খালাতো বোন মিশ্মির প্রতি ক্রাশ । পর্ব - ০৭ এবং শেষ

কাজী এসে বিয়ে পড়ানো শুরু করছে।আমি বার বার ভাইয়ার দিকে তাকাচ্ছি। কিন্তু ভাইয়া চুপ চাপ রোদ ভাইয়ার পাশে বসে আছে।

কাজী যখন আমাকে কবুল বলতে বললো।আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলাম,আমার দিকে উদাসিন ভাবে তাকিয়ে আছে।আমি এমন ভাব করলাম যেনো এখনিই কবুল বলে দিবো।কিন্তু তাও ভাইয়ার কোন রিয়েকশোন দেখলাম না। ভেবেছিলাম আমি যখন কবুল বলতে যাবো তখন ভাইয়া সিনেমার মতো হিরোর মতো এসে আমাকে

কবুল বলতে নিষেধ করে সবাইকে বলবে যে ভাইয়া
আমাকে ভালোবাসে। তা আর ভাইয়া করবে না। এতোক্ষনে বুঝে গেছি। ভাইয়ার উপর অনেক রাগ হলো।একবার ভাবছি কবুল বলে ফেলবো?
এদিকে সবার তাড়াদিচ্ছে।
হুট করে আমি দাঁড়িয়ে বললাম,
আমি এই বিয়ে করতে পারবো না।
সবাই আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।
বাবা বললো,
এসব কি বলছিস মা?
আমি বললাম,
বাবা আমি যা বলছি সব ঠিক বলছি।
ভাইয়াকে আমি ভালোবাসি। ভাইয়ার সাথে আমার এক বছের রিলেশন।
আমার কথা শুনি ভাইয়া বড় বড় চোখ করে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।
আমি বলা শুরু করলাম।
একবছর আগে ভাইয়া আমাকে প্রপোজ করে আর আমিও ভাইয়ার ফাঁদে পা দিয়ে ফেলি।
কিন্তু যখন তোমরা বিয়ে ঠিক করো, তখন ভাইয়া আমার সাথে ব্রেকআপ করে ফেলে।আমি অনেক বুঝিয়েছি ভাইয়াকে কিন্তু ভাইয়া তখন বলেছিলো ভাইয়া নাকি আমার সাথে জাস্ট টাইম পাস করছে।
ভাইয়া আমার পবিত্র ভালোবাসা নিয়ে খেলা করছে।এই
বলে আমি নেকা কান্না করা শুরু করলাম।

আমার কথা শুনে ফুপা ভাইয়াকে ঠাস করে চড় মেরে বললো।
তোকে আমার ছেলে ভাবতেই ঘৃন্না লাগছে।তুই এতোটা খারা আমি আগে জানতাম না।ভাইয়া চোখ গরম করে তাকালো।
রোদ ভাইয়া গিয়ে ভাইয়াকে বললো।
তোকে আমি অনেক ভরশা করতাম।তুই যে আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবি আমি ভাবতেই পারছি না।আমি না হয়। তোর আপন কেউ না কিন্তু মিশ্মি তো তোর আপন ফুফাতো বোন ওর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারলি কেমন করে?
ভাইয়া কিছু বলতে যাবে তখন আমি ভাইয়ার কানের কাছে গিয়ে আস্তে আস্তে বললাম।
ভাইয়া তুমি কোন বন্ধুর জন্য নিজের ভালোবাসা সেক্রিফাইস করতে যাচ্ছিলে যে বন্ধু কিনা অন্যের কথা শুনে তোমাকে ভুল বুঝে। এটা সত্যি কি না একবার তোমাকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করলো না।

