দিয়ে দাও! তাহলে দেখবে জান্নাত ছাড়া বাকি চারজন আমাদের টিমের কথায় চলবে!
মেহেদী ভাইঃ ওকে?
আমিঃ আর জান্নাত কে আমি দেখে নিবো? কিন্তু তার আগে জান্নাত কে বা ওর সম্পর্কে কিছু জানতে হবে আমাকে?
মেহেদী ভাইঃ শুন তাহলে? জান্নাত হলো ওর বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান! অনেক বড়লোক ওর বাবা! আর ভার্সিটির সভাপতি ওর বাবা! আর ওকে দেখতে যতটা সুন্দরি ততটাই অহংকারী আর কোনো ছেলেকেই সে ভাউ দেয় না!

আমিঃ ওকে! বাকিটা আমি দেখে নিবো? এখন যা বললাম তাই করো!
মেহেদী ভাইঃ ওকে! লাষ্ট ইয়ারের নির্বাচন কিন্তু ১২ দিন পরে! সো যা করার তা তাড়াতড়ি কর!
আমিঃ তুমি যাও তো চিন্তা করো না?
তারপর ক্লাস করে বাসায় চলে গেলাম! এসে ফ্রেশ হয়ে বসে বসে পড়তেছিলাম তখনই কলেজের একটা মেয়ের কল আসলো! কিছু না ভেবে কলটা রিসিভ করলাম!
আমিঃ কিরে সুমি তুই এখন কল দিয়েছিস!
সুমিঃ ভাই আপনি যেই ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছেন সেখান থেকে জান্নাত নামের একটা মেয়ে কল দিয়ে প্রিন্সিপাল এর কাছে আপনার খোজ নিতে?
আমিঃ তো স্যার কি বললো,
সুমিঃ কলেজে যা করেছেন তা সব বলে দিয়েছে? আর বলে দিয়েছে আপনার সাথে যেনো না লাগতে যায়!
আমিঃ ওকে! ভালো থাকিস? (বলেই ফোনটা কেটে দিলাম)
পরেরদিন কলেজে যেতেই দেখি জান্নাত আপু সহ সবাই বসে আছে? তাই আমি ওনাদের কাছে গেলাম!

আমিঃ কি ম্যাডাম আমার খোজ নেওয়া শেষ! কি বললো প্রিন্সিপাল!
জান্নাতঃ তুই জানলি কিভাবে?
আমিঃ আপু আমি যেই কলেজে পড়ে এসেছি! ঐ কলেজটায় প্রিন্সিপালের রাজত্ব না! চলতো আমার রাজত্ব! সো আমার কলেজে আমার খোজ নিবেন আর আমিই জানবো না এটা কখনো হয়!
জান্নাতঃ তুই হয়তো জানিস না! এটা গ্রাম না শহর আর এই ভার্সিটির সভাপতি আমার বাবা!
আমিঃ ওহ তাই নাকি! আপনি কি ভয় দেখাচ্ছেন!
জান্নাতঃ নাহহ! সাবধান করে দিচ্ছি! বেশি লাফালাফি করলে ভার্সিটিতে থেকে বেড় করে দিবো?

জান্নাতের কথাটা শুনে আমি জুড়ে হেসে দিলাম! ওরা সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো!
জান্নাতঃ কি হলো হাসছিস কেনো?
আমিঃ আপু আমাকে চাইলেই বেড় করে দিতে পারো! কিন্তু পড়ে ভার্সিটিতে মুখ দেখাবে কিভাবে!
জান্নাতঃ মানে?
আমিঃ আমাকে বেড় করে দিলে সবাই বলবে একটা ফাষ্ট ইয়ারের ছেলের ভয়ে,তোমাদের সবার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে! তাই ওকে বেড় করে দিয়েছো! তারপর তোমাদের দেখলে শুধু ছেলেরাই না মেয়েরাও হাসবে! আর থু থু দিবে তোমাদের?
জান্নাতঃ ঐ ঐ ঐ! (রাগে গজগজ করতে লাগলো)
আমিঃ তুমি রাগলে তোমাকে একদম পরির মতো লাগে! তা কি তুমি জানো? (বলেই পিছন ফিরে চলে আসলাম)

তখনই জান্নাত আপু পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললো!
জান্নাতঃ তোকে ভার্সিটিতে থেকে বেড় করবো না! তোকে ভার্সিটিতে রেখেই শায়েস্তা করবো?
আমিঃ ওকে? (বলেই চলে আসলাম)
এসেই মেহেদী ভাইয়াদের কাছে গিয়ে বসলাম!
মেহেদী ভাইঃ কিরে এখন কি করবো?
আমিঃ এখন কাজ হলো ওরা কি প্লেন করতেছে তা আমাদের জানতে হবে?
মেহেদী ভাইঃ কিভাবে?
আমিঃ ওদের টিমে বেজাল মিশিয়ে দিতে হবে!
মেহেদীঃ কিভাবে?
আমিঃ আমাদের দলের কয়েকটা মেয়েকে কায়দা করে ওদের টিমে ডুকিয়ে দাও! ব্যস তাহলেই হবে!