আমি স্পষ্ট ভাইয়ার চোখে জল দেখতে পাচ্ছিলাম।সবাই ভাইয়াকে অনেক কথা শুনালো।আমার খারাপ লাগলেও কিছু করার নাই।কারণ সত্যি বলতে ভাইয়া
কোনো না কোনো ভাবেই রোদ ভাইয়ার সাথে বিয়ে দিয়ে ছাড়তো।
আর সবাইকে বুঝাতো যে ভাইয়া আমাকে ভালোবাসে না।
আমি কান্না করে বিয়ে টা ভাঙ্গতে পারলেও ভাইয়া বিয়ে করা সম্ভব হতো না। কিন্তু এখন সবাই ভাইয়াকে চাপ দিচ্ছে আমাকে বিয়ে করার জন্য। এক প্রকার চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে আমাকে বিয়ে করতে হলো ভাইয়াকে।

৫বছর পর.. …
মিশ্মি মিষ্টিকে তাড়াতাড়ি রেডি করে নিজে রেডি হয়ে নিচে আসো।
আমি শাড়ির কুচি ঠিক করতে করতে বললাম , আমি পারবো না।
তোমার মেয়েকে তুমি রেডি করাও, আমি রেডি করারে আবার তোমার মেয়ের পছন্দ হবে না।
ভাইয়া আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগলো।
আমি চোখ গরম করে বললাম,ওরকম বান্দরের মতো করে হাসতেছো কেনো?

ভাইয়া বললো,
তুই শাড়ি পড়তে গেলি কোন দুঃখে? যেটা পরতে পারিস না সেটা পড়তে যাস কেনো?
এই বলে ভাইয়া আমার শাড়ি পড়িয়ে দিতে লাগলো। আমি এখনো ভালো ভাবে শাড়ি পড়তে পারি না বলে ভাইয়া আমাকে কথা শুনায়। তবে এখন আমাদের মাঝে ভালোবাসা অনেক বেরে গেছে।
বিয়ের পর একমাস ভাইয়া আমার সাথে কথা বলেনি। আমি অবশ্যই বিয়ে পর সবাইকে সত্যি কথা বলে দিয়েছি।
সব জানার পরে রোদ ভাইয়া, ভাইয়ার কাছে ক্ষমা চাইছিলো।
আর এখন তাদের বন্ধুত্ব অনেক ভালো হয়ে গেছে। আজ রিয়ার সাথে রোদ ভাইয়ার বিয়ে।
বিয়েটা পারিবারিক ভাবে হচ্ছে।আমাদের ৪বছরের একটা মেয়ে আছে। মেয়েটা একধম বাবার মতো হয়েছে।আজ পর্যন্ত আমার কাজের প্রশংসা করেনি।
সবসময়ই ভুল ধরে।

শাড়ি পড়ানো হয়ে গেলে আমি ভাইয়াকে সবে মাএ বলতে যাবো।
ভাইয়া,
তার আগে মিষ্টি চলে আসলো দেখে বললাম,ধন্যবাদ।
মিষ্টির সামনে আমি কখনো ভাইয়াকে ভাইয়া বলছিনা।কারণ ভাইয়া বললেই মিষ্টি আমাকে ফুপি ডাকা শুরু করে।
কারণ জিজ্ঞেসা করাতে বলে।তুমি পাপাকে ভাইয়া বলো কেনো? পাপাকে যারা ভাইয়া বলবে তারা তো পাপার বোন তো আমার ফুপি লাগে।
আমি জানি এটা ভাইয়া মিষ্টিকে শিখিয়ে দিয়েছে।নিজের মেয়ের মুখে ফুপি ডাক শুনতে ভালো লাগে না। দেখে ওর সামনে কখনো ভাইয়া বলিনা।
মিষ্টিকে ভাইয়া রেডি করে দিতে লাগলো।আর আমি খাটে বসে বাবা মেয়ের খুনসুটি দেখতে লাগলাম।

গল্পটা কেমন লেগেছে কমেন্ট করে জানাতে কিন্তু ভুলেবেন না,আর আপনারা বেশি বেশি করে লাইক কমেন্ট করবেন,এবং আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ সম্পূন গল্পের সাথে থাকার জন্য, ওয়েট পাঠক পাঠিকারা আপনাদের জন্য আরও একটি নতুন গল্প নিয়ে আসতেছি তথ্যখোন পর্যন্ত সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন
-- আল্লাহ হাফেজ।

<>সমাপ্তি<>
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url