মেহেদী ভাইঃ তুই রাজনিতী করলে তো দেশটারে কাপিয়ে রেখে দিবি?
আমিঃ এই জন্যই তো রাজনিতীতে যাই না
মেহেদী ভাইঃ রাজনিতি করবি?
আমিঃ থুর ফাউল কথা বইলো না তো?
মেহেদী ভাইঃ ওকে?
আমিঃ তোমরা থাকো আমি যাই! (বলেই বাসায় চলে আসলাম)
এভাবে ৪-৫ দিন চলে গেলো! জান্নাত আমার পিছনে লেগেই আছে? স্টুডেন্ট লিডার নির্বাচনের আর মাত্র ৪ দিন বাকি?
ওনির্বাচনে ছেলেরা পাশ হবে কানা হয়ে! কারণ জান্নাতের টিম ছাড়া বাকি সবাই এখন আমাদের টিমে চলে আসছে! তাই জান্নাত রেগে আগুন হয়ে আছে!
আমি জানি জান্নাত আমার ক্ষতি করতে চায় কিন্তু সেটা ওরা পারবে না! কারণ আমার কোনো কমজুড় জায়গা নেই!
সকালে আমার একটা ফোন আসলো? ভার্সিটির একটা ছেলে ফোন দিয়েছে? এত সকালে ফোন দিয়েছে কেনো! এটা জানার জন্য ফোনটা রিসিভ করলাম!
আমিঃ কিরে এখন ফোন দিয়েছিস কেনো?
ছেলেটাঃ ভাই আমাদের একটা টিম মেম্বারকে জান্নাত মারতেছে তুমি আসো তাড়াতাড়ি!

আমিঃ কোথায় মারতেছে!
ছেলেটাঃ টর্চার রুমে! তুমি তাড়াতড়ি চলে আসো!
আমিঃ ওকে আমি এখনি আসতেছি? (বলেই ফোনটা কেটে দিলাম)
ভাবতে লাগলাম! সমস্যা হলে তো মেহেদী ভাই ফোন দিবে এই ছেলেটা ফোন দিলো কেনো! তাই মেহেদী ভাইকে ফোন দিলাম!
আমিঃ ভাই ভার্সিটিতে কোনো সমস্যা হইছে?
মেহেদী ভাইঃ না কেনো?
আমিঃ আরে একটা ছেলে! (সব খুলে বললাম)
মেহেদী ভাইছ- হুসাইন এটা জান্নাতের চাল তুই ভুলেও ওর কথা শুনিস না! তাহলে অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে বলে দিলাম!
আমিঃ ভার্সিটিতে তে যাবো! সেটা হাজারো সমস্যা হোক! এখন তুমি একটা কাজ করো!
মেহেদী ভাইঃ কি কাজ?
আমিঃ (****) এটা করতে পারবে?

মেহেদী ভাইঃ পারবো?
আমিঃ তাহলে আমি ভার্সিটিতে যাওয়ার আগে এটা রেডি করে ফেলো! আমি ডুকার আগে কল দিবো ওকে ভালো থেকো! (বলেই ফোনটা কেটে দিলাম)
তারপর চলতে লাগলাম ভার্সিটিতে! ভিতরে যাওয়ার আগে মেহেদী ভাইকে কল দিয়ে জানতে পারলাম সবকিছু ওকে!
তাই কোনোকিছু চিন্তা না করেই ভিতরে গেলাম! গিয়ে দেখি ছেলেটা দাড়িয়ে আছে! তাই ওর কাছে গেলাম!
ছেলেটাঃ ভাই ওরা ভিতরে আছে তুমি যাও?
আমিঃ ওকে? (বলেই ভিতরে গেলাম)
ভিতরে গিয়ে আমি হালকা চমকে উঠলাম……..!
দিন বদলায় রাত ১২ টায় দিকে আর মানুষ বদলায় সুযোগ বুঝে!

চলবে...

No comments

info.kroyhouse24@gmail.